রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের আবুল বশর চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে যাতায়তের একটি সড়ক দীর্ঘ দেড় বছর দখল থাকার পর অবশেষে উদ্ধার হয়েছে। ২০২৩ সালে এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটির অন্তত ৫০০ ফুট অংশ দখল করে নেয়ায় চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের দশ মিনিটের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিকল্প সড়ক দিয়ে এক ঘণ্টা ঘুরে স্কুলে যাতায়ত করতে হচ্ছিল। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত স্বেচ্ছায় কাজ করে সড়কটি উদ্ধার করেন স্কুলের কয়েকশ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আলহাজ্ব আবুল বশর চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় সড়কটি আটফুট প্রশস্ত। সড়কে সরকারিভাবে স্থাপন করা দুটি কালভার্ট এই সড়কের প্রবেশমুখে এবং শেষ প্রান্তে। ২০১৫ সালে স্কুলের উদ্যোগে সড়কটিতে বৃক্ষরোপণও করা হয়েছিলো। এ সড়ক দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি ডিঙ্গেললোঙ্গা, অ্যান্দরঘোনা, বানিয়াখোলা ও আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকা থেকে শত শত শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে।
কিন্তু ২০২৩ সালে স্থানীয় একজন ব্যক্তি আট ফুট সড়কের পাঁচফুট কেটে প্রায় ৫০০ ফুট অংশ দখল করে নেয়। এই বিষয়ে স্কুল কতৃপক্ষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দিলেও সড়কটি উদ্ধার হয়নি। এতে সড়ক দিয়ে স্থানীয় ও শিক্ষার্থীদের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চার গ্রামের কয়েকশ শিক্ষার্থীকে ১০ মিনিটের পথ আশেপাশের সড়ক দিয়ে এক ঘণ্টা পায়ে হেটে আসা–যাওয়া করতে হচ্ছিলো। অবশেষে সড়কটি উদ্ধার হওয়ায় দীর্ঘদিনের এই দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, একেবারে বিধ্বস্ত সড়কটি স্কুল শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করছেন। কেটে নিশ্চিহ্ন করা সড়কটি মাটি দিয়ে চলাচলের উপযোগী করছে তারা। আশেপাশের উপস্থিত জনতা তাদের এই কাজে সাধুবাদ জানায়।
এ সময় উপস্থিত স্থানীয় রাজনীতিবিদ অধ্যাপক মো. আজম খান বলেন, সড়কটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি দখল হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা খুবই দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছিল। অবশেষে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে এটি দখলমুক্ত করেছে শিক্ষার্থীরা। এতে এলাকার মানুষ সহায়তা করেছেন। খুবই ভালো এবং প্রশংসনীয় এই উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রবীর কান্তি নাথ বলেন, সড়কটিতে আমরা বৃক্ষরোপণসহ নানা কর্মসূচি করেছি। এটিতে দুটি সরকারি কালভার্ট রয়েছে। এরপরও দীর্ঘদিনের পুরাতন সড়কটি দখল হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এটি উদ্ধারে স্কুলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে দীর্ঘদিন পর হলেও সড়কটি দখলমুক্ত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।
কথা হয় স্বেচ্ছায় কাজ করা শিক্ষার্থী নওশীন ইসলাম তানিশা, হাবিবা সুলতানা মাহিয়ার সাথে। তারা সকলেই বলছেন, সড়কটি দিয়ে তারা দীর্ঘ বছর চলাচল করছেন। এটি দখল হয়ে যাওয়ার পরও উদ্ধার হয়নি। এতে ১০ মিনিটের পথ কয়েক কিলোমিটার ঘুরে স্কুলে আসতে হচ্ছে তাদের। তাই সড়কটি স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করে দখলমুক্ত করে সংস্কার করা হয়েছে।
রমিজা খাতুন ও আবদুল কাদের নামে স্থানীয় দুজন বলেন, একজন মানুষের কারণে স্কুলের সব শিক্ষার্থীরা কষ্ট পাচ্ছিলো। আমাদেরও চলাচলে চরম বেগ পেতে হচ্ছিলো। অবশেষে সড়কটি দখলমুক্ত হয়ে সংস্কার হওয়ায় দীর্ঘদিনের ভোগান্তি দূর হয়েছে। তবে সড়কটি সরকারি বরাদ্দ দিয়ে পানি চলাচলের ড্রেনসহ স্থায়ীভাবে সংস্কার করা জরুরি।