দুই গ্রুপের মারামারিতে পণ্ড হয়েছে ১১ নং দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ড বিএনপির ইউনিট সম্মেলন। মারামারিতে দুই গ্রুপের ৭-৮ জন আহত হয়েছেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাহাড়তলী থানা পুলিশ ৭ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল দুপুর ৩টার দিকে সাগরিকা গরুর বাজার সংলগ্ন একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে চারজনের নাম জানা গেছে। এরা হচ্ছেন দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর আহমদ, পাহাড়তলী থানা যুবদলের আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন, হালিশহর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কাফী মুন্না ও স্থানীয় বিএনপি নেতা রায়হান মাহমুদ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কমিউনিটি সেন্টারে পাহাড়তলী থানার ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের ‘ক’ ও ‘গ’ নম্বর ইউনিটের সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল হালিশহর, পাহাড়তলী, খুলশী থানা ও থানার আওতাধীন বিভিন্ন ওয়ার্ড পুনর্গঠন টিমের প্রধান নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী বেলালের। সম্মেলন শুরুর আগে চেয়ার বসানো ও মঞ্চে ব্যানার লাগানোর কাজ চলছিল। এ সময় নগর বিএনপির সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মোহাম্মদ চৌধুরী, সাবেক যুব বিষয়ক সহসম্পাদক আজাদ বাঙালী, সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম, বিএনপি নেতা নকীব ভূঁইয়া ও ইলিয়াছ চৌধুরীর নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী সেখানে পৌঁছান। তারা স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের না জানিয়ে সম্মেলন করা হচ্ছে দাবি করে এর প্রতিবাদ জানান। এমনকি ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সম্মেলন কেন ১০ নম্বর ওয়ার্ডে করা হচ্ছে সে প্রশ্ন তোলেন। এ নিয়ে ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর আহমদ ও সদস্য সচিব মো. শফিউল্লাহর সঙ্গে বাদানুবাদ জড়িয়ে পড়েন তারা। এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপ হাতাহাতি ও মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে।
পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান আজাদীকে বলেন, সাগরিকা গরুর বাজারের সামনে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করি। এ সময় সাতজনকে আটক করা হয়।
পুনর্গঠন টিমের প্রধান কাজী বেলাল আজাদীকে বলেন, ১১ নং দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের দুটি ইউনিটের সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। আমরা যাওয়ার আগেই যারা সম্মেলনের বিরোধী তারা গিয়ে সেখানে ভাঙচুর করে। উপস্থিত নেতাকর্মীদের মারধর করে। পরে পুলিশ গিয়ে ক্লাবে তালা মেরে দেয়। সম্মেলন আর হয়নি।
১১ নম্বর ওয়ার্ডের সম্মেলন ১০ নম্বরে আয়োজনের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তার এক পাশে ১০, অন্য পাশে ১১। কোথাও কমিউনিটি সেন্টার না পেয়ে এটা ভাড়া করা হয়েছিল। তাছাড়া সেটা ১১ নম্বর থেকে দূরে ছিল না।
নগর বিএনপির সাবেক যুব বিষয়ক সহসম্পাদক আজাদ বাঙালী আজাদীকে বলেন, ১১ নং ওয়ার্ডের সম্মেলন কিন্তু করা হচ্ছে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে। এখান থেকেই বোঝা যাচ্ছে চোরের মতো লুকিয়ে পছন্দের লোকদের নেতৃত্বে আনার জন্য লোক দেখানো সম্মেলন করা হচ্ছে। আমি নিজে দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত। রাজনীতি করতে গিয়ে সাত-আটবার জেল খেটেছি। আমার মতো আরো অনেকে আছেন। তাদের কাউকেই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায়নি। এমনকি থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি-সেক্রেটারিকে পর্যন্ত বলেনি। অথচ যুবদল-স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাকর্মীদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।