দুই মাসে আয় ৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা

ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলের সবচেয়ে লাভজনক রুট যাত্রী চাহিদা এক লাখ, সিটের সংখ্যা ১৬শ

শুকলাল দাশ | শুক্রবার , ১ মার্চ, ২০২৪ at ৫:৩০ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ রেলওয়ের এখন সবচেয়ে লাভজনক রুট হয়ে উঠেছে ঢাকাচট্টগ্রামকক্সবাজার। এই রুটে বর্তমানে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে। ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ও ‘পর্যটন এক্সপ্রেস’ এই দুটি আন্তঃনগর ট্রেনে সিট সংখ্যা ৮০০ করে ১৬০০ এর উপরে। রেলওয়ের পরিবহন এবং বাণিজ্যিক বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এই রুটে প্রতিদিন যাত্রীদের চাহিদা থাকে এক লাখেরও বেশি। এই রুটে টিকিটের চাহিদা বাড়লেও তা পূরণ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। টিকিট ছাড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ট্রেন দুটির সিট বিক্রি শেষ হয়ে যায়। এতে টিকিট না পেয়ে সীমাহীন ভোগান্তিতে আছেন এই রুটের যাত্রীরা।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন এবং বাণিজ্যিক বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা আজাদীকে জানান, ঢাকাচট্টগ্রামকক্সবাজার রুটে ট্রেন চালুর পর প্রথম দুই মাসে রেকর্ড পরিমাণ যাত্রী পরিবহন করেছে এই রুটে চলাচলরত দুটি আন্তঃনগর ট্রেন। রাজস্ব আয়ও হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ, রীতিমত তাক লাগানো। ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ট্রেনে ডিসেম্বর (২০২৩) এবং জানুয়ারি (২০২৪) মাসে যাত্রী পরিবহন করেছে ৮৪ হাজার ৭২২ জন। রাজস্ব আয় করেছে ৭ কোটি ৩০ লাখ ৭৫ হাজার। অপরদিকে ‘পর্যটন এক্সপ্রেস’ গত জানুয়ারি মাসে যাত্রী পরিবহন করেছে ১৪ হাজার ৫৪৫ জন। রাজস্ব আয় করেছে ২ কোটি ২৭ লাখ।

কোচ, ইঞ্জিন ও লোকবলের অভাবে যাত্রীদের প্রত্যাশা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, রেলে এ রুট সবচেয়ে লাভবান। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত এই দুটি ট্রেন প্রায় ১ লাখের মতো যাত্রী পরিবহন করেছে। ট্রেন দুটি থেকে গত দুই মাসে ৮ কোটি ৫৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে বলে জানান তিনি। গত ফেব্রুয়ারি মাসেও এই দুটি ট্রেনের আয় সাড়ে ৪ কোটি টাকার উপরে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যিক বিভাগের এক কর্মকর্তা।

রেলওয়ে অপারেশন ও পরিবহন দপ্তর সূত্র জানায়, ঢাকাকক্সবাজারের মধ্যে এই মুহূর্তেই অন্তত ১২ থেকে ১৫ জোড়া ট্রেন চালানো জরুরি হয়ে পড়েছে। রুট প্রস্তুত, কিন্তু সক্ষমতা এখনো পুরোপুরি তৈরি হয়নি, নতুন এবং বহুল জনপ্রিয় নতুন এই রুটের জন্য আলাদা করে জনবল কাঠামো তৈরি হয়নি। বর্তমানে যে দুটি ট্রেন চলছে, তার টিকিট অনলাইন ও কাউন্টারে ছাড়ার মুহূর্তেই বিক্রি শেষ হয়ে যাচ্ছে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ট্রেনেই কেবিন যুক্ত করা হবে বলে জানান পরিবহন বিভাগের কর্মকর্তারা।

এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, ঢাকাচট্টগ্রামকক্সবাজার রুটের যাত্রীদের চাহিদা সীমাহীন। এই রুটে টিকিটের জন্য যাত্রীদের যে পরিমাণ ডিমান্ড তার সঙ্গে তাল মিলাতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমাদের ইচ্ছে থাকা সত্ত্বে সক্ষমতার কিছুটা ঘাটতি আছে। তবে আমাদের পরিকল্পনা আছে এই রুটে আরো ট্রেন নামানোর জন্য। ইঞ্জিন সংকটের কারণে এই মুহূর্তে আমরা পরিকল্পনা নিয়েও এগোতে পারছি না।

ঢাকাচট্টগ্রাম কক্সবাজার রুটে সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হচ্ছে চট্টগ্রামের যাত্রীরা। দুটি ট্রেনে চট্টগ্রামবাসীর জন্য টিকিট মাত্র ১১৫টি করে। চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি চট্টগ্রাম থেকে একটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু করার। এই ব্যাপারে রেলপথ মন্ত্রীর কাছেও সরাসারি দাবি জানানো হয়েছিল। ইঞ্জিন সংকটে ঝুলে আছে চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজার ট্রেন চালুর প্রক্রিয়া। এই রুটে টিকিটের চাহিদা বাড়লেও তা পূরণ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিদ্যুতের দাম বাড়ল খুচরায় ৮.৫%, পাইকারিতে ৫%
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম থেকে প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন ওয়াসিকা ও নজরুল ইসলাম