ঘুষ গ্রহণের সময় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব রায়সহ দুজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে দুদক। অপরজন হলেন তার সহযোগী মাইনুদ্দীন। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে ফাঁদ অভিযান পরিচালনা করে কাস্টমস হাউসের দ্বিতীয় তলার শুল্কায়ন সেকশন–৭(বি) থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম–১ এর সহকারী পরিচালক সায়েদ আলম। তার সাথে ছিলেন সহকারী পরিচালক সাঈদ মোহাম্মদ ইমরান, উপসহকারী পরিচালক আপেল মাহমুদ বিপ্লব, সবুজ হোসেন ও কন্সটেবল মনির হোসেন।
দুদক জানায়, হোমল্যান্ড প্লাস্টিক স্যু ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটর এবং মুন্সিগঞ্জের বাসিন্দা আমির হোসেন কারখানার পণ্য উৎপাদনের জন্য জাপান থেকে ৬ হাজার ৪শ ২৮ মার্কিন ডলারের ব্রিক অ্যাক্রেলিক মিক্সড প্লাস্টিক অ্যান্ড স্ক্র্যাপ আমদানি করেন। উক্ত আমদানিকৃত পণ্য পোর্ট থেকে ছাড় করার জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস দাখিল করা হয়। কিন্তু কাস্টমস হাউসের শুল্কায়ন সেকশন–৭(বি) এর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব রায় ও মো. ছারওয়ার উদ্দিন পণ্য ছাড়করণের জন্য তাকে নানাভাবে হয়রানি করেন। একপর্যায়ে তারা তার কাছে অফিস নির্ধারিত ঘুষের রেট ছাড়াও আরো অতিরিক্ত ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। অন্যথায় তারা পণ্য ছাড়করণের ব্যবস্থা করবেন না এবং পণ্য পোর্ট ও কন্টেনার ডেমারেজ পূর্বক নিলামে বিক্রির হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয়, ঘুষের টাকার ভাগ শুধু তারা পাবেন না, পাবেন চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের এসিসট্যান্ট কমিশনার অব কাস্টমস মহিব উল ইসলামও।
দুদক জানায়, ঘুষের টাকার জন্যই সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের মাধ্যমে ঢাকা থেকে আমির হোসেনকে ডেকে আনা হয়। পুরো বিষয়টি হোমল্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রির প্রোপাইটার আমির হোসেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম–১–কে অবহিত করলে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম–১ সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধির আলোকে ঘুষ দাবিকারী শুল্ক বিভাগের রাজস্ব কর্মকর্তাদের হাতেনাতে গ্রেপ্তারের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ফাঁদ অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে দুদকের বিশেষ টিম ছদ্মবেশে ঘুষ লেনদেন পর্যবেক্ষণ করে। এ সময় সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব রায় এবং তার সঙ্গী মাইনুদ্দীনকে ঘুষের ৩০ হাজার টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
দুদক প্রধান কার্যালয়ের অনুমাদনক্রমে ফাঁদ অভিযানটি পরিচালিত হয় জানিয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম–১ এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ আজাদীকে বলেন, অভিযান শেষে আলামতের জব্দ তালিকা প্রণয়ন, সাক্ষীদের বক্তব্য গ্রহণসহ সকল আইনানুগ কার্যক্রম সম্পন্ন করে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার তদন্তকালে অপরাধে জড়িত অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।