সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ১৫ দিন ধরে পাঠদান চলছিল রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা ইউনুছিয়া আজিজুল উলুম কওমি মাদরাসায়। খবর পেয়ে গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে অভিযান চালিয়ে মাদরাসাটি বন্ধ করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমান। অভিযোগ রয়েছে, মাদরাসাটির শিক্ষা ভবনের কয়েকটি কক্ষে শিক্ষার্থীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দরজা বন্ধ করে পাঠদান করাচ্ছিলেন শিক্ষকরা। পাঠদানের ঘটনা জানাজানি হবার ভয়ে শিক্ষার্থীদের কক্ষের বাইরেও যেতে দিচ্ছিল না মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী এ বিষয়ে ইউএনওর কাছে মোবাইলে অভিযোগ করলে অভিযান পরিচালনা করেন তিনি। এ সময় শতাধিক শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এসব শিক্ষার্থীদের সবার বাড়ি দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদরাসার এক শিক্ষার্থী ইউএনওকে জানান, তার বাড়ি মহেশখালী উপজেলায়। এক সপ্তাহ আগে তাকে ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসেন মাদরাসার শিক্ষক। এরপর বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে একই রুমে ক্লাস করা, খাওয়া-দাওয়াসহ ঘুমাতে হচ্ছিল তাদের।
জানা গেছে, মাদরাসাটির একটি কক্ষে ৫০-৬০ জন শিক্ষার্থীকে ক্লাস করতে বাধ্য করা হচ্ছিল। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পড়ানো হয় তাদের। অনেকে জ্বরসহ নানা রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের নিয়মিত গোসলও করতে দেওয়া হচ্ছিল না। সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও গোসল করতে না পারায় শিক্ষার্থীদের চুলকানিসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। চাপের কারণে তারা কাউকে কিছু বলতেও পারছিল না। এমনকি মাদরাসা সংলগ্ন মসজিদে গিয়েও নামাজ আদায় করতে পারেনি তারা।
এ বিষয়ে জানতে মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম মাওলানা নেজামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে অভিযানকালে দায়িত্বরত মো. আবদুল্লাহ নামে এক শিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় ভর্তি হতে এসেছে। পরে চলে যাবে আবার। অপরদিকে শিক্ষার্থীরাই ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেছেন উল্লেখ করলে তিনি নীরব থাকেন।
ইউএনও মো. মাসুদুর রহমান বলেন, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে মাদরাসা খোলা রেখে ইচ্ছের বিরুদ্ধে ক্লাস নেয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যখন খুলবে তখন মাদরাসা খুলতে বলা হয়েছে।