সন্তানকে বিয়ে দিলে সন্তানের প্রতি মায়ের অধিকার মা যদি না ছেড়ে দেয়। তাহলে মায়ের যেমন সম্মান নষ্ট হয় তেমনি সন্তানের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যায়। কেউ কেউ হয়ত পলাশের মত জীবন দিয়ে দেয়। নয়তো লাশ হয়ে বেঁচে থাকে। আমাদের দেশে আমরা মায়েরা বাচ্চা এডাল্ট হলে বাচ্চাকে এডাল্ট ভাবতে পারি না। বাচ্চাই ভাবি। ফলে অনেক ছেলে মেয়ে দায়িত্ব নিতে শিখতে শিখতে বুড়ো হয়ে যায় তবু দায়িত্ব নেয়া শিখে না। এমনও দেখা যায় অন্যের বা পরিবারের দায়িত্ব কী নিবে নিজের দায়িত্বই ঠিকঠাকমত নিতে পারে না। জীবনে শুরুর দিকে যেমন একজন মানুষের মা অপরিহার্য। মা ছাড়া বাঁচতে পারে না। ঠিক তেমনি তরুণ বয়সে একজন মানুষের একজন সঙ্গীর সাথে সময় কাটানো অপরিহার্য হয়ে পড়ে। অথচ আমাদের সমাজে গুরুজনেরা এই ব্যাপারটাকে ঠিকঠাকমত সন্তানের জীবনে ছেড়ে দিতে পারে না। তারা চায় সন্তান আমরা আমাদের পছন্দমত বিয়ে দিব। এবং আমাদের ইচ্ছেমত তারা সময় কাটাবে। আমাদের ইচ্ছেমত চলবে। না চললে ছোটোবেলার মত শাসন চলবে। শাসন করতে গিয়ে পুরো সংসারটা একটা অশান্তির আস্তানা হয়ে উঠে। তারা যেভাবে চাইবে সেভাবে চলতে হবে। আমাদের সমাজে ৯৫% সন্তানেরা এভাবে চলতে গিয়ে তাদের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো গুরুজনের ভয়ে গলা টিপে হত্যা করে। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক বলতে শুধু রাতের অন্ধকারে ১০ মিনিটের বাচ্চা পয়দার মেকানিক্যাল সম্পর্ক নয়। একটা মানুষের ভালো লাগা, ভালোবাসা, চাওয়া পাওয়া, এক সাথে গল্প করা, এক সাথে ঘুরতে যাওয়া এই বিষয়গুলো আমরা গার্ডিয়ানরা মানতেই পারি না। একটা মেয়ে স্বপ্ন দেখে বিয়ের পরে গুছিয়ে সংসার করবে। কিন্তু দেখা যায় বিয়ের পর গুছিয়ে সংসার করা একটা দু:স্বপ্ন হয়ে দাঁড়ায়। বেশিরভাগ শাশুড়ি এটা মানতেই পারে না। শাশুড়িদের কথা হচ্ছে বউ রান্না করবে, সবাইকে সেবা করবে এতটুকুই। এর বাইরে বউয়ের আর কোনো অধিকার থাকতে পারে না, আর কোনো শখ থাকতে পারে না। ব্যাস এই চক্করে পড়ে এ দেশের অধিকাংশ মেয়েরা তাদের জীবনের সুন্দরতম সময়টুকু ঐ রান্না ঘর, বাচ্চা সামলানো, শ্বশুরবাড়ির লোকেদের সেবায় শেষ করে দেয়। অথচ চুলের গোড়ায় পাক ধরলে একটা মানুষের রোমান্টিকতা করাটা আর শুরুর দিকের মতো উৎপল্ল হয় না। বয়সের ভারিক্কিতে নিজের মনের মত করে সংসার গুছানোর ইচ্ছেটা আর থাকে না।
অথচ মায়েরা ইচ্ছে করলে, সামান্য অধিকারটুকু ছেড়ে, সংসারের দায়িত্বটুকু ছেড়ে সন্তানদের জীবন সুখে ভরিয়ে দিতে পারে। নিজেরাও সম্মান নিয়ে বাঁচতে পারে। ১৮ বছর বয়সের পর সন্তানকে শেখান সে বড় হয়েছে। ২০/২২ বছর পর দায়িত্ব নিতে শেখান। লুতুপুতু করা ছেড়ে দিন। বিয়ের পর তাকে নিজের আয়ত্বের বাইরে ছেড়ে দিয়ে একটা স্বাধীন জীবন দিন। প্রকৃতির নিয়ম মেনে নিন।
অধিকার একটা সময় ছেড়ে দিতে হয়, কারণ তখন তাদের একে অন্যের প্রতি অধিকারটাই মূখ্য হয়ে দাঁড়ায়। আর সেটার মর্যাদা দেয়াই তখন মা বাবার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়। এটাই প্রকৃতির নিয়ম।