মীরসরাইয়ে ঝরনা থেকে পড়ে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের বড়দারোগাহাট এলাকার রূপসী ঝরনায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুই শিক্ষার্থী হলেন মুসফিকুর রহমান আদনান (২১) ও মাহবুবুর রহমান মুত্তাকিম (২১)। আদনান ঢাকা ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ও মাদারীপুর জেলার চাষাড়া এলাকার আতিকুর রহমানের ছেলে। মুত্তাকিম নারায়ণগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অর্থনীতিতে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ও লক্ষ্মীপুর জেলার মৃত মোহাম্মদ মুরাদের ছেলে।
নিহত মুত্তাকিনের ছোট ভাই ইফতেখার বলেন, আদনান ও মুত্তাকিন ছোট বেলার বন্ধু। আদনান ভাইয়ের খালাতো ভাই আফিফুর সহ তিনজনই ঝরনায় বেড়াতে যান।
দুই বন্ধুর মৃত্যুতে নির্বিকার হয়ে পড়েছেন আফিফ। তিনি জানান, প্রথমে মুত্তাকিম পিছলে পড়ে গিয়েছিল ঝরনার জলে। আর তখনি আদনান বন্ধুকে বাঁচাতে নিজে ঝরনার জলে নেমে দুজনই হারিয়ে গেছে। সকাল ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে মীরসরাই ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা দুপুর ১টার দিকে দুই বন্ধুর মৃতদেহ উদ্ধার করে।
মীরসরাই ফারার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারী বলেন, প্রায় দুই ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর দুজনের মরদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হই। মৃতদেহ মীরসরাই থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মীরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল কাদের বলেন, নিহত দুই ছাত্রের মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিহত আদনানের বাবা আতিকুর রহমান বলেন, আমার একমাত্র সন্তান আদনান এসএসসি–এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ পেয়েছিল। আপাতত ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে ভর্তি হলেও বেটার সুযোগের অপেক্ষা করছিল। ছেলে সকালে হোয়াটসঅ্যাপে ‘শুভ সকাল’ লিখে ঝরনায় প্রবেশ করছে জানিয়েছে। বার বার নিষেধ করে বলেছি–ঝরনায় যেও না, তুমি সেখানকার দুর্গম পথ বুঝবে না। এখন ছেলের লাশ বহন করবো কীভাবে জানি না–বলেই চোখের জল মুছেন আতিকুর রহমান।