ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত ঘোষণার পর দাফন করার আগে নড়েচড়ে উঠে জীবনের জানান দিল এক নবজাতক। গতকাল শুক্রবার সকালে কবরস্থান থেকে শিশুটিকে আবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, নবজাতকটি ছিল ‘অপরিণত’, তাই শুরুতে ‘রেসপন্স’ ছিল না। এখন তারা শিশুটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। জীবন সঙ্কটে থাকা মেয়েটি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মালেঙ্গা গ্রামের ইয়াসিন মোল্লা ও শাহিনুর বেগমের দ্বিতীয় সন্তান। খবর বিডিনিউজের।
শিশুটির বাবা ইয়াসিন বলেন, গত বুধবার তাঁর স্ত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি করান। চিকিৎসকেরা জানান, শাহিনুরের উচ্চ রক্তচাপ আছে, সন্তান জন্ম না নেয়া পর্যন্ত কমবে না। বুধবার রাতেই তাকে লেবার রুমে নিয়ে স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসবের চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু প্রসব না হওয়ায় তাঁকে ১১০ নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়। এরপর আজ (গতকাল শুক্রবার) ভোরে শিশুটির জন্ম হয়। তিনি বলেন, চিকিৎসকেরা তার বাচ্চাকে মৃত ঘোষণার পর আজিমপুর কবরস্থানে দাফনের জন্য নিয়ে যান। সেখানে কবর দিতে ১ হাজার ৫০০ টাকা লাগে। সেই টাকা না থাকায় কবরস্থানের লোকজনের পরামর্শেই রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নিয়ে যান। সেখানে ৫০০ টাকা ফি দেয়ার পর নবজাতকটির জন্য কবর খোঁড়া শুরু হয়। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ যেই প্যাকেটে করে হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে মুড়িয়ে দেয়া হয়েছে সেটি নড়তে থাকে এবং তার কান্নার শব্দ শুনতে পাই।’ ইয়াসিন প্যাকেটটি খুলে দেখেন, শিশুটি জীবিত। সন্তানকে তিনি আবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে মৃত ঘোষণা করে যে সনদটি দেয়া হয়েছিল সেটি চিকিৎসকেরা নিয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘অপরিণত হওয়ায় শুরুতে বাচ্চাটার রেসপন্স পাওয়া যাচ্ছিল না। সে কারণে চিকিৎসক ধরে নিয়েছিলেন তার প্রাণ নেই। এখন আমরা নবজাতকটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি।’
এর আগে ২০১৫ সালেও ঢাকা মেডিকেলে মৃত ঘোষণার পর দাফনের আগে এক নবজাতকের নড়ে ওঠার ঘটনা আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। সেই শিশুটিকে পরে হাসপাতালে ফিরিয়ে এনে চিকিৎসা দিয়েও বাঁচানো যায়নি।