নোয়াখালীতে বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণ করে ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে দুটি গাড়ি। পৃথক দুই ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন অন্তত ৮ জন। গতকাল ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই অংশে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
মীরসরাই প্রতিনিধি জানান, নোয়াখালীর সেনবাগ ও কানকিরহাট এলাকায় বন্যা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করে ফেরার পথে মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ এলাকায় এসে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল অ্যাম্বুলেন্স চালক আহমদ কবিরের (২৫)। এ সময় আরও ৫ জন আহত হন। তাদের চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত কবির পটিয়া উপজেলার আনজুরহাট গ্রামের মতিউর রহমানের পুত্র।
চট্টগ্রাম মেডিকেল অ্যাম্বুলেন্সচালক সমিতির সহসভাপতি এম মাঈন উদ্দিন জানান, মেডিকেল অ্যাম্বুলেন্স চালক সমিতির সকলে বন্যা দুর্গতদের সহযোগিতার জন্য চাঁদা তুলে কিছু মানবিক খাবারের প্যাকেট বিতরণ করতে ৭ জন চালক গতকাল সকালে নোয়াখালীর সেনবাগ ও কানকিরহাট এলাকায় যান। ত্রাণ বিতরণ শেষে সেখান থেকে বিকেলে সবাই ফিরছিলেন। ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ এলাকা অতিক্রমকালে সোনাপাহাড় এলাকায় অপর একটি ট্রাক তাদের অ্যাম্বুলেন্সকে চাপা দিলে চালক আহমদ কবির, সাকিব (১৮), আকাশ চন্দ্র (২২), জহিরুল আবেদিন (২৩) ও অনি দেবনাথ (২৪) আহত হন। এলাকাবাসী সবাইকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে আহমদ কবিরের সেখানেই মৃত্যু হয়। অপর ৪ জনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. জোবায়ের হোসেন তারেক বলেন, নিহত ব্যক্তি মাথায় ও বুকে আঘাত ব্যথা পেয়েছিলেন। অন্যান্যরা সেরে উঠবেন আশা করছি।
দুর্ঘটনায় চবি শিক্ষার্থীদের ত্রাণবাহী গাড়ি : চবি প্রতিনিধি জানান, গতকাল সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের একটি ত্রাণবাহী মিনি ট্রাক। এতে দুই শিক্ষার্থী গুরুতরসহ গাড়িতে থাকা সবাই আহত হয়েছেন। আহত শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গতকাল ভোর চারটায় মীরসরাইয়ের জোরারাগঞ্জ এলাকায় একটি লরির সাথে তাদের ট্রাকের সংঘর্ষ ঘটে।
জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের উদ্যোগে তৃতীয়বারের মতো বন্যার্তদের সহায়তায় নোয়াখালীর সেনবাগের উদ্দেশ্যে গতকাল ভোর ছয়টায় ত্রাণবাহী ট্রাকটি যাত্রা করে। ওই বিভাগের ১২ জন শিক্ষার্থী ট্রাকের সাথেই ছিল। ট্রাকটি মীরসরাই অতিক্রম করার সময় একটি লরির সাথে ধাক্কা খায়। এতে ট্রাকের সামনের অংশ দুমড়ে–মুচড়ে যায় এবং সামনে থাকা দুজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়।
গুরুতর আহতরা হলেন পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৮–১৯ শিক্ষাবর্ষের ফাহিম আহমাদ পলাশ ও একই শিক্ষাবর্ষের সাদমান হায়দার, ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের কায়কোবাদ।
পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৮–১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আশিক সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মেডিকেলের পরিচালকের সাথে কথা হয়েছে যাতে আমাদের শিক্ষার্থীদের ফ্রি চিকিৎসা দেওয়া হয়।
