দলীয় মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগের ৯ প্রার্থীর লবিং

চন্দনাইশ পৌরসভা

চন্দনাইশ প্রতিনিধি | রবিবার , ১১ অক্টোবর, ২০২০ at ৪:৫৫ পূর্বাহ্ণ

নভেম্বরের শেষ দিকে শুরু হচ্ছে চন্দনাইশ পৌরসভা নির্বাচনের কাউন্টডাউন। সে হিসেবে ডিসেম্বরের প্রথম দিকে পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চন্দনাইশ নির্বাচন অফিসার মিনহাজুল ইসলাম। এদিকে নির্বাচন কমিশনের এমন ঘোষণায় পৌর এলাকায় শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। কে হতে যাচ্ছেন নতুন পৌর মেয়র? আসন্ন পৌর নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগের ৯ জন প্রার্থী কেন্দ্রীয় পর্যায়ে লবিং শুরু করেছেন। এর মধ্যে অনেকে রঙ-বেরঙের পোস্টার ও ডিজিটাল ব্যানার সাঁটিয়ে জানান দিচ্ছেন নিজেদের অবস্থান। কেউ কেউ শুরু করেছেন বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগদান। ভোটারদের সাথে কুশলাদিও বিনিময় করছেন তারা। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষার ব্যাপার তো আছেই। প্রচারণা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও।
জানা গেছে, চন্দনাইশ পৌরসভার বর্তমান মেয়র দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম খোকা এবারও দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। এছাড়াও পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কায়সার উদ্দীন চৌধুরী, গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি শেখ টিপু চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাশেম বাবলু, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ-সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম রহমানী, মক্কা আওয়ামী ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো. মোজাম্মেল হক, মদিনা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন রফিকুল ইসলাম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শাহাদাৎ নবী খোকা দলীয় মনোনয়ন পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান মেয়র মাহাবুবুল আলম খোকা বলেন, ২০০২ সালে চন্দনাইশ পৌরসভা গঠনের পর থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত যতটুকু উন্নয়ন হয়েছে-বিগত ৫ বছরে তারচেয়ে ৪ গুণ বেশি উন্নয়ন হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৫ কোটি টাকায় ২৪টি রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার, ২৮ কোটি টাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট সংস্কার, নালা নির্মাণ ও বিভিন্ন পুকুরে রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণ। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বর্তমানে ১২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়াটার টিট্রমেন্ট প্লান্ট নির্মাণের প্রক্রিয়া চলমান। চন্দনাইশকে বিশ্বব্যাংকের নগর উন্নয়ন প্রকল্পে (এমজিএসপি) অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, রাস্তা সমপ্রসারণ, সড়কবাতি স্থাপন, ফুটপাত নির্মাণ, আধুনিক ড্রেনেজ সিস্টেম চালুসহ আগামী ৫ বছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকার উন্নয়ন হবে পৌরসভায়। দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিজয়ী হলে তিনি একটি আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন পৌরসভা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশী কায়সার উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ৪৩ বছর ধরে চন্দনাইশ আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অনেক জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছি। তবুও আন্দোলন-সংগ্রামে সম্মুখ সারিতে ছিলাম। দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
মনোনয়ন প্রত্যাশী শেখ টিপু চৌধুরী বলেন, ২০১১ সালে মহাজোট সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে চন্দনাইশ পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। এবার দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত পৌরসভা গড়ে তুলবো। একইসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের মতামতের ভিত্তিতে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মনোনয়ন প্রত্যাশী মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে ছাত্রলীগের মাধ্যমে আমার রাজনৈতিক জীবনের শুরু। এখনো আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে যাচ্ছি। আসন্ন পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেলে শতভাগ বিজয়ের প্রত্যাশা রাখছি। চন্দনাইশ পৌরসভাকে দুর্নীতি ও স্বজনমুক্তমুক্ত রাখতে চাই।
মনোনয়ন প্রত্যাশী আবুল কাশেম বাবলু বলেন, ১৯৮৭ সালে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত হয়ে আমার রাজনৈতিক জীবনের শুরু। দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিজয়ী হলে চন্দনাইশ পৌরসভাকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও মাদকমুক্ত রাখতে চাই। এছাড়াও একটি বেসিক শিল্প নগরী গড়ে তুলে এলাকার বেকার সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
মনোনয়ন প্রত্যাশী তৌহিদুল ইসলাম রহমানী বলেন, আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা মরহুম সিরাজুল ইসলাম রহমানী চন্দনাইশ আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। সে হিসেবে আওয়ামী পরিবারে আমার জন্ম। দলের বিভিন্ন পদে থেকে মানুষের জন্য কাজ করছি। দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে চন্দনাইশ পৌরসভার অনাবাদি জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনা, সরকারের গৃহীত উন্নয়ন প্রান্তিক জনপদে পৌঁছে দেয়া, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠাসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করবো।
মনোনয়ন প্রত্যাশী মো. মোজাম্মেল হক বলেন, একজন রাজনৈতিক ব্যক্তির মূল চাওয়া হলো, নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়ে জনগণের সেবা করা। দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিজয়ী হলে পৌরবাসীর সেবা করে যাবো। একইকথা মনোনয়ন প্রত্যাশী লায়ন রফিকুল ইসলামেরও। তিনি বলেন, দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে পৌরবাসীকে একটি মডেল পৌরসভা উপহার দেয়াই হবে আমার মূল লক্ষ্য।
মনোনয়ন প্রত্যাশী শাহাদাৎ নবী খোকা বলেন, সবার ইচ্ছে থাকে জনগণের সেবক হওয়ার। সে প্রত্যাশা থেকে এবার দলীয় মনোনয়ন চাইছি। দল যদি যোগ্য মনে করে আমাকে মনোনয়ন দেয়, আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। আশাকরি মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে তৃণমূলের জয় হবে। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একটাই দাবি, অনুপ্রবেশকারীরা যাতে দলীয় মনোনয়ন না পায়।
সবমিলিয়ে একাধিক প্রার্থীর ভিড়ে নৌকা প্রতীক কার হাতে উঠছে-তা দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে রয়েছেন পৌরসভার ভোটাররা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকেরানীহাটে ১৩ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ১
পরবর্তী নিবন্ধদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে সাড়ে ৫ হাজার