নগরীর সাগরিকা রোডের খাজা স্টিল সাপ্লাইয়ার্স প্রতিষ্ঠানটির মালিক ব্যবসায়ী আবুল হোসেন চৌধুরী। ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করায় ২০০৪ সালের ৬ জুলাই তার বিরুদ্ধে জারি মামলা করে সোনালী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা। দেওয়া হয় সুদ মওকুফ সুবিধা। একপর্যায়ে উক্ত জারি মামলা নিষ্পত্তিও হয়। এরপরও আবুল হোসেন চৌধুরী ঋণ পরিশোধ করেননি। ২০০৯ সালের ৪ মার্চ ব্যাংকের পক্ষ থেকে দায়ের করা হয় দ্বিতীয় জারি মামলা, কোনও কাজ হয়নি। এরপর গত বছরের ১০ মে ফের সুদ মওকুফ সুবিধা নিয়ে মঞ্জুরীপত্র গ্রহণ করেন তিনি। এবারও তিনি নিজের জায়গায় অটল থাকলেন। পরিশোধ করেননি ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ। লঙ্ঘন করেছেন মঞ্জুরীপত্রের শর্ত।
এ অবস্থায় খাজা স্টিল সাপ্লাইয়ার্সের মালিক আবুল হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ও প্রত্যাশিত আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়া, নির্লিপ্ততার জন্য সোনালী ব্যাংক আগ্রাবাদ
শাখার ব্যবস্থাপককে শোকজ করেছেন চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান। গতকাল ব্যাংকের পক্ষ থেকে সময় চেয়ে করা প্রার্থনা বিষয়ে শুনানি শেষে বিচারক শাখা ব্যবস্থাপককে এ শোকজ করেন। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে লিখিতভাবে তিনি এর জবাব দিবেন।
শোকজ আদেশে তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা নিতে আদেশের কপি কেন সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রেজাউল করিম আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আবুল হোসেন চৌধুরী দীর্ঘ ১৫ বছর পূর্বে সুদ মওকুফ সুবিধা পেলেও ঋণ পরিশোধে কোন সদিচ্ছা দেখাননি।
গত বছরের ১০ মে মঞ্জুরীপত্র গ্রহণ করা সত্ত্বেও মঞ্জুরীপত্রের শর্ত মোতাবেক তিনি টাকা পরিশোধ করেননি। এ অবস্থায় ব্যাংক কতৃপক্ষ কোন আইনগত পদক্ষেপ নেননি, বরং সময়ের প্রার্থনা করেছেন। মঞ্জুরীপত্র লঙ্ঘনসহ দীর্ঘ ১৮ বছরের পুরানো এ খেলাপী ঋণ আদায়ের মামলায় নির্লিপ্ততার জন্য আগ্রাবাদ শাখা ব্যবস্থাপককে শোকজ করেছেন বিচারক।
আদালত সূত্র জানায়, ৮৫ লাখ ৯৬ হাজার ৩৮৩ টাকা খেলাপী ঋণ আদায় করতে খাজা স্টিল সাপ্লাইয়ার্সের মালিক আবুল হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২০০৪ সালের ৬ জুলাই প্রথম জারি মামলাটি করা হয়। পরে সুদ মওকুফ সুবিধা দিয়ে এক কোটি ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৫১০ টাকা আদায়ের জন্য ২০০৯ সালের ৪ মার্চ দ্বিতীয় জারি মামলাটি দায়ের করে সোনালী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা।
আদালত সূত্র আরো জানায়, ব্যবসায়ী আবুল হোসেন চৌধুরীর বন্ধকী সম্পত্তি নিলামে বিক্রির জন্য দুই বার বিজ্ঞপ্তি প্রচারিত হলেও কোনো দরপত্র না পাওয়ায় বিক্রয় করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া ২০১৩ সালের ১৬ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। একই বছর উচ্চ আদালতের আদেশ মোতাবেক উক্ত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রি-কল করা হয়।