শহীদ ফারুক কাজ করতেন চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহরে একটি ফার্নিচারের দোকানে। স্ত্রী ও ২ সন্তান নিয়ে লালখান বাজারের এক কলোনিতে থাকতেন। কাজ থাকতো বলে দুপুরে বাসায় খেতে যেতে পারতেন না, বিসমিল্লাহ হোটেল নামে একটি ভাতের হোটেলে নিয়মিত খেতেন দুপুরে। ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই দুপুরেও সেখানেই খেলেন। হাত মুছতে মুছতে কেবল বের হলেন, আর সাথে সাথে গুলি লেগে লুটিয়ে পড়লেন। কাজ করার জন্য দোকানে এসে যে জামাটা পরতেন, পরনে ছিল সেটা। শহীদ ফারুকের স্ত্রী সীমা আক্তার দুঃখ করেন বলেন, আমার স্বামীর কথা কেউই বলে না, কারণ সে ছাত্র ছিল না, শ্রমিক ছিল।
ফার্নিচারের দোকানে কাজ করত। শহীদ ফারুকের ৮ বছর বয়সী ছোট্ট মেয়ে ফারিহা প্রায়ই বলে, আম্মু, ওরা আবু সাইদ, ওয়াসিম, মুগ্ধর কথা বলে, আমার বাবার কথা বলে না কেন? নিজের কষ্টের কথা জানিয়ে শহীদ ফারুকের স্ত্রী সীমা আক্তার বলেন, আজ এক বছর পার হচ্ছে কেউ আমাদের অবস্থা জানতে আসে না। আমি কি পরিমাণ কষ্ট করে আমার দুই সন্তান নিয়ে থাকি, তা আমি জানি। প্রথম দিকে একজন উপদেষ্টা এলেও এরপর কোনো ছাত্র প্রতিনিধি বা সরকারের কেউ আসে না। সঞ্চয়পত্র দেওয়া হবে বলে মার্চে কাগজপত্র নেওয়া হলেও সেটিরও কোনো খবর নেই।
তিনি বলেন, ১০ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে টাকা দুই ভাগ করে আমাকে পাঁচ লাখ আর ফারুকের বাবাকে ৫ লাখ দেওয়া হয়েছে।অবশিষ্ট অর্থ কবে পাবো তা–ও জানা নেই। আমার সাত বছরের মেয়ে ফারিহা দেখে সবার বাবা কাজ শেষে বাসায় আসে কিন্তু তার বাবা বাসায় আসে না। সে কান্না করে ঘুম ভেঙে উঠে বাবাকে খোঁজে। আমার ১৪ বছরের ছেলে ফাহিমুল ইসলাম আমাকে আক্ষেপ করে বলে, সবার বাবা তার সন্তানদের নিয়ে স্কুলে যায়, বেড়াতে যায়; কিন্তু আমার বাবা আর বাসায় ফিরে না।