বান্দরবানের থানচিতে আওয়ামী লীগের দুই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার দখল করে নিজেরা ফ্যামিলি বাসা বানানোর অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘ চার বছর ধরে থানচি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের উপরের তলায় সরকারি অর্থায়নে নির্মিত পাঠাগার কক্ষ দুটি দখল করে রাখলেও ভয়ে ক্ষমতার অপব্যবহারকারী থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি থোয়াইহ্লা মং মারমা এবং রেমাক্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুইশৈথুই মারমা রনি।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, উপজেলা সদরে পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে উপজেলা আওয়ামী লীগ ভবনের উপরের তলায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের জন্য দুটি কক্ষ নির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি পাঠাগার ভবনের উদ্ধোধন করেন। উদ্ধোধনের মাস খানেকের মাথায় বর্তমান থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি থোয়াইহ্লা মং মারমা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের ১টি কক্ষ এবং রেমাক্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুইশৈথুই মারমা রনি আরেকটি কক্ষ দখল করে নেয়। দীর্ঘদিন ধরে দখল করে নেয়া কক্ষগুলোতে নিজেদের ফ্যামিলি বাসা বানিয়ে সপরিবারে বসবাস করছেন এই দুই চেয়ারম্যান।
তবে উপজেলা চেয়ারম্যানের জন্য দোতলা একটি সরকারি বাস ভবন রয়েছে। সেটিও বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য ভাড়া দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কজন আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতা অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই দুই চেয়ারম্যান বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারটি দখল করে ফ্যামিলি বাসা হিসেবে ব্যবহার করছেন। কিন্তু ভবনটি মূলত নীচে আওয়ামীলীগ অফিস এবং দ্বিতীয় তলায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের। অথচ দ্বিতীয় তলায় পাঠাগারের সাইনবোর্ড থাকলেও পাঠাগারের কোনো জিনিসপত্র নেই। এ বিষয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি থোয়াইহ্লা মং মারমা বলেন, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার দখলের অভিযোগটি সত্য নয়। ভবনের নীচের তলায় আওয়ামী লীগের অফিস এবং পাঠাগার দুটো পাশাপাশি সাজিয়ে উপরের তলাটি গেস্টহাউজ হিসাবে ব্যবহার করছি। উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারী বাস ভবনটিরও দুরবস্থা। তাই নিজের অফিসিয়াল কাজের জন্য এখানে থাকতে হচ্ছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত রেমাক্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুইশৈথুই মারমা রনির সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
থানচি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অংপ্রু ম্রো জানান, থানচিতে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত ভবনটি মূলত নীচে আওয়ামী লীগ অফিস এবং দ্বিতীয় তলায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের। কিন্তু পাঠাগারটি দলীয় কার্যালয়ের সাথে যুক্ত করে, উপরের পাঠাগারের কক্ষটি রেস্টহাউজ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান এবং রেমাক্রী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান দুজন দুটি কক্ষ ব্যবহারের জন্য ভাড়াও দিচ্ছেন।