জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নগরীর ডবলমুরিং থানায় দুদকের দায়ের করা মামলায় টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির বিরুদ্ধে কর কমিশনারসহ আরো ৮ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।
তারা হলেন চট্টগ্রাম কর অঞ্চল–৩ এর অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার মোহাম্মদ আমান উল্লাহ, ঢাকা কর অঞ্চল–৬ এর অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার (অবসরপ্রাপ্ত) মো. গোলাম মোস্তফা, সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার (অবসরপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হক খান, কক্সবাজার রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সের সদর রেকর্ড রুমের মোহরার (অবসরপ্রাপ্ত) মৃনাল কান্তি বড়ুয়া, মো. জসিম উদ্দিন, নগরীর এবি ব্যাংক খুলশী শাখার এসএভিপি মো. নুরুজ্জামান, নগরীর ট্রাস্ট ব্যাংক আসকারদিঘীর পাড় শাখার এসএভিপি আবদুল কাইয়ুম ও ঢাকা ব্যাংক কক্সবাজার শাখার সাবেক ম্যানেজার সৈয়দ মফিজ উদ্দিন।
গতকাল চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মিজানুর রহমানের আদালত তাদের সাক্ষ্য রেকর্ড করেন। এ সময় আসামি বদি কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন।
এ নিয়ে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের উক্ত মামলায় বদীর বিরুদ্ধে ২১ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলায় মোট সাক্ষী রয়েছেন ৪১ জন। সে হিসেবে আরো ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য রেকর্ড করা বাকি। দুদক পিপি রেজাউল করিম রনি আজাদীকে বলেন, আজকে (বুধবার) আমরা একসাথে ৮ জন সাক্ষীকে হাজির করেছি। তারা সবাই সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাদের জেরাও সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে যে, বাকী সাক্ষীদের সাক্ষ্য শেষ করে দ্রুত এ মামলা শেষ করা। আগামী ১৫ অক্টোবর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী সরকার পতন পরবর্তী টেকনাফ থানার একটি হত্যা মামলায় নগরীর জিইসি এলাকায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রথমে কঙবাজার কারাগারে এবং পরে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন আব্দুর রহমান বদি।
আদালতসূত্র জানায়, সর্বশেষ গত বছরের ২৯ অক্টোবর বদীর বিরুদ্ধে দুজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। ২০০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর নগরীর ডবলমুরিং থানায় বদির বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগে মামলাটি করেন দুদকের সাবেক উপ–পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয় বদি, স্ত্রী শাহীন আকতার ও মেয়ে সামিয়া রহমানের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ মোট ১ কোটি ১১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৭ টাকা। কিন্তু দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ও ২০০৬–২০০৭ কর বর্ষের রিটার্নে বদি যথাক্রমে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন ৫৬ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকা ও ৩১ লাখ ৯৬ হাজার ৫৮০ টাকা। সে হিসেবে বদি সর্বমোট ৭৯ লাখ ৩৭ হাজার ৭৯৭ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। যা তিনি অবৈধ উপায়ে অর্জন করেছেন। আইন অনুযায়ী এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আদালতসূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ২৪ জুন এ মামলায় আব্দুর রহমান বদির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল হয়। এর এক যুগ পর ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর চার্জগঠনের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়। আদালতসূত্র আরো জানায়, ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের ৮ জুলাই পর্যন্ত এ মামলা উচ্চ আদালত কর্তৃক স্থগিত ছিল।