দুই মাসে সদস্য সংগ্রহ সাড়ে ২৮হাজার, কর্মসূচি শেষ মঙ্গলবার

নগর বিএনপি

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৬ মে, ২০২২ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

নগর বিএনপির সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি শেষ হচ্ছে আগামী মঙ্গলবার। দুই মাস আগে শুরু হওয়া এ কর্মসূচিতে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার সদস্য সংগ্রহ করতে পেরেছে দলটি। অবশ্য ন্যূনতম ১২ হাজার ৯০০ জনকে সদস্য করার লক্ষ্য ছিল তাদের। নগর কমিটি পুনর্গঠনের লক্ষ্যে গত ২১ মার্চ একটি ‘পুনর্গঠন সংক্রান্ত টাস্কফোর্স টিম’ গঠন করে দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ওই টিমের অধীনে পৃথক পাঁচটি উপ-কমিটিও করা হয়। টাস্কফোর্স টিমের প্রধান করা হয় বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খানকে। তারেক রহমান তিন মাসের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে ইউনিট, ওয়ার্ড, থানা কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেন।

পাঁচ উপ-কমিটির প্রধানরা হচ্ছেন নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, এস এম সাইফুল আলম, কাজী বেলাল, নাজিমুর রহমান ও নগর বিএনপির সদস্য এরশাদ উল্লাহ। ২৯ মার্চ আহমেদ আযম খান উপ-কমিটির সদস্যদের সঙ্গে নগরের একটি রেস্টুরেন্টে বৈঠক করেন। এতে আহমেদ আযম খান সিদ্ধান্ত দেন, প্রথমে নগরের ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের প্রতিটির আওতায় তিনটি করে ইউনিট কমিটি গঠন করা হবে। অর্থাৎ মোট ১২৯টি ইউনিট কমিটি গঠন করা হবে। তবে এসব ইউনিট কমিটি গঠন করা হবে কাউন্সিলের মাধ্যমে। এজন্য প্রতিটি ইউনিট থেকে কমপক্ষে ১০০ জন করে সদস্য সংগ্রহ করতে হবে। সদস্য ফরম যারা পূরণ করবেন তাদের ভোটে ইউনিটের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হবে। নির্বাচিতরা পরে ২১, ৩১ বা ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ ইউনিট কমিটি গঠন করবেন। এরপর ইউনিট নেতৃবৃন্দের ভোটের মাধ্যমে ওয়ার্ড এবং ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দের ভোটে থানা কমিটি গঠন করা হবে। এ পুরো প্রক্রিয়া শেষ করা হবে তিন মাসের মধ্যে। তবে ইউনিট কমিটি গঠনের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয় ১৫ দিন।

নগর বিএনপির সদস্য এরশাদ উল্লাহ দায়িত্বে আছেন বন্দর, পতেঙ্গা ও ইপিজেড থানার। এসব থানায় আছে ছয়টি ওয়ার্ড। প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি করে মোট ইউনিট আছে ১৮টি। এর মধ্যে পাঁচটি ওয়ার্ডে প্রায় ৯ হাজার সদস্য সংগ্রহ হয়ে গেছে। বাকি আছে ৩৬ নম্বর গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডে আজ বৃহস্পতিবার সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরুর কথা রয়েছে। এ ছাড়া ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডে কিছু বাকি আছে। সেটাও দুয়েকদিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে এরশাদ উল্লাহ দৈনিক আজাদীকে বলেন, সদস্য সংগ্রহ অভিযান প্রায় শেষ করেছি। ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে আগামীকাল (আজ) শেষ করে ফেলবো। যখন সদস্য সংগ্রহ অভিযান ছিল তখন চাকরির জন্য অনেকে আসতে পারেননি। তাদের আবার সুযোগ দিচ্ছি। এরপরও ইতোমধ্যে প্রায় নয় হাজার সদস্য হয়ে গেছে। আরো প্রায় এক হাজার মতো হবে বলে আশা করছি। সবমিলিয়ে ১০ হাজার পার হয়ে যাবে।

নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ দায়িত্বে আছেন কোতোয়ালী, চকবাজার ও বাকলিয়া থানায়। এসব থানায় আছে ১৩ ওয়ার্ডের ৩৯ ইউনিট। এর মধ্যে ৩৬টি ইউনিটে কার্যক্রম শেষ হয়েছে। বাকি আছে পাথরঘাটা ওয়ার্ডের তিনটি ইউনিট। বিষয়টি নিশ্চিত করে আলহাজ্ব এম এ আজিজ বলেন, কোনো কোনো ওয়ার্ডে বেশি এবং কোনো ওয়ার্ডে সদস্য সংখ্যা কম হয়েছে। কতজন হয়েছে তা একত্রে করিনি। চার হাজার ৩০০ মতো হতে পারে। বাকি থাকা পাথরঘাটা ওয়ার্ডে ৩০০ পার হবে। সামগ্রিক সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম ২৮ মে এর শেষ হবে বলেও জানান তিনি।

নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম সাইফুল আলম দায়িত্বে আছেন পাহাড়তলী, খুলশী ও হালিশহর থানার। এসব থানায় আছে ৭টি ওয়ার্ডের ২১টি ওয়ার্ড। এর মধ্যে তিনটি ইউনিটে সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম গতকাল পর্যন্ত শুরু হয়নি। এছাড়া ১২ নম্বর সরাইপাড়া ও ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হলেও আরো অর্ধেক বাকি আছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে এস এম সাইফুল আলম বলেন, ইতোমধ্যে চার হাজার সদস্য সংগ্রহ করে ফেলেছি। আরো এক হাজার থেকে ১২শ হতে পারে। শেষ পর্যন্ত পাঁচ হাজার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার সদস্য হবে বলে আশা করছি। আগামী ৩০ মে এর মধ্যে কার্যক্রম শেষ করা হবে বলেও জানান তিনি।

নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী বেলাল দায়িত্বে আছেন ডবলমুরিং, সদরঘাট ও আকবর শাহ থানার। এসব থানায় আট ওয়ার্ডের ২৪টি ইউনিট আছে। ইতোমধ্যে ২৩টি ইউনিটে সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম শেষ হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে কাজী বেলাল বলেন, সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম প্রায় শেষ করে ফেলেছি। প্রতিটি ইউনিটে আলাদা আলাদা করেছি। শেষে প্রতিটি ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ নিয়ে বসেছি। এখন থানা নেতৃবৃন্দ নিয়ে বসব। যাতে আগ্রহী কেউ বাদ না পড়ে সে চেষ্টা করছি। অবশ্য ২৮ নম্বর পাঠানটুলী ওয়ার্ডের একটি ইউনিট বাকি আছে। সেখানে আগামী শুক্রবার শেষ করে ফেলবো। এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার সদস্য হয়ে গেছে।

নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজিমুর রহমান দায়িত্বে আছেন চান্দগাঁও, বায়েজিদ ও পাঁচলাইশ। এসব থানায় আট ওয়ার্ডের ২৪টি ইউনিট আছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে সদস্য সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান নাজিমুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা ইউনিট আলাদাভাবে করিনি। ওয়ার্ডভিত্তিক করেছি। প্রথম ধাপে প্রতিটি ওয়ার্ডে একবার করে সদস্য সংগ্রহ করে ফেলেছি। দ্বিতীয় ধাপে আবার করছি। দ্বিতীয় ধাপে চারটি ওয়ার্ড বাকি আছে এবং সেগুলো মে মাসের মধ্যে করে ফেলবো। এ পর্যন্ত প্রায় ছয় হাজার সদস্য হয়ে গেছে। আরো দুই হাজার হতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১৬ ইউনিয়ন ও এক কলেজে পাল্টাপাল্টি কমিটি
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চার লেনের কাজ শুরু হবে : কাদের