দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে এসে খুন হয় ফাহিম

ছুরিকাঘাতকারী সজল গ্রেপ্তার, অনলাইনে অর্ডার দিয়ে কিনেছিল দুটি ছুরি

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২০ এপ্রিল, ২০২২ at ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

দুই পক্ষের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে এসে সজলের ছুরিকাঘাতে খুন হয় কিশোর ফাহিম। গত ১৮ এপ্রিল রাতে কিশোরগঞ্জ নিকলী থানা এলাকা থেকে ১৪ বছর বয়সী সজলকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামে আনা হয় বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের পশ্চিম জোনের উপ-কমিশনার আব্দুল ওয়ারীশ। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ ছুরিকাঘাতকারীকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৫ এপ্রিল রাতে হালিশহরে ঈদবস্ত্র মেলায় সামান্য ধাক্কাধাক্কির জেরে পাহাড়তলী থানার ঈদগাঁ কাঁচা রাস্তার মোড়ে দুই দল কিশোরের মধ্যে প্রথমে ঝগড়া ও পরে মারামারি হয়। এ সময় ছুরিকাঘাতে আহত হয় দুই কিশোর। এদের মধ্যে ফাহিম (১৬) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। ইমন নামে আহত অপর কিশোর এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। নিহত ফাহিম গণপূর্ত বিদ্যানিকেতনের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে হালিশহর আফজাল ফকির রোডের ধোপা পুকুর পাড়ের বাসিন্দা মো. জহিরের ছেলে। এ ঘটনায় ফাহিমের বাবা মো. জহিরের দায়ের করা মামলায় এ নিয়ে দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করল পাহাড়তলী থানা পুলিশ।

তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে উপ-পুলিশ কমিশনার আব্দুল ওয়ারীশ আজাদীকে জানান, শুক্রবার রাতে হালিশহরের দুলহান কমিউনিটি সেন্টারে ঈদবস্ত্র মেলায় গিয়েছিল গ্রেপ্তার হওয়া সজলের বন্ধু অভিসহ কয়েকজন। মেলায় ভিড়ের মধ্যে অভির সঙ্গে আরেক কিশোরের ধাক্কা লাগে। এর জেরে দুই দল কিশোরের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এতে তারা অভির গায়ে হাত তোলে। তখন অভি কিশোরগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার হওয়া সজলসহ কয়েকজন বন্ধুকে ঈদগাঁ কাঁচা রাস্তার মোড়ে ডেকে আনে।

তিনি জানান, ফাহিমসহ কয়েকজন গিয়েছিল উভয় পক্ষকে মিলিয়ে দেয়ার জন্য। কথাবার্তার এক পর্যায়ে সেখানে আবারও ঝগড়া শুরু হয়। তখন সজল পকেট থেকে ছুরি বের করে ফাহিমের বাম হাতে এবং ইমনের পিঠে আঘাত করে। অনলাইনে অর্ডার দিয়ে ওই কিশোর ছুরি দুটি কিনেছিল। একটি দিয়ে আঘাত করে, আরেকটি পকেটে ছিল।

ঘটনাস্থলে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ছুরিকাঘাতকারী কিশোরকে শনাক্ত করে তার বিস্তারিত পরিচয় সংগ্রহ করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে নগরীর সরাইপাড়ায় তাদের গ্রুপের এক কিশোরের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় ছোরা দুটি।

পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল ওয়ারীশ বলেন, ইতোপূর্বে ঘটনায় জড়িত আরও এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গ্রেপ্তার দুই কিশোরই বখাটে প্রকৃতির। কিশোরগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার কিশোর পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। এখন পড়ালেখা করে না। এলাকায় অলিগলিতে শিশু-কিশোরদের নিয়ে আড্ডা দেয়। ছোটখাট নানা অপরাধ করে বেড়ায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএবার মির্জা খালে পড়ে গেল এক কিশোরী
পরবর্তী নিবন্ধআগে নগরবাসীর সচেতনতা এরপর নিরাপত্তা