পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের স্থগিত ফাঁসিয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের নির্বাচন গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাপক গুলাগুলি, হামলা, ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া, ভাঙচুরের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ৬ পুলিশ সদস্য ছাড়াও দুই প্রার্থীর অন্তত ২৪ সমর্থক আহত হয়েছেন।
জানা যায়, গত ২৮ নভেম্বের অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দিন বারবাকিয়া ইউনিয়নের ওই কেন্দ্রে হামলা, ভাঙচুর, ব্যালট বক্স ছিনতাইয়ের অভিযোগে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছিল। বাকি ৮ ওয়ার্ডের ফলাফলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জিএম আবুল কাশেম স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা বদিউল আলমের (চশমা প্রতীক) চেয়ে ৩০৪ ভোটে এগিয়ে ছিলেন। গতকাল ওই কেন্দ্রের উপনির্বাচন শেষে মাওলানা বদিউল আলম ৪৭৪১ ভোট পেয়ে তৃতীয়বারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জিএম আবুল কাশেম পান ৪৫৮৭ ভোট।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, সকাল ৮টার দিকে ভোট শুরু হওয়ার পর ১ ঘণ্টা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সকাল ৯টার দিকে হঠাৎ করে কেন্দ্রে ব্যাপক গোলযোগ শুরু হয়। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ, পরে ১২১ রাউন্ড গুলি ও ২ রাউন্ড টিয়ারশেল ছোড়ে। অপরদিকে সন্ত্রাসীরাও কয়েকশ রাউন্ড গুলি ছোডে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে পেকুয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী দৈনিক আজাদীকে বলেন, কিছু উচ্ছৃক্সখল জনতা সংঘবদ্ধ হয়ে কেন্দ্রে গোলযোগ ও দখলের চেষ্টা করলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে পুলিশ আইন-শৃক্সখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে। সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ করে গুলি চালালে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে পুলিশের এসআই আশরাফুল হক, নাজমুল হোসেন, এএসআই রূপম, তৌহিদ, কনস্টেবল কাইয়ূম ও আনিছ আহত হন।
এদিকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা আনোয়ারুল আমিন কেন্দ্রেই ফলাফল ঘোষণা করেন। তিনি জানান, ওই কেন্দ্রে মোট ১৩৩৫ ভোটারের মধ্যে ৯৪৫ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছেন। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী চশমা প্রতীক নিয়ে এএইচএম বদিউল আলম পেয়েছেন ৬৭০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জিএম আবুল কাশেম পেয়েছেন ১৯৬ ভোট। সার্বিক ফলাফলে বদিউল আলম চশমা প্রতীকে ৪৭৪১ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জিএম আবুল কাশেম পেয়েছেন ৪৫৮৭ ভোট।
এর আগে বিকেল ৩টার দিকে ভোট চলাকালীন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল কাশেম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট বর্জন করেন। এসময় তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। একজন জামায়াত নেতাকে জিতিয়ে আনতে পুলিশ আমার লোকজনের উপর হামলা চালিয়েছে। প্রতিপক্ষ প্রার্থীর ভাড়াটিয়া শিবির ক্যাডাররা হামলা চালিয়ে তার বড় ছেলে আসিফ রায়হানের (২৪) হাতের কব্জি কেটে দিয়েছে। এছাড়া তার অপর ছেলে ইয়াসির আনাস (২০), আওয়ামী লীগ কর্মী আমির হোসেন (২৮), শাহাদাত হোসেন (২৮), পারভেজ (২০) সহ ১৪ জন আহত হয়েছেন।
জয়ী প্রার্থী এএইচ এম বদিউল আলম জিহাদী দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্রশাসন কঠোর হস্তে দমন না করলে সন্ত্রাসীরা যেভাবে তাণ্ডব শুরু করেছিল তাতে এ দফায়ও ভোট গ্রহণ হত কিনা সন্দেহ। তবে শেষ পর্যন্ত শত শত রাউন্ড গুলির মধ্যেও জনগণ তাদের রায় দিয়ে আমাকে বিজয়ী করেছেন।












