রোড মার্চের প্রস্ততি সভা চলাকালে নগরে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র দুই গ্রুপে দফায় দফায় সংর্ঘষ হয়েছে। এতে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খান ও দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন রবিসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল বিকেলে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে জড়িতরা মোস্তাক আহমেদ খান ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হকের অনুসারি। পরে এতে উত্তর জেলা ছাত্রদলের একাংশও জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালে নাসিমন ভবনের তৃতীয় তলায় আগামী ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় রোড মার্চ সফল করতে বিভাগীয় প্রস্তুতি সভা চলছিল। আহত রবি ও মোস্তাককে বেসরকারি দুটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোয়া ৩টার দিকে সভা শুরু হয়। এতে মহানগর ও জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া অন্যরা আমন্ত্রিত ছিলেন না। শুরুর দিকে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সদস্য ও সাবেক সাংসদ গাজী শাহজাহান জুয়েল সভায় যোগ দিতে আসেন। দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশের সময় তাকে দেখে এনামুল হক এনামের অনুসারিরা উস্কানিমূলক বিভিন্ন স্লোগান দেয়। কিছুক্ষণ পর মোস্তাক আহমেদ খান ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীর হেলাল আসেন। মীর হেলাল সভাস্থলে পৌঁছে গেলেও মোস্তাক আহমেদ খানের উপর হামলা করে এনামের অনুসারিরা। এসময় তার জামা–কাপড় ছিঁড়ে দেয় তারা। তাকে উদ্ধার করে সভাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়।
সভাস্থলে উপস্থিত বিএনপি’র এক নেতা বলেন, আমরা সবাই উপরে মিটিং এ ব্যস্ত। ৪ টার দিকে দেখি মোস্তাক খানকে ৪/৫ জনে ধরাধরি করে নিয়ে আসে। তখন ওনার গায়ি শার্ট ছিল না। মুখ ফোলা, প্যান্টও ছেঁড়া।
এদিকে মোস্তাক খানের উপর হামলার পর তার অনুসারিরা ধাওয়া দেয় এনামুল হকের অনুসারিদের। এসময় দুই পক্ষে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। আহত হন স্বেচ্ছাসেবক দলের তৌহিদুল ইসলাম মিঠু ও উত্তর জেলা ছাত্রদলের তকিবুল ইসলামসহ কয়েকজন। এসময় নগর বিএনপি’র সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করকে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে।
এদিকে সভা শেষে ফেরার পথে হামলা করা হয় দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন রবির উপর। এসময় তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। উত্তর জেলা ছাত্রদলের তকিবুল ইসলাম আহত হওয়ায় মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন উত্তরের একাংশও। এক পর্যায়ে নগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী সিরাজ এসে রবিকে উদ্ধার করে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে যান।
হামলার শিকার দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সদস্য মোস্তাক আহমেদ খান আজাদীকে বলেন, আমার উপর হামলার নেপথ্যে আছেন এনামুল হক (দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক)। তার নির্দেশে খোরশেদ আলম, মাঈনুল আলম ছোটন ও তৌহিদের নির্দেশে বহিরাগতরা হামলা করেছে। সেখানে সদ্য ঘোষিত ছাত্রদলের পকেট কমিটির এনামের অনুসারিরাও ছিল। নন্দনকানের কয়েকজন চিহ্নিত সন্ত্রাসীও ছিল যারা বহিরাগত। আমি মিটিংয়ে আসব তাই আগে থেকেই তারা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল।
এনামুল হক এনাম দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া মাঈনুল আলম ছোটনের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক সুফিয়ান আজাদীকে বলেন, সরকার পতনের আন্দোলনের এ মুহূর্তে এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। কার দায় কতটুকু তা তদন্ত করে কেন্দ্রে রির্পোট জমা দিব।