গত ১৯ আগস্ট পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পান বোয়ালখালী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত ফাতেমা চৌধুরী। দায়িত্ব গ্রহণ করার পরপরই ছুটিতে গেছেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব না দেয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে বোয়ালখালী পৌরসভার জনসাধারণ। কয়েকজন পৌর কাউন্সিলর অফিস করলেও বাকিরা অনুপস্থিত। কর্মকর্তা–কর্মচারীদেরও উপস্থিতি কম দেখা যাচ্ছে। ফলে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পৌরবাসী।
পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পেয়ে ১৯ আগস্ট পৌরসভার কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাত করেন পৌর প্রশাসক। ২০ আগস্ট থেকে তিনি অনুপস্থিত থাকায় পৌরসভার দাপ্তরিক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে আসে।
গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলে উত্তেজিত জনতা পৌর কার্যালয়ের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এসময় পৌর কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, কম্পিউটার, রাউটার এবং ইলেকট্রনিঙ সামগ্রী নষ্ট করে ফেলে দুর্বৃত্তরা।
এতে প্রায় ৫৫ লাখ ৫৩ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পৌর কার্যালয়ের হিসাব রক্ষক মো.মজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, প্রশাসক না থাকায় ট্রেড লাইসেন্স, জাতীয়তা সনদ, জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু নিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ, প্রত্যয়ন, নাগরিকত্ব সনদসহ বিভিন্ন সনদ তার স্বাক্ষর ছাড়া পৌরবাসীদের দেয়া যাচ্ছে না। কোনো কর্মকর্তা বা কাউন্সিলরের স্বাক্ষরে এইসব সনদ দেয়া যায় না। তবে আমরা বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় কয়েকজন ভুক্তভোগীদের সাথে। তারা বলেন, আমরা বেশ কয়েদিন ধরে আমাদের বিভিন্ন সনদের জন্য পৌরসভা কার্যালয়ে ঘুরছি। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক না থাকায় আমরা সনদ পাচ্ছি না। সময়মত না পেলে আমরা চরম বিপদে পড়ে যাবো। জানা গেছে, গত ১৯ আগস্ট পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পান সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত ফাতেমা চৌধুরী। এর পরদিন থেকে তিনি উপজেলা ভূমি অফিসে নিজ কর্মস্থলেও অনুপস্থিত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
কয়েকজন কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা জানান, আমরা এখনো হুমকির মধ্যে আছি। জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পৌরসভায় গেলে যে কোনো মুহূর্তে আমাদের ওপর হামলা হতে পারে। পৌর সচিব মো. নজরুল ইসলাম বলেন, পৌর প্রশাসকের নির্দেশনা এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসে স্বাক্ষর ছাড়া দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। পৌর কার্যালয়ে নিয়মিত কার্যক্রম ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত ফাতেমা চৌধুরীর মুঠো ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিমাদ্রী খীসা বলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত ফাতেমা চৌধুরী পৌর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি ছুটিতে আছেন। তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত কাউকে এখনো দায়িত্ব দেয়া হয় নাই।