দুই আসামির কাছে তিন লাখ টাকা পাঠিয়েছিলেন বাবুলের বন্ধুর কর্মচারী

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৯ জুলাই, ২০২৩ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

মাহমুদা খানম মিতু খুনে এবার আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন বাবুলের বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার সাইফুল ইসলামের কর্মচারী মোখলেসুর রহমান ইরাদ। সাক্ষ্যে ইরাদ বলেন, মিতু ভাবী মার্ডার হন ২০১৬ সালের ৫ জুন। দুদিন পর সাইফুল স্যার ও আমি বাবুল আক্তার স্যারের শ্বশুরবাড়ি ঢাকার বনশ্রীর মেরাদিয়াতে যাই। সেখানে দুপুরের খাবার খাই। বাবুল আক্তার স্যারের ছেলেমেয়ের সাথে সেলফি তুলে তা ফেইসবুকে শেয়ারও করি। একপর্যায়ে সাইফুল স্যার আমাকে অফিসে যেতে বলেন এবং নির্দেশ দেন একাউন্টস থেকে তিন লাখ টাকা গ্রহণ করতে। নির্দেশনা অনুযায়ী সেখানে যাই এবং তিন লাখ টাকা গ্রহণ করি। বিষয়টি স্যারকে জানাই এবং জিজ্ঞেস করি টাকাগুলো কী করব? তিনি টাকাগুলো বাবুল আক্তার স্যারের বোনের বাসায় দিয়ে আসতে বলেন। আমি সেটা করি।

পরের দিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, পরদিন সাইফুল স্যার ফের বাবুল আক্তার স্যারের বোনের বাসায় যেতে বলেন এবং তিন লাখ টাকা নিতে বলেন। আমি সেখানে যাই এবং তিন লাখ টাকা গ্রহণ করি। পাশাপাশি আমাকে দুটি গ্রামীণ নম্বর (বিকাশ) ও দুটি নাম (আনোয়ার ও ওয়াসিম) দেওয়া হয়। তখন বাবুল আক্তার স্যারের বাবাও সেখানে ছিলেন। একপর্যায়ে সাইফুল স্যারকে ফোন দিলে তিনি টাকাগুলো বিকাশ নম্বর দুটিতে পাঠিয়ে দিতে বলেন। নির্দেশনা অনুযায়ী আমি তা করি।

গতকাল চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দিন ইরাদের সাক্ষ্য রেকর্ড করেন। এরপর বাবুল আক্তারের আইনজীবীরা ইরাদকে জেরা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কেশব নাথ আজাদীকে বলেন, আগামী ৮ আগস্ট পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

ইরাদ তার সাক্ষ্যে আরো বলেন, ২০২১ সালে পিবিআই তাকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং আদালতে উপস্থাপন করে। সেখানে আমি জবানবন্দি দিই।

এর আগে মিতুর বাবা, বাবুল, তার বান্ধবী গায়ত্রীর গৃহকর্মী, এক আসামি কামরুল ইসলাম শিকদার মুছার স্ত্রী এবং গায়ত্রীর বাসার প্রহরী সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।

আদালত সূত্র জানায়, মিতু খুনের মামলায় ১৩ মার্চ চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়। এর আগে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর বাবুলসহ মামলার সাত আসামির বিরুদ্ধে মহানগর হাকিম আদালতে ২০ পৃষ্ঠার চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক আবু জাফর মো. ওমর ফারুক।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাবুল আক্তার কঙবাজারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেখানে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএনএইচসিআর কঙবাজার কার্যালয়ের কর্মী ও ভারতীয় নাগরিক গায়ত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় এবং তার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ কারণে স্ত্রী মিতুর সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়। এর জেরে তাকে খুনের সিদ্ধান্ত নেন বাবুল। একপর্যায়ে খুনিদের ৩ লাখ টাকায় ভাড়া করে মিশন শেষ করেন। পরে পরিকল্পনা মতো এ হত্যাকাণ্ডকে জঙ্গিদের কাজ বলে প্রচারণা চালানো হয়।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় গুলি ও ছুরিকাঘাতে মিতুকে খুন করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডেঙ্গুতে সারা দেশে এক দিনে সর্বোচ্চ ১৩ মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে টিসিবির নিত্যপণ্যের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে চাল