দীর্ঘ ১০ বছর পর আজ কক্সবাজার আসছেন সালাহউদ্দিন আহমদ

উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে অধীর প্রতীক্ষা নেতাকর্মী ও সমর্থকদের

কক্সবাজার ও চকরিয়া প্রতিনিধি | বুধবার , ২৮ আগস্ট, ২০২৪ at ৮:২০ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ ১০ বছর পর আজ কক্সবাজারের মাটিতে পা রাখছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। সেখান থেকে সড়কপথে তিনি নিজ সংসদীয় আসন চকরিয়া ও পেকুয়ায় (কক্সবাজার) যাবেন। সেখানে একাধিক গণসংবর্ধনা ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন তিনি।

এদিকে চকরিয়াপেকুয়াসহ পুরো কক্সবাজার জেলায় ঢাকঢোল বাজিয়ে প্রস্তুতি চলছে সালাহউদ্দিন আহমদকে বরণ করার। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তার আগমন উপলক্ষে স্বাগত মিছিল করেছে জেলা বিএনপি। মিছিলে স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিকদল, যুবদল, ছাত্রদলসহ সহযোগী সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। ১০ বছর আগে তিনি কক্সবাজার থেকে ফিরে গিয়েছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে। এবার ফিরে আসছেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হয়ে।

কক্সবাজার জেলা বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তাদের প্রিয় নেতা সালাহউদ্দিন আহমদকে এমনভাবে বরণ করা হবে যেন সেটি ইতিহাস হয়ে থাকে। জেলাজুড়ে সৃষ্টি করা হবে গণপ্লাবণ। ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলা বিএনপি, চকরিয়া উপজেলা বিএনপি, মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপি ও পেকুয়া উপজেলা বিএনপি প্রস্তুতি শেষ করেছে। পথে পথে নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ। বিমানবন্দর থেকে লিংক রোড এবং পেকুয়াচকরিয়ায় নেতাকর্মীদের ব্যানারফেস্টুনে ছেয়ে গেছে।

জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী জানিয়েছেন, সালাহউদ্দিন আহমদ কক্সবাজার বিমান বন্দর থেকে সরাসরি চলে আসবেন আগুনে পুড়ে যাওয়া জেলা বিএনপি কার্যালয় পরিদর্শনে। পরিদর্শন শেষে তিনি সড়ক পথে চলে যাবেন চকরিয়ায়। সেখানে বাস টার্মিনালে রয়েছে তার গণসংবর্ধনা। বেলা ২টার সেই গণসংবর্ধনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন তিনি। চকরিয়া উপজেলা বিএনপি এই গণসংবর্ধনার আয়োজন করেছে। তারপর তিনি যাবেন বাবামায়ের দেশ পেকুয়ায়, যেখানে তিনি জন্মেছেন, খেলেছেন, পড়ালেখা করেছেন, বড় হয়েছেন, রাজনীতির পাঠ নিয়েছেন আর রেখেছেন উন্নয়ন রাজনীতির স্বাক্ষর। এখানেও রয়েছে বিশাল সংবর্ধনা। পেকুয়া উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে পেকুয়া আউটার স্টেডিয়ামে আয়োজিত সেই সংবর্ধনায়ও বক্তব্য রাখবেন সালাহউদ্দিন আহমদ। পরদিন ২৯ আগস্ট দুপুর ১২টায় শহীদ ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরামের কবর জিয়ারত ও স্বজনদের সাথে সাক্ষাত করবেন।

ইউসুফ বদরী বলেন, প্রিয় নেতা সালাহউদ্দিন আহমদকে বরণ করতে জেলা শ্রমিক দল সভাপতি রফিকুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট শৃক্সখলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। শত শত মোটর সাইকেল আর গাড়ির বহর কক্সবাজার বিমান বন্দরে সালাহউদ্দিন আহমদকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করবে। হাজারো নেতাকর্মী আর সাধারণ জনতার শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হবে বিমান বন্দর।

কক্সবাজার শহর থেকে শুরু করে কক্সবাজারচট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে চকরিয়াপেকুয়ার পথে থাকবে শত শত তোরণ। সালাহউদ্দিন আহমদকে স্বাগত জানিয়ে করা এই তোরণের সংখ্যা হাজারের অধিক হতে পারে। তাঁর আগমণী বার্তায় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে আনন্দের কমতি নেই। পাড়ামহল্লায় চায়ের দোকানেও সালাহউদ্দিনের আগমন নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। ধারণা করা হচ্ছেচকরিয়া ও পেকুয়ায় পৃথক সংবর্ধনায় ব্যাপক মানুষের সমাগম হবে। বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে এসব তোরণ নির্মাণকাজও সম্পন্ন করা হয়েছে।

তিনি জানান, সালাহউদ্দিন আহমদের কক্সবাজার আগমনকে ঘিরে জেলার প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি ওয়ার্ডে লাখ লাখ নারীপুরুষ অপেক্ষায় আছেন, কখন তাদের নেতা ফিরবেন নিজের ঘরে। তাঁর এই আগমনকে ঘিরে গ্রামেগঞ্জে করা হচ্ছে মাইকিং আর নানা ধরনের প্রচারণা।

প্রসঙ্গত, সালাহউদ্দিন আহমেদ চকরিয়াপেকুয়া আসনের দুইবারের এমপি ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী। পরে তার স্ত্রী অ্যাডভোকেট হাসিনা আহমদ এমপি নির্বাচিত হন। সরকার বিরোধী আন্দোলন চলাকালে দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মুখপাত্রের দায়িত্ব নেয়ার পর ২০১৫ সালের ১০ মে রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি ভবন থেকে সাদা পোশাকধারী আইনশৃক্সখলা বাহিনীর হাতে গুম হন তিনি। দুই মাস একদিন পর গুম রাজ্য থেকে মুক্ত হয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং শহরের গলফ কোর্স ময়দানে উদ্ধার হলেও ফিরতে পারেননি নিজের মাতৃভূমিতে। তারপর কেটে গেছে অনেকদিন, অনেক বছর। কক্সবাজার থেকে রাজধানীতে ফেরার সুদীর্ঘ ১০ বছর দুই মাস ১৪ দিন পর তিনি আবার ফিরে আসছেন নিজের জন্মভূমি কক্সবাজারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইউসিবিতে বিকালে নতুন চেয়ারম্যান, রাতেই পর্ষদ বদলে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক
পরবর্তী নিবন্ধজাহাজজটে উন্নতি, সংকট ক্রেনহীন জাহাজে