বয়স ৫০ বছর হওয়ার আগেই যারা দীর্ঘদিন ধরে স্থূলতায় ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি বলে সামপ্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের জনবহুল শহর বস্টনে ‘এন্ডোক্রাইন সোসাইটি’র বার্ষিক সভায় উত্থাপিত ‘এন্ডো ২০২৪’ নামের গবেষণা ফলাফলে বলা হয়, ৫০ বছরের কম বয়সী যেসব নারীরা ১০ বছর ধরে স্থূলতায় ভুগছেন তাদের হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। আর এই ঝুঁকি ৬৫ বছরের কম বয়সী পুরুষদের জন্য ৫৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে, বলেছেন বস্টনের ‘হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল অ্যান্ড মেডিসিন’ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আলেকজান্ডার তুর্চিন। তবে অধ্যাপক তুর্চিন বলছেন, ৫০ বছরের বেশি বয়সী নারী ও ৬৫ বছরের বেশি পুরুষের মধ্যে এ ধরনের ঝুঁকির সম্পর্কটি দেখা যায়নি। খবর বিডিনিউজের।
এ গবেষণার ফলাফলে আরও ইঙ্গিত মেলে, অল্প সময়ের জন্য কারও ওজন বেড়ে গেলে সেটি তাদের হৃদরোগ বা স্ট্রোকের ঝুঁকিতে কোনো প্রভাব ফেলে না। অধ্যাপক তুর্চিন বলেন এর মানে হল–যে কোনো সময় মোটা হয়ে গেলেই যে ভাগ্যের ১২টা বেজে গেল, এমন নয়। যদি ওজন বেড়ে যাওয়ার চিকিৎসা সময়মত করা হয় তবে এর বিভিন্ন জটিলতা এড়ানো যেতে পারে।
তুর্চিন বলেন, অতিরিক্ত ওজনের ফলে হৃদরোগ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন অসুস্থতার ঝুঁকি যে বেড়ে যায় তা আমাদের আগে থেকেই জানা। তবে, এ গবেষণাটি করার কারণ–একজন ব্যক্তির স্থূলতার মেয়াদ কতটা প্রভাব ফেলে সেটি খুঁজে দেখা। এ গবেষণার বিভিন্ন ফলাফলকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তুর্চিন। কারণ, এতে গবেষকরা দেখিয়েছেন, স্থূলতার ক্ষেত্রে একজন অল্প বয়স্ক ব্যক্তি যত দ্রুত চিকিৎসা শুরু করবেন, ততই তাদের বিপদমুক্তির সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
এ গবেষণার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ‘নার্সেস হেলথ স্টাডি’ ও ‘হেলথ প্রফেশনালস ফলো–আপ স্টাডি’ থেকে ডেটা সংগ্রহ করেছে গবেষণা দলটি। এতে এক লাখ নয় হাজার ২৫৯ জন নারী ও ২৭ হাজার ২৩৯ জন পুরুষ রয়েছেন। যাদের গড় বয়স ৪৮.৬ বছর এবং গবেষণার শুরুতে তাদের বডি মাস ইনডেঙ (বিএমআই) ২৭ ছিল। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৯ সালের মধ্যে যাদের বিএমআই ২৫–এর বেশি ছিল তারাই এ গবেষণার লক্ষ্য ছিলেন।
গবেষকদের উদ্দেশ্য ছিল কীভাবে একজন ব্যক্তির ওজন পরবর্তী ২০ বছরে বা ২০০০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে তাদের হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকিকে প্রভাবিত করে তুলতে পারে তা বোঝা। এ গবেষণায়, ছয় হাজার ৮৬২ জনের ধমনী প্লাক তৈরি হয় ও তিন হাজার ৫৮৭ জনের টাইপ ২ ডায়াবেটিস দেখা যায় এবং ৬৫ হাজার ১০১ জন ব্যক্তি ধূমপায়ী ছিলেন। পাশাপাশি, ২০২০ সালের একটি ফলো–আপে প্রকাশ করা হয়, উভয় গ্রুপেই হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক বা এ সম্পর্কিত মৃত্যুর মতো ১২ হাজার ৪৮টি কার্ডিওভাসকুলার ঘটনা ঘটেছে।