দক্ষিণ আফ্রিকা নারী দলের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। প্রায় ১১ বছর পর প্রোটিয়া নারীদের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে জয় পেল বাংলাদেশের মেয়েরা। আর এই সংস্করণে ১২ মোকাবেলায় দ্বিতীয় জয় নারীদের। প্রথম জয়টি পেয়েছিল বাংলাদেশ দল সেই ২০১২ সালে ঢাকার মিরপুরে ৭ উইকেটে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে এবারই প্রথম জয় পেল। তাই নারীদের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিনোনিতে অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি–টোয়েন্টি বাংলাদেশ দল ১৩ রানে হারিয়েছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকাকে। মুরশিদা খানমের দুর্দান্ত ব্যাটিং আর স্বর্ণা আকতারের আগুন ঝরানো বোলিং বাংলাদেশ নারী দলকে পাইয়ে দেয় এই জয়। আর এই জয়ের ফলে তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলার নারীরা। নিজেদের মাঠে পাকিস্তান নারী দলের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। আর সেখানে প্রথম ম্যাচেই করল বাজিমাত।
টসে জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ নারী দল বেশ ভাল শুরু পেয়েছিল শামীমা সুলতানা এবং মুরশিদা খানমের জুটিতে। উদ্বোধনী জুটিতে এ দুজন যোগ করেন ৪৪ রান। ২৪ বলে ২৪ রান করে ফিরেন শামীমা। এরপর সোবহানা মুশতারিকে নিয়ে ৩৯ রান যোগ করেন মুরশিদা। ১৭ বলে ১৬ রান করে ফিরেন সোবহানা। এরপর অধিনায়ক নিগার সোলতানাকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান মুরশিদা। দুজন মিলে ৪২ বলে ৬৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলের ইনিংসকে পৌঁছে দেন ১৪৯ রানে। ৫৯ বলে ৬টি চার এবং একটি ছক্কার সাহায্যে ৬২ রান করে অপরাজিত থাকেন মুরশিদা। আর অধিনায়ক নিগার সোলতানা অপরাজিত থাকেন ২১ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৩৪ রান করে। বাংলাদেশের মাত্র দুটি উইকেট ফেলতে পেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা।
১৫০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে স্বাগতিক দলের দুই ওপেনার তাজমিন ব্রিস্ট এবং আন্নেকে ভোচ মিলে ৬৯ রান তুলে নেন। এজুটি ভাঙেন রাবেয়া খান। তিনি ফেরান ২৬ বলে ৩০ রান করা তাজমিন ব্রিস্টকে। পরের ওভারে ওয়ান ডাউনে নামা আন্নেরি ড্রেকসেনকে ফেরান ফাহিমা খাতুন। তিনি করেন ১ রান। তৃতীয় উইকেটে আন্নেকে ভোচ এবং সুন লাস মিলে যোগ করেন ৩২ রান। এজুটি ভাঙেন স্বর্ণা আকতার নিজের প্রথশ শিকারে পরিণত করে সুন লাসকে ফিরিয়ে। তিনি করেন ১৯ বলে ১৮ রান। এরপর প্রোটিয়াদের সবচাইতে বড় ধাক্কাটা দেন সেই স্বর্নাই। নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করে তিনি ফেরান স্বাগতিকদের আরেক ওপেনার আন্নেকে ভোচকে। এই প্রোটিয়া ওপেনার ফিরেন ৪৯ বলে ৬৭ রান করে। যেখানে তিনি মেরেছেন ৯টি চার এবং একটি ছক্কা। এরপর স্বর্ণা আকতারের ঘূর্ণির মুখে আর দাঁড়াতে পারেনি স্বাগতিক দলের কোন ব্যাটার। ডেলমি টাকার একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করলেও সেটা কোনো কাজে আসেনি। তিনি ১০ বলে ১৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন। আর তার দল থামে ১৩৬ রানে। বাংলাদেশের নারীরা পায় ১৩ রানের ঐতিহাসিক জয়। বাংলাদেশ দলের এই জয়ে দারুণ ভূমিকা রাখা স্বর্ণা আকতার ২৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে দলের জয় এনে দেন। এটি তার ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং। একটি করে উইকেট নিয়েছেন নাহিদা, ফাহিমা এবং রাবেয়া। ম্যাচ সেরা হয়েছেন বল হাতে জাদু দেখানো স্বর্ণা আকতার।