দর কষাকষি করে লাভ নেই নির্বাচনে আসুন : কাদের

| বুধবার , ১১ মে, ২০২২ at ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে দর কষাকষি করে লাভ হবে না জানিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল মঙ্গলবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথসভায় তিনি বলেন, বিএনপিকে বলব এদিক সেদিক না ঘুরে, দরকষাকষি না করে নির্বাচনে আসুন। আমরা অনুরোধ করছি নির্বাচনে আসুন। খবর বিডিনিউজের।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। নির্বাচনে তখন সরকারের কোনো কর্তৃত্ব থাকবে না। কর্তৃত্ব থাকবে সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সরকারের নির্দেশনায় তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও চলবে না। তারাও নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে।

ইভিএম পরের ব্যাপার, আগে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন, বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন রাখেন, ইভিএম পরের ব্যাপার কেন?

আপত্তি কোথায়? বহু দেশে ইভিএম ব্যবহারের উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা নির্বাচনে কারচুপি করতে চান। কারচুপি জালিয়াতি এড়ানোর জন্য এই ইভিএম ব্যবস্থার চেয়ে আধুনিক কোনো পদ্ধতি নেই নির্বাচনে কারচুপি-জালিয়াতি ঠেকানোর জন্য। এতে আপনাদের আপত্তি থাকবে কেন? সরকারের পদত্যাগ করতে হবে কেন? আমরা কি অন্যায় করেছি।

কাদের বলেন, এই ধরনের কথা দেশের মানুষ ১৩ বছর যাবৎ শুনছে। গত নির্বাচনের সময়েও বিএনপি ও তাদের জোটের হাকডাক শুনছে। কিন্তু পানি ঘোলা করে অবশেষে তারা ডায়ালগেও এসেছে এবং নির্বাচনেও অংশ নিয়েছেন। এবারও সেই একই কথা নতুন করে বলছে। বিএনপি নেতারা ভালো করেই জানে দলের অস্তিত্ব রক্ষায় তাদের নির্বাচনে আসতেই হবে। তাদের কোনো বিকল্প নেই। তাই বিএনপিকে বলব, দর কষাকষি করে লাভ নেই। সরকার দর কষাকষিতে সংবিধান থেকে নড়বে না। যেভাবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে নির্বাচন হয়, সেভাবেই সরকার নির্বাচনের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবে।

বিএনপি দর কষাকষির জন্য নিরপেক্ষ সরকারের কথা বলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জনগণকে আস্থায় নিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন। নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতা পরিবর্তনের আর কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচনে যদি জনগণ আপনাদের ভোট দেয়, নির্বাচিত করে, আমরা যদি হেরেও যাই, তারপরেও আমরা নির্বাচন কমিশনের এই নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে। সবসময় আমাদের রীতি-নীতি অনুযায়ী আমরা এটা করে যাব। জনগণকে আস্থায় নিয়ে সরকার সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে এবং জনগণের ইচ্ছায় ক্ষমতার পরিবর্তন হবে জানিয়ে তিনি বিএনপিকে আবারও দর কষাকষি না করে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানান।

আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনে ইভিএম চায়, কিন্তু নির্বাচন কমিশন বলেছে, সর্বোচ্চ ১৩০ আসনে তাদের ইভিএমে ভোট করার সক্ষমতা আছে-এ বিষয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি বলেন, আমরা চাই নির্বাচন কমিশন তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী করুক। সেটা যদি না পারে সেটা ভিন্ন কথা। আমরা আওয়ামী লীগ দলগতভাবে আমরা চাই।

এসময় কুমিল্লার চান্দিনায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদের গাড়িতে হামলার ঘটনা নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, এই হামলার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। শেখ হাসিনার আমলে কোনো ধরনের অপকর্ম এই ধরনের কোনো অনিয়মের ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হয়নি। এখানেও কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এই ঘটনা নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে সরকারের অন্ধ সমালোচনা ও বিষোদগার করছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসরকারের পরিণতি শ্রীলঙ্কার চেয়েও খারাপ হবে : ফখরুল
পরবর্তী নিবন্ধআওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ