দুই বারই সীমানা দেয়াল ধসে পড়লো রাতে

রক্ষা পেলো অসংখ্য শিশু

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৩ জুন, ২০২৪ at ৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ

নগরীর মাদারবাড়ি বালুর মাঠে একটি দেয়াল ধসে পড়ায় বড় ধরনের অঘটন থেকে রক্ষা পেয়েছে স্থানীয় শিশু কিশোরেরা। রাতের বেলায় না পড়ে দিনের বেলায় দেয়ালটি ভেঙে পড়লে অনেকেই হতাহত হওয়ার শঙ্কা ছিল। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্মিত একটি দেয়াল ছয় মাসের মাথায় ধসে পড়ায় আতংকে শিশু কিশোরেরা খেলাধুলা বন্ধ করে দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, যে ঠিকাদারের নির্মিত সীমানা দেয়াল মাত্র মাস কয়েকের মাথায় ভেঙ্গে পড়লো সেই একই ঠিকাদারকে দিয়ে অপর পাশের ভালো দেয়ালটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করানো হচ্ছে। পুরো ব্যাপারটিকে এলাকাবাসী ‘অহেতুক কর্মকাণ্ড’ বলে আখ্যায়িত করেছে।

সূত্র জানিয়েছে, নগরীর মাদারবাড়ি পোর্ট সিটি আবাসিক এলাকা সন্নিহিত বালুর মাঠ এলাকায় প্রায় সাত একর জায়গা নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের সাথে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মামলা চলছে। রেলওয়ের মালিকানাধীন জায়গাটি দুই হাজার সালের দিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন দীর্ঘমেয়াদী ইজারা নেয়ার উদ্যোগ নেয়। পরবর্তীতে দুই সংস্থার মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে আদালতে মামলা করা হয়। যা চলমান রয়েছে। ইজারা প্রক্রিয়ার শুরুতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন জায়গাটিতে দেয়াল নির্মাণ করে। জায়গা সিটি কর্পোরেশনের দখলে রয়েছে। তবে মামলা থাকায় মাদারবাড়ি রেলওয়ে গেট থেকে মাঝিরঘাটের স্ট্যান্ডরোড পর্যন্ত বিস্তৃত শ’ দেড়েক ফুট চওড়া এবং তিন হাজার ফুটেরও বেশি লম্বা জায়গাটি দেয়াল দিয়ে ঘেরা করা ছিল। পুরোনো দেয়ালটি মোটামুটি ভালো থাকলেও মাস ছয়েক আগে একপাশের দেয়ালটি ভেঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নতুন করে একটি দেয়াল নির্মাণ করে। অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী এবং দেয়ালটির একপাশ প্লাস্টার না করায় মাত্র মাস কয়েকের মধ্যে দেয়ালটি ভেঙ্গে পড়তে শুরু করে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের রাতে দেয়ালটির একটি বড় অংশ ধসে পড়ে। গত দুইদিন আগে আরো একটি বড় অংশ ধসে পড়ে। ভাগ্যক্রমে দুইদিনই দেয়ালটি রাতের বেলায় ভেঙ্গে পড়ে। দিনের বেলায় মাঠে অসংখ্য শিশু কিশোর খেলাধুলা করে। ওই সময় দেয়াল ভেঙ্গে পড়লে বড় ধরনের ট্র্যাজেডির ঘটনা ঘটতো বলেও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

ভেঙ্গে পড়া দেয়ালের ইটগুলো ছিটিয়ে ছড়িয়ে রয়েছে। সরজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, ইটগুলো বেশ নতুন এবং আস্ত থাকলেও সিমেন্টের ব্যবহার যথাযথ না থাকায় এগুলো একটির সাথে অপরটির গাঁথুনি একেবারে ঠুনকো। লম্বা দেয়ালটি নির্মাণে কোনো রডের ব্যবহার করা হয়নি। ব্রিকপিলার দিয়ে কোনো রকমে নির্মাণকাজ শেষ করা হয়েছে।

জানা গেছে, যেই ঠিকাদার ভেঙ্গে পড়া দেয়ালটি নির্মাণ করছেন সেই একই ঠিকাদার বিপরীত পাশের অপর একটি দেয়ালও নির্মাণ করছেন। সেখানেও আগের মোটামুটি ভালো দেয়ালটি ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। স্থানীয়রা পুরো ব্যাপারটিকে ‘টাকা পয়সার শ্রাদ্ধ’ এবং ‘অহেতুক কর্মকাণ্ড’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, ব্যাপক গোঁজামিল দিয়ে নির্মিত নতুন দেয়ালটির চেয়ে পুরোনো দেয়ালটিই ভালো ছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশখের বাইকে প্রাণ গেল কলেজ ছাত্র ইমনের
পরবর্তী নিবন্ধজ্বালানি নিরাপত্তায় ব্যবহার হবে বে টার্মিনালের ৪র্থ টার্মিনাল