সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিষয়ে গণভোট করার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোকে কে দিয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, পিআরের জন্য আমাকে গণভোটে যেতে হবে কেন? আমাদের তো প্রত্যেক দলের অনেকগুলো ইস্যু আছে, যেগুলো নিয়ে ঐকমত্য হয় নাই। তাহলে ওই যদি গণভোটের প্রক্রিয়া আপনি যেতে চান আগামী দুই বছর যাবত আপনাকে গণভোটই করতে হবে। প্রথম কথা হলো, এই দায়িত্ব আমাদেরকে কে দিয়েছে? আমাদেরকে জনগণ গণভোট করা দায়িত্ব দেয় নাই। খবর বিডিনিউজের।
আমীর খসরু বলছেন, বাংলাদেশে অন্তবর্তী সরকার গঠিত হয়েছে কিসের ভিত্তিতে? সংবিধানের ভিত্তিতে হয়েছে। বর্তমান সংবিধানের ভিত্তিতেই সরকার চলছে। সুতরাং আমাদের গণতান্ত্রিক অর্ডারকে যদি ফিরিয়ে আনতে হয় এবং পরবর্তী সময়ে পরিবর্তন করতে হয়, প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে, আমাদের বর্তমান সংবিধানের আওতায় নির্বাচন করে গণতান্ত্রিক অর্ডারে আমাকে আসতে হবে আগে। আপনি ডেমোক্রেটিক অর্ডারে আসার পরে পাবলিক ডিসকাস বলেন, পার্লামেন্টারি ডিবেট বলেন, পার্লামেন্টের ভেতরে–বাইরে বহু আলোচনার একটা গণতান্ত্রিক দেশে ফেরত যাবেন। এখন তো আপনি গণতান্ত্রিক অর্ডারের মধ্যে নাই। ১৪ মাস ধরে একটা সরকার আছে, যে সরকার জনগণের নির্বাচিত কোনো সরকার না। তাই আগে আমার একটি নির্বাচিত সরকার, নির্বাচিত সংসদ গঠন করতে হবে, তারপর প্রত্যেকটি দলে অধিকার আছে তাদের বিষয়গুলো নিয়ে জনমত সৃষ্টি করার, জনগণের কাছে যাওয়ার।
গতকাল শনিবার ঢাকার মৌচাকে কসমস সেন্টারে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, পিআর পদ্ধতি দলীয় কিছু আসন বৃদ্ধি ছাড়া জনগণের জন্য কোনো সুবিধা নেই। তিনি বলেন, আমি কেন পিয়ার চাচ্ছি? একটু যদি আমরা খোলাখুলি যদি বলি, পিআরটা চাচ্ছি এ কারণে যে, আমি পার্লামেন্টে কিছু বেশি সিট (আসন) পাব, এর বাইরে কিছু নাই। এখন আমি পার্লামেন্টে অধিকতর ক্ষমতাবান হবো, অধিক সিট পাব, সেই কারণে মানুষের মৌলিক যে দাবি সেটাকে আমি অগ্রাহ্য করব, এটা তো গণতন্ত্রের ভাষা নয়। কাজেই সেই দিক থেকে এটা সেলফ কনট্রাডিক্টরি।
আবদুল মঈন খান বলেন, দেখুন, পিআর করার অর্থটা কি? পিআর হচ্ছে আপনি ব্যক্তির যে অবস্থান, সেটাকে দুর্বল করে দলের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে দিচ্ছেন। রাজনৈতিক ইতিহাসে আমরা বিগত ৫৪ বছরে দেখেছি, যখনই দল বেশি শক্তিশালী হয়ে গেছে, তখনই কিন্তু জনগণের জন্য দুর্যোগ নেমে এসেছে।
আমীর খসরু বলেন, মান্না ভাই (মাহমুদুর রহমান মান্না) বললেন, জনগণ কিছুই জানে না পিআর সম্বন্ধে। যারা পিআরের পক্ষে, তাদের দায়িত্ব হবে, নির্বাচনি ইশতেহারে এনে তা জনগণের কাছে নিয়ে জনগণের ম্যান্ডেট নেওয়া। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে যতটুকু ঐকমত্য হবে, আমরা ততটুকু নিয়ে এগোব। এবার যেসব ঐকমত্য হয়েছে, সেটারও তো ম্যান্ডেট লাগবে। দেশের জনগণ আমাদের ২০ থেকে ৩০টা রাজনৈতিক দলকে কোনো দায়িত্ব তো দেয় নাই যে আপনারা বসে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ঠিক করবেন। হু আর ইউ?