দাম কম ও হয়রানির অভিযোগ কৃষকদের

রাঙ্গুনিয়ায় ধান সংগ্রহ

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২০ এপ্রিল, ২০২৩ at ৮:৩৪ পূর্বাহ্ণ

সংকটকালে খাদ্য ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে সরকার প্রতি বছর আমন মৌসুমে ধানচাল সংগ্রহ শুরু করে। তবে এ বছর সংগ্রহের কার্যক্রম একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে। রাঙ্গুনিয়ায় ন্যায্যমূল্যে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কিনতে ব্যর্থ হয়েছে খাদ্য বিভাগ। গেল আমন মৌসুমে রাঙ্গুনিয়ায় ৮৭ হাজার ৪৬৬.৫ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট সূত্রে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৭৯৫ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়।

কিন্তু কোনো ধান সংগ্রহ করতে পারেনি বলে জানান উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম। সূত্রে জানা যায়, ২০২২২৩ অর্থবছরে ধান চাল সংগ্রহ প্রকল্পের নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও কৃষকদের কাছ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। একদিকে সরকার নির্ধারিত ধানের কম দাম, অন্যদিকে নানা বিধিনিষেধ থাকায় চাষিরা ধান দিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। ফলে সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। কৃষকরা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি। এ ছাড়া গুদামে ধান সরবরাহ করতে নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। এ কারণে তারা গুদামে ধান দিতে আগ্রহ পান না।

সূত্রে জানা গেছে, কৃষকদের কাছ থেকে আমন সংগ্রহ কার্যক্রমের নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কোনো ধান সংগ্রহ করতে পারেনি। উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার কৃষকেরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান দিতে অপারগতা প্রকাশ করছেন। একাধিক কৃষক বলছেন, সরকার নির্ধারিত ২৮ টাকা কেজি দরে এক হাজার ১২০ টাকা করে প্রতি মণ ধান ক্রয়ের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ বাড়ি থেকে ব্যাপারিরা ধান কিনছেন প্রতি মণ এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা দরে। অনেক সময় ধানের আর্দ্রতা পরিমাপের জটিলতায় অনেক দূর থেকে বয়ে নিয়ে গিয়েও পুনরায় ধান নিয়ে ফিরিয়ে আনতে হচ্ছে কৃষকদের। যা এক প্রকারের হয়রানি ছাড়া আর কিছুই না। এছাড়া নামমাত্র ধান চাল সংগ্রহে উপজেলা কমিটি থাকলেও তৃণমূল পর্যায়ে তাদের কোনো প্রচারপ্রচারণা নেই। আবার অনেকেই জানেন না ধান দেয়ার নির্ধারিত সময়।

গুমাইবিলের কৃষক আবু তালেব বলেন, এবার আমন ধান সংগ্রহে সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে এই দরে আমাদের ধান খাদ্য গুদামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। ব্যাপারিরা বাড়ি থেকে এক হাজার ১০০ থেকে হাজার এক হাজর ২৫০ টাকা দরে ধান কিনেছেন। তাই আর কোনো কৃষক গুদামে নিয়ে ধান বিক্রিতে আগ্রহ দেখায়নি।

রাঙ্গুনিয়া পৌর এলাকার চাষি আব্দুল করিম বলেন, একে তো সরকার নির্ধারিত ধানের দাম কম আবার খাদ্য গুদামে ধান নিয়ে গেলে ধান ভেজা, চিটাসহ নানা প্রশ্ন করে হয়রানি করা হয়। আবার অনেক সময় ধান নিয়ে গিয়ে ফেরত আনতে হয়। যার জন্য খাদ্যগুদামে ধান দিতে আগ্রহ দেখান না কৃষকেরা। এছাড়া অনেক কৃষক ধান সংগ্রহের সময়ও জানেন না।

উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম বলেন, সরকারের ধানচাল ক্রয়ের উদ্দেশ্য হলো মজুত বৃদ্ধি করে এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্য পায় তা নিশ্চিত করা। তাই ধান কিনতে না পারলেও কৃষকরা দাম পাচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনাইক্ষ্যংছড়িতে এক হাজার প্যাকেট সিগারেটসহ গ্রেপ্তার ২
পরবর্তী নিবন্ধসেই তিমির মৃত্যুর কারণ আঘাত নাকি আত্মহত্যা