মামলার নথি দেখতে গিয়ে এক আইনজীবী মারধরের শিকার হয়েছেন অভিযোগের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম আদালত পাড়ায় প্রতিবাদ, বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন আইনজীবীরা। ক্ষিপ্ত হয়ে সংশ্লিষ্ট আদালত কক্ষে তালা দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। অপসারণসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে দুপুর ১২টার দিকে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়াউদ্দিনের হস্তক্ষেপে তালা খুলে দেওয়া হলে বিচার কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। এদিকে আইনজীবীকে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের ওএসডি (অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি) করা হয়েছে। পাশাপাশি একজন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে।
এ কমিটি তদন্ত শেষ করে দ্রুত প্রতিবেদন দাখিল করবে। আদালত ও জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। গত ৩ নভেম্বর বিকালে ১ম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আইনজীবী মনজুর আলমের ওপর হামলার ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় আইনজীবী সমিতি বরাবর দেওয়া অভিযোগে বেঞ্চ সহকারী মো. সাইফুদ্দিন পারভেজসহ মো. সুমন ও মো. আব্দুর রহিম নামের উক্ত আদালতের আরো দুইজনের নাম উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, মামলার নথি দেখতে গেলে স্টিলের স্কেল দিয়ে তাকে মাথায় আঘাত করা হয়। পাশাপাশি লাথি, কিল, ঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখমও করা হয়।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী আইনজীবী ও জাগ্রত আইনজীবী পরিষদ নামের একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান টি আর খান আজাদীকে বলেন, ‘দুর্নীতি, অনিয়ম বেড়ে গেছে আদালত পাড়ায়। কোর্ট স্টাফরা টাকা ছাড়া কিছুই বুঝে না। টাকা না দিলে আইনজীবী, আইনজীবীদের সহকারীদের সাথে খারাপ আচরণ করা হয়। সর্বশেষ নথি দেখতে গিয়ে আদালত কক্ষেই মারধরের শিকার হয়েছেন আমাদের একজন সহকর্মী। আমাদের সহকর্মী কোর্ট অফিসার হওয়া সত্বেও আদালত কর্মচারীরা তার ওপর হামলা করেছেন। এ জন্য প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছি। যেখানে প্রায় ৫০০ আইনজীবী অংশগ্রহণ করেছেন।
তিনি বলেন, জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আইনজীবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অভিযুক্ত বেঞ্চ সহকারী মো. সাইফুদ্দিন পারভেজ বলেন, কোর্ট ডায়েরি দেখার নিয়ম নেই। এ নিয়ে হয়তো তর্কাতর্কি হয়েছে। আমাদের স্টাফকে মারধর করা হয়েছে। এখন বলা হচ্ছে, আইনজীবী মারধরের শিকার হয়েছেন। যাইহোক, এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী আমাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আপাতত আমাদেরকে দাপ্তরিক সময় পার করতে বলা হয়েছে। তাই আমরা দায়িত্ব পালন থেকে বিরত আছি। এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইএম জিয়াউদ্দিন আজাদীকে বলেন, আইনজীবীর ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের ওএসডি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।