চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়িক গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলমের বিদেশে অর্থ স্থানান্তরের বিষয়ে প্রকাশিত খবরের সূত্র ধরে অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে অনুরোধ এলে সে অনুযায়ী কাজ করার কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
গতকাল সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি বিরোধী সমন্বয়কারী রিচার্ড নেফিউর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা জানান তিনি। এস আলমের অর্থপাচারের অনুসন্ধানের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা এ ধরনের কোনো ইনস্ট্রাকশন পাইনি এখনও পর্যন্ত। যদি ওই রকম থাকে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যদি আমাদেরকে অনুরোধ করে– তাহলে আমরা আমাদের যেটা করার সেটা আমরা করব, আইনের মধ্যে থেকে। ৪ অগাস্ট ‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি জাতীয় ইংরেজি পত্রিকায় প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে ‘কমপক্ষে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য’ গড়ে তুলেছেন। যদিও বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত কোনো অনুমতি তিনি নেননি। খবর বিডিনিউজের।
পত্রিকাটি লিখেছে, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের বাইরে বিনিয়োগের জন্য এ পর্যন্ত ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিলেও চট্টগ্রামভিত্তিক বৃহৎ এই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নাম সেই তালিকায় নেই। নথি থেকে দেখা যায়, এক দশকে সিঙ্গাপুরে এস আলম অন্তত দুটি হোটেল, দুটি বাড়ি, একটি বাণিজ্যিক স্পেস এবং অন্যান্য সম্পদ কিনেছেন। এসব ক্ষেত্রে বিভিন্ন উপায়ে কাগজপত্র থেকে তার নাম বাদ রাখা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নথির বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশ থেকে ৪০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে বিনিয়োগের জন্য নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বৈধ উপায়ে সিঙ্গাপুরে এক লাখ ৭ হাজার মার্কিন ডলার পাঠিয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানও এস আলমের মালিকানাধীন নয়। পত্রিকায় প্রকাশিত ওই খবর আদালতের নজরে আনার পর তা অনুসন্ধানে রোববার দুদককে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ। পরে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অনুসন্ধান কার্যক্রম চালানো হবে বলে ওই দিন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন।