‘দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারাই আফগানিস্তানকে ডুবিয়েছে’

| শুক্রবার , ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ

আশরাফ গনি সরকারের সীমাহীন দুর্নীতিই আফগানিস্তানে তালিবানের পুনরুত্থানের পথ প্রশস্ত করেছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই অভিযোগ প্রাক্তন আফগান কূটনীতিক রোয়া রহমানির। সেই সঙ্গে আমেরিকায় নিযুক্ত প্রথম মহিলা আফগান রাষ্ট্রদূত রহমানি বলেন, ‘আমেরিকার মদতে গঠিত আফগান সরকার দেশকে নেতৃত্ব দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছিল। তাই তালেবানের পক্ষে এত সহজে কাবুল দখল করা সম্ভব হয়েছে।’
জুলাইয়ের শেষ-পর্বে আফগানিস্তানের একের পর এক প্রদেশ তালিবান দখল করতে শুরু করলে আমেরিকায় আফগান রাষ্ট্রদূতের পদ থেকে ইস্তফা দেন রহমানি। তিনি বলেছেন, ‘সে সময় অনেকেই হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু আফগান নাগরিক হিসেবে আমি অবাক হইনি। কারণ, সরকারের অন্দরে নেতৃত্বের অভাব এবং দুর্নীতি সম্পর্কে অবহিত ছিলাম।’ আফগানিস্তানের তালেবানের দখলদারি ভবিষ্যতে ওয়াশিংটনের কাছে চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের যুক্তি দিতে গিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছিলেন, তারা আর যুদ্ধ এবং রক্তপাত চান না। রহমানির মতে, আমেরিকার সহায়তায় যে আফগান সেনাবাহিনী গঠিত হয়েছিল, তারাও দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য তালেবানের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতে আদৌ ইচ্ছুক ছিল না। কারণ, পুরো ব্যবস্থাটাই ছিল দুর্নীতিতে ঘেরা। ১৫ আগস্ট তালিবানের কাবুল দখলের পর প্রসিডেন্ট গনির বিদেশে পালানোকেও ‘হতাশাজনক’ বলেছেন তিনি।
প্রায় ৩ বছর আমেরিকায় রাষ্ট্রদূত পদে কাজ করেছেন ৪৩ বছরের রেহমানি। দেশে তালিবানের ক্ষমতা দখলের ইঙ্গিত স্পষ্ট হতেই তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু আফগানিস্তানে ফেরেননি। রেহমানি বলেন, ‘নয়া তালেবান সরকারে কোনও মহিলাকে রাখা হয়নি। এর থেকেই স্পষ্ট, মহিলাদের সম্পর্কে তালিবান নেতৃত্বের কী ভাবনা। প্রবল প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও যে সাহসী আফগান মহিলারা পথে নেমে তালিবানের বিরোধিতা করছেন, তাদের আমি সালাম জানাই।’
এদিকে আফগানিস্তানে তালেবানের ঘরে থাকার চাপ, হুমকি উপেক্ষা করে নিজেদের অধিকার আদায়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে নারীরা। আফগানিস্তানের কয়েকটি জায়গায় আবার বিক্ষোভে নেমেছে তারা। পাকিস্তান দূতাবাসের কাছে বেশ কয়েকজন জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানানোর সময় তালেবান সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। বিবিসি জানায়, আইনমন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ নিষিদ্ধ রেখেছে তালেবান। কিন্তু সে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই কয়েকডজন বিক্ষোভকারী ‘মুক্তি চাই’ স্লোগান দিয়ে কাবুলে পাকিস্তানের দূতাবাসের কাছে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছে। পারওয়ান ও নিমরুজ প্রদেশেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। বিক্ষোভকারীরা ‘পাকিস্তান নিপাত যাক’, যুক্তরাষ্ট্র নিপাত যাক’, ‘অস্ত্রের জোরে আমাদের কণ্ঠ রোধ করা যাবে না’ ধ্বনিতে স্লোগান দিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে শুভ্রা-রুনাই
পরবর্তী নিবন্ধ৪ ঘণ্টা ধরে দুই সাংবাদিককে পিটিয়েছে তালেবান!