আগামী দুই মাসের মধ্যে দেশে একাধিক রাজনৈতিক দল আসবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। গতকাল শুক্রবার বিকালে পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়ামে ‘পঞ্চগড় রাইজিং’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। জাতীয় নাগরিক কমিটি কখনোই কোনো রাজনৈতিক দল না হওয়ার বিষয়টি তুলে সারজিস বলেন, অভ্যুত্থানে যারা ছিল তাদের নিয়েই হয়তো এই রাজনৈতিক দল আসবে। খবর বিডিনিউজের।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সহায়তায় নতুন দল গঠনের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর হয়েছে। ‘জনশক্তি’ নামে ওই দল করার খবর আসার পর জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এ নামে দল করা নিয়ে আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হয়নি।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের সফল আন্দোলনে নেতৃত্বে দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, জাতীয় নাগরিক কমিটি একটি রাজনৈতিক শক্তি। রাজনৈতিক দল রেজিস্ট্রেশন করে সরাসরি রাজনীতি করে ভোটের নির্বাচনে যায়। জাতীয় নাগরিক কমিটি আগামীর বাংলাদেশে লিডারশিপ তৈরি করবে। পাশাপাশি প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে। একই সাথে এটি জাতীয় পর্যায়ের একটি ইনস্টিটিউট হবে।
সারজিস আলম বলেন, বিগত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে দেশে লিডার তৈরি হয়নি, তৈরি হয়েছে কিছু দাস আর নীরব কিছু দর্শক। আগামীর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো যদি উন্নয়ন করতে চাই তাহলে আগে আমাদের লিডার তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, লিডার হিসেবে যাদের শিক্ষা, দক্ষতা ও জ্ঞান থাকবে। লিডার হিসেবে এই মানসিকতা থাকবে যে, কেউ অনুসারী না, সবাই সহযোদ্ধা। এই অভ্যুত্থানে যারা ছিল তাদের নিয়েই হয়তো এই রাজনৈতিক দল আসবে। তবে যে রাজনৈতিক দলে যাবে তারা নাগরিক কমিটিতে থাকতে পারবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ যদি ওই রাজনৈতিক দলে যেতে চায় তাহলে তাকে তার সব পদ ছেড়ে যেতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যে জায়গায় আছে সেখানেই থাকবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আবার যদি কেউ ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠে তার বিরুদ্ধে আবারো এখান থেকেই যে কেউ আন্দোলনের ডাক দিতে পারবে।
গত ১৫ বছরে মেট্রো রেল, পদ্মা সেতু, এঙপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলের মতো কিছু অবকাঠামো দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন দেখানোর সমালোচনা করে জাতীয় নাগরিক কমিটির এই মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, একটা দেশের উন্নতি কেবল কিছু অবকাঠামো দিয়ে হতে পারে না। এই অবকাঠামোগুলো মানুষের চোখের সামনে দিয়ে ভেতরে ভেতরে দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থ পাচার করা হয়েছে। যে প্রকল্প ২০ হাজার কোটি টাকায় হয়ে যেত সেই প্রকল্প চুরি বাটপারি সিন্ডিকেট লুটপাট স্বজনপ্রীতি করে যখন ৩৫ হাজার কোটি টাকায় ঠেকায়, সেটি দেশের জন্য সমস্যা।