দুই ভাগ হচ্ছে চট্টগ্রাম বিআরটিএ। চট্টগ্রাম মহানগরীর ১৬টি থানাকে দুই ভাগ করে পরিচালিত হবে বিআরটিএর কার্যক্রম। মানুষের কষ্ট এবং ভোগান্তি কমাতে হালিশহরে একটি ভাড়া বাড়িতে বিআরটিএ চট্টগ্রাম দক্ষিণের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। আগামী মাস থেকেই এই কার্যক্রম শুরু করা হতে পারে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রামের বিআরটিএর কার্যক্রম বছর কয়েক আগেও নগরীর আদালত ভবন থেকে পরিচালিত হতো। দিনে দিনে কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় বিআরটিএ স্থানান্তর করা হয় বালুছড়া এলাকায়। শহরের বাইরে নিজস্ব জায়গায় ভবনসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো গড়ে তুলে পরিচালিত হতে থাকে বিআরটিএ চট্টগ্রামের কার্যক্রম। বিআরটিএর এই কার্যালয় থেকে নগরীর ১৬টি থানা এবং জেলার ১৫টি থানার কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
বিআরটিএর এই কার্যালয় থেকে প্রতিদিন মোটর সাইকেল, বাস ট্রাক এবং প্রাইভেট কারের পাশাপাশি নানা ধরনের যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন এবং ফিটনেস ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু এবং নবায়নের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ এসব সেবার জন্য বিআরটি কার্যালয়ে ভিড় করেন। সকাল থেকে বিকেল অব্দি বিআরটিএতে ভিড় লেগে থাকে। অপরদিকে যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে ড্রাইভিং লাইসেন্স পর্যন্ত বিভিন্ন কার্যক্রম অনলাইন করতে গিয়ে কাজের ধরন পাল্টে গেছে। ছবি তোলাসহ বায়োমেট্রিক করতে দীর্ঘ সময় লাগছে। বায়োমেট্রিকে একজনের পাঁচ মিনিট করে সময় লাগলেও একজন মানুষ সর্বোচ্চ ৭০ জনকে সেবা দিতে পারে। চারটি টেবিলে ২৮০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ জনকে সেবা দেয়া যায়। কিন্তু প্রতিদিন এই সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের। প্রায় প্রতিদিন কিছু মানুষকে ফেরত যেতে হয়। অপরদিকে শহরের পতেঙ্গা কিংবা হালিশহর অঞ্চল থেকে মানুষের বিআরটিএতে যাওয়াটা বেশ কষ্টের। এই কষ্ট আরো প্রকট হয়ে উঠে যখন কাজটি হয়না।
বিরাজমান পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রাণাধীন বিআরটিএকে দুইভাগে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বিষয়টি পাকাপোক্ত করে হালিশহরের বড়পোল সংলগ্ন প্রখ্যাত আওয়ামী লীগ নেতা এম এ আজিজের বাড়িটির একটি অংশ বিআরটিএ ভাড়া নিয়েছে। ওই ভাড়া বাড়িতে অফিসের কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী মাস খানেকের মধ্যে হালিশহরের ওই বাড়ি থেকে বিআরটিএ চট্টগ্রাম দক্ষিণের কার্যক্রম শুরু হবে।
নয়া এই অফিসে গাড়ি রেজিস্ট্রেশন, গাড়ির ফিটনেস, চালকদের লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন, গাড়ির নম্বর প্লেট লাগানোসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হবে। নগরীর পতেঙ্গা, ইপিজেড, বন্দর, হালিশহর, পাহাড়তলী, ডবলমুরিং, সদরঘাট ও কোতোয়ালী থানার যাবতীয় কার্যক্রম হালিশহরে স্থানান্তরিত হবে। বর্তমান বিআরটিএতে নগরীর আকবর শাহ, বায়েজিদ, খুলশী, চকবাজার, পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও, বাকলিয়া এবং কর্ণফুলী থানার কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
বিআটিএর পরিচালক তৌহিদুল হোসেন অফিস দুই ভাগ করার কথা স্বীকার করে বলেছেন, মানুষের কষ্ট লাঘব করতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যানবাহন বেড়েছে। কাজও বেড়েছে। তাই দুইভাগ করার ফলে নগরবাসীর সুবিধা হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।