থমকে আছে উচ্ছেদ কার্যক্রম

পূর্বাঞ্চল রেল ।। পাওয়া যাচ্ছে না প্রয়োজনীয় সাপোর্ট ।। ৮ হাজার কোটি টাকার ৫শ একর ভূমি দখলে

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৫ জানুয়ারি, ২০২২ at ৬:১৮ পূর্বাহ্ণ

প্রয়োজনীয় সাপোর্ট না পাওয়ায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ভূমি থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রয়েছে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরিস্থিতির উন্নতি হলে ছোট ছোট অভিযান চালালেও পুলিশসহ অন্যান্য সাপোর্ট না পাওয়ায় প্রায় বন্ধই হয়ে পড়েছে উচ্ছেদ কার্যক্রম।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ থেকে জানা গেছে, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে মোট ভূমির পরিমাণ ২৪ হাজার ৪০১ একর। এর মধ্যে প্রায় ৫শ’ একর ভূমি বছরের পর বছর অবৈধ দখলদারের জিম্মায় রয়ে গেছে। এ পরিমাণ ভূমির বর্তমান বাজার দর ৮ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা বলে জানা গেছে। অবৈধ দখলদারদের দখলে থাকা রেলের এসব ভূমিতে বস্তির পাশাপাশি দোকান ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এর ফলে বড় অঙ্কের রাজস্বও হারাচ্ছে সরকার। এছাড়াও রেললাইনের দুইপাশের একরের পর একর ভূমি দখল করে ভাসমান বস্তি-দোকান গড়ে তোলার কারণে রেললাইনে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা বেড়েছে।
এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মাহবুব উল করিম আজাদীকে জানান, অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে রেলের সম্পত্তি উদ্ধারে আমরা করোনার আগে সিডিউল অনুযায়ী ধারাবাহিকভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছিলাম। উদ্ধারও করেছি বিশাল সম্পত্তি। কিন্তু এর পরও রেলের অনেক ভূমি অবৈধ দখলে রয়ে গেছে। এগুলো সিডিউল অনুযায়ী উচ্ছেদের কার্যক্রম নেয়া না হলে উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। বছরের পর বছর অবৈধ দখলদারদের কাছে থাকা এসব ভূমি উদ্ধারের কার্যক্রম হাতে নিতে বিভিন্ন ধরনের সাপোর্ট দরকার। সবচেয়ে জরুরি হলো-পুলিশ। অনেক সময় আমরা উচ্ছেদের কার্যক্রম নিয়েও পুলিশ না পেলে উচ্ছেদ করতে পারি না। এত ভূমি উদ্ধারের জন্য পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে নামতে হবে। করোনার পর থেকে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযোন থেমে গেছে। এর মধ্যে কিছু উচ্ছেদ কার্যক্রম আবার হাতে নিয়েছি। প্রথম পর্যায়ে ফয়স লেকের ঝিরির পাড় ১, ২ ও ৩ উচ্ছেদ করা হবে।
রেলওয়ে কর্মকর্তাদের দাবি, রেলের ভূমি যারা দখলে রেখেছে তারা অনেক প্রভাবশালী। মাঝে-মধ্যে ভূমি উদ্ধারে অভিযান চালালেও কিছুদিন পর আবারও তারা দখলে নিয়ে নেয়। তাই এসব ভূমি উদ্ধারে সরাসরি সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ সূত্রমতে, চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে সিলেটের জামালপুর, টাঙ্গাইল সেতুর পূর্বপাশ ও চাঁদপুর পর্যন্ত রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অধীন। এর মধ্যে শুধু চট্টগ্রাম জেলায় ২২৫ একর ভূমি অবৈধ দখলদারদের হাতে। বাকি ২৭৫ একর ভূমি অন্যান্য জায়গায় বেদখলে আছে। চট্টগ্রাম জেলায় ২২৫ একর জমির মধ্যে ১২৫ একর জমি আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাকি ১০০ একর জায়গা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান দখলে রেখেছে।
এছাড়া চট্টগ্রামের বাইরে ২৭৫ একর জমির মধ্যে প্রায় দেড়শ একর ভূমি সরকারি ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠান, বাকি ভূমি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দখলে রেখেছে। এসব ভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেয়া প্রয়োজন বলে জানান রেলওয়ের কর্মকর্তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতি একপেশে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত : তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬