দুই নৌকার দাম কেন ৪০ লাখ টাকা?

| শনিবার , ৭ নভেম্বর, ২০২০ at ৫:১৮ পূর্বাহ্ণ

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সংসদ লেকে বৃহস্পতিবার ভাসানো হয় আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী ও দৃষ্টিনন্দন দুটি গয়না নৌকা। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের তৈরি করা নৌকা দুটি ভাসিয়ে দেওয়া উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানও হয়। নৌকার লাল-সবুজ পালের মাঝে রয়েছে ‘মুজিববর্ষের’ লোগো। নৌকার ছাউনিতে রয়েছে বিভিন্ন গ্রামীণ নকশা। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান রাম চন্দ্র দাস বৃহস্পতিবার জানান, দৃষ্টিনন্দন ২৭ ফুট লম্বা এবং পাঁচ ফুট চওড়া এ নৌকা দুটি তৈরিতে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এই নৌকায় একসাথে ২০ জন মানুষ উঠতে পারবেন। খবর বিডিনিউজের।
৪০ লাখ টাকা ব্যয়ের খবর প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়। দুটো নৌকা তৈরিতে এই পরিমাণ টাকা খরচ ‘অস্বাভাবিক’ মন্তব্য করে ফেইসবুকে পোস্ট দেন অনেকে। তাদের সন্দেহ, এত টাকা দিয়ে নৌকা বানানোতে ‘অনিয়ম’ হয়েছে। কেউ কেউ তামাশা করে এই খরচ নিয়ে লিখেছেন, ‘এত কম’!
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নৌকা দুটি তৈরির এই ৪০ লাখ টাকার মধ্যে প্রায় ১০ লাখ টাকা বিভিন্ন কর হিসেবে গেছে সরকারের খাতায়। বাকি টাকা লেগেছে চারুকলার শিল্পীদের দিয়ে নৌকা তৈরিতে। সাধারণ নৌকা বানাতে কেমন খরচ হয় জানতে পিরোজপুরের আটঘরের নৌকার কারিগর সঞ্জীর মিস্ত্রির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, এক মৌসুমে ব্যবহারের জন্য রেইনট্রি বা সারি গাছের একটি ডিঙি নৌকা বানাতে খরচ পড়ে ৪-৫ হাজার টাকা। আর সেটা যদি ৩-৪ মৌসুম ব্যবহারের জন্য করা হয় ১৫ হাজার টাকার বেশি লাগে।
গয়না নৌকা বানাতে খরচ কেমন হয় জানতে চাইলে সঞ্জীব বলেন, ছোট একটা গয়না নৌকা বানাতে কমপক্ষে ৭০ হাজার টাকা লাগে। যেটা খুব সাধারণ। আর যদি খুব ভালো কাঠ দিয়ে বানানো হয় তবে ৫ লাখ টাকা লাগবেই। এগুলো ছোট গয়না নৌকা। বড় হলে আরও বেশি খরচ পড়বে। আর ভালো কাঠ দিলে খরচ আরও বাড়বে। সঞ্জীব জানান, নকশার কারণে গয়না নৌকা তৈরিতে সময় ও খরচ বেশি লাগে। সমপ্রতি নৌকার ব্যবসা শুরু করেছে প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান আরএফএল। তাদের ফাইবার গ্লাসের (ফাইবার রিইনফোর্সড প্লাস্টিক-এফআরপি) তৈরি নৌকার দাম ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৯০০ টাকা থেকে সাত লাখ ৪০ হাজার টাকার মধ্যে। সংসদ লেকে ভাসানো নৌকা দুটির নকশা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্রিন্ট মেকিং বিভাগের অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। তার তত্ত্বাবধানেই ৩০ জন মিস্ত্রি এই দুটো নৌকা বানাতে কাজ করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে সুস্থতার হার ৭৭.৪৩ শতাংশ
পরবর্তী নিবন্ধবাইডেন পরিবারের যত ‘অজানা’ তথ্য