দক্ষিণ কোরিয়াতে ২০২২ সালের ন্যূনতম বেতন প্রায় ৫ দশমিক এক শতাংশ বেশি, প্রতি ঘণ্টায় ৯,১৬০ ওন(৯৯ মার্কিন ডলার) নির্ধারণ করা হয়েছে।
আর নতুন বর্ধিত বেতন হিসাবে প্রতিদিন বেসিক আট ঘণ্টায় ৭৩,২৮০ ওন, ওভারটাইম প্রতি ঘণ্টায় ১৩,৭৪০ ওন, নাইট অ্যালাউন্স ৪৫৮০ ওন(রাত দশটা থেকে সকাল ছয়টা), সাপ্তাহিক ৪০ ঘণ্টায় ৩,৬৬,৪০০ ওন এবং মাসিক ২০৯ ঘণ্টায় ১৯ লাখ ১৪ হাজার ৪ শত ৪০ ওন বেতন আসবে।
নতুন বেতন স্কেল অনুযায়ী একজন ইপিএস কর্মীর ২০২২ সালে ন্যূনতম মাসিক বেতন প্রায় এক লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা হবে।
শ্রম, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ জনগণের প্রত্যেকটি থেকে ৯ জন সদস্য করে মোট ২৭ জন প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত ত্রিপক্ষীয় একটি জাতীয় কমিশন ন্যূনতম বেতন স্কেল নির্ধারণকারী সংস্থা মজুরি কমিশন গত মঙ্গলবার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
শ্রম ও ব্যাবসায়িক প্রতিনিধিরা একীভূত প্রস্তাব নিয়ে ব্যর্থ হওয়ায় সাধারণ জনগণের প্রতিনিধিরা পাঁচ দশমিক এক শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছিলেন।
সরকারি কমপ্লেক্স সেজং অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন চলাকালীন প্রস্তাবিত বেতন স্কেল বৃদ্ধির প্রতিবাদে ব্যবসায়ী খাত থেকে ৯ জন সদস্য এবং শ্রম ও ইউনিয়ন থেকে চারজন সদস্য ভোট বয়কট করে।
অবশিষ্ট ১৪ জন সদস্য ভোটে অংশ নিয়েছিলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বেতন স্কেল বৃদ্ধি কমিশনের প্রধান পার্ক জুন-সিক।
চলতি বছরের ঘণ্টাপ্রতি বেতন ৮,৭২০ ওন থেকে বর্ধিত হয়ে প্রায় ৪৩ লাখ ৬০ হাজার শ্রমিকের দেশে আগামী ৫ আগস্ট এর মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে বেতন স্কেল ঘোষণা করলেই নতুন বেতন স্কেল আগামী বছর জানুয়ারির এক তারিখ কার্যকর হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি মুন জে ইন-এর ঘোষণা ছিল তাঁর সময়কালে দেশের ন্যূনতম বেতন স্কেল সর্বোচ্চ বৃদ্ধি করা।
তারই ধারাবাহিকতায় মুন প্রশাসনের সময় গত পাঁচ বছরে কোরিয়ায় ন্যূনতম বেতন স্কেল অত্যধিক বৃদ্ধি পেয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় ন্যূনতম বেতনের স্কেল বৃদ্ধি পেয়েছে ২০১৮ সালে ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ, ২০১৯ সালে ১০ দশমিক ৯ শতাংশ, ২০২০ সালে ২ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ২০২১ সালে সর্বনিম্ন ১.৫ শতাংশ।
গত পাঁচ বছরে দক্ষিণ কোরিয়ার সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ১১ দশমিক ৯ শতাংশ ,ভোক্তার মূল্য এবং নিয়োগপ্রাপ্তদের সংখ্যা যথাক্রমে ৬.৩ শতাংশ এবং ২.৬ শতাংশ বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়।
কোরিয়া ব্যবসায়ীদের ফেডারেশন বলেছে, নতুন ন্যূনতম বেতনের স্কেল যদি চূড়ান্ত করা হয় তবে বেশিরভাগ ছোট সংস্থা ও ব্যবসায়ীরা মহামারীকালীন সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে না এবং ক্রমবর্ধমান ব্যয়ভার বহন করতে পারবে না।
এদিকে, বেতন স্কেল বৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রতিবাদে কোরিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (কেসিসিআই) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার ট্রেড ইউনিয়নের সিনিয়র কর্মকর্তা পার্ক হি ইয়ুন বলেছেন, “করোনা মহামারীর কারণে দেশে যে অসম্পূর্ণতা ও মেরুকরণের অবনতি ঘটে ছিল তা দূরীকরণে ন্যূনতম বেতন স্কেল বৃদ্ধির বিষয়টি অনিবার্য ছিল।”