ত্যাগের মহিমায় চিরভাস্বর ঈদ-উল-আযহা

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী | শনিবার , ৯ জুলাই, ২০২২ at ৮:৩২ পূর্বাহ্ণ

নিবন্ধের সূচনায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামে’র ‘কুরবানী’ কবিতার কয়েকটি পঙক্তি উপস্থাপন করতে চাই, ‘ওরে হত্যা নয় আজ সত্যাগ্রহ শক্তির উদ্বোধন/ দুর্বল! ভীরু! চুপ রহো, ওহো খাম্‌খা ক্ষুব্ধ মন!/ ধ্বনি ওঠে রণি দূর বাণীর,- আজিকার এ খুন কুরবানীর!/ ………. ঐ খুনের খুঁটিতে কাল্যাণকেতু লক্ষ্য ঐ তোরণ/ আজি আল্লাহর নামে জান কোরবানে ঈদের পূত বোধন।/ ওরে হত্যা নয় আজ সত্যাগ্রহ শক্তির উদ্বোধন’ কালান্তরে অক্ষয় ও অমর সত্যাগ্রহ শক্তির মহিমায় মানবজাতির হৃদয়ে লালিত পশুশক্তির নিধন এবং ত্যাগের প্রেরণা উন্মোচনের মধ্যেই প্রকৃতপক্ষে ঈদ-উল-আযহার সার্থকতা। পবিত্র ইসলাম ধর্মে প্রকৃত বিশ্বাসী ধার্মিক নাগরিক সারা বছর মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে সকল ইহকালীন লোভ-লালসাকে সম্বরণ করে নীতি-নৈতিকতার ভিত্তিতে সৎ-পূত পবিত্র জীবনযাপনে অভ্যস্ত। তাঁদের উদ্দেশ্যে উপহারস্বরূপ মহান স্রষ্টা আনন্দের উৎসব হিসেবে ঈদ-উল-ফিতর এবং ঈদ-উল-আযহা উদযাপনের দিক নির্দেশনা প্রবর্তন করেন।
মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ঈদ-উল-আযহা বা কুরবানীর ঈদ। এটি আদি পিতা হযরত আদম (আ:) এর যুগ থেকে প্রচলিত ছিল বলে নানা তথ্য-উপাত্তের বিশ্লেষণে স্বীকৃত। কিন্তু অবিচ্ছিন্নভাবে এই কুরবানী ঈদের পবিত্র ধারা আবির্ভূত হয় মুসলমানদের জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ:) এর আমল থেকে। বর্তমান বিশ্বে সকল মুসলিম সম্প্রদায় যে মিল্লাতের অধীনে অধিষ্ঠিত তারও প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন হযরত ইব্রাহীম (আ:)। মহান আল্লাহর নির্দেশে জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান ও প্রিয় বস্তু পুত্র ইসমাইলকে কুরবানী দেওয়ার প্রস্তুতি থেকেই ঈদ-উল-আযহার দিন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে মুসলমানরা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কুরবানী দিয়ে থাকেন। মূলত: মুসলিম মিল্লাতের পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ:) মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে পুত্রকে কুরবানী দেওয়ার সর্বোৎকৃষ্ট ত্যাগের মহত্বকে শ্বাশত, সম্মানীত ও মর্যাদাসীন করার লক্ষ্যেই মহান আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সাঃ) মুসলমানদের কুরবানীর ঈদ পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ দিন বিশ্বের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় হযরত ইব্রাহীম (আ:) প্রবর্তিত ত্যাগ ও কুরবানীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ঈদুল আযহা উদযাপন করে থাকে। কুরবানী সম্পর্কে আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআন মজীদে ঘোষণা করেছেন, ‘সুতরাং তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে নামায কায়েম কর এবং কুরবানী কর’ (সূরা আল-কাউসার-২)। পবিত্র হাদীস শরীফের বর্ণনা মতে, আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতের পর দেখলেন মদীনাবাসী খেলাধূলার মধ্যে দুটি দিবস উদযাপন করে থাকে। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমরা এ দুটি উৎসব উদযাপন করো কেন?’ তারা বলল, ‘এ দু’টি দিবস জাহেলী যুগ থেকে আমরা খেলাধুলার মধ্য দিয়ে উদযাপন করে থাকি।’ জবাবে তিনি বললেন, ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য এর চেয়ে উত্তম দু’টি দিবসের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। একটি হল, ঈদ-উল-আযহা এবং অপরটি হল ঈদ-উল-ফিতর’ (আবু দাঊদ)।
ঈদ-উল-আযহা বা কুরবানীর ঈদ প্রত্যয়টি পবিত্র কুরআনে ‘কুরবানী’র পরিবর্তে ‘কুরবান’ হিসেবে ব্যবহৃত। পবিত্র হাদিসেও ‘কুরবানী’ শব্দটি ব্যবহৃত না হয়ে এর বিপরীতে ‘উযহিয়াহ’ ও ‘যাহিয়া’ প্রভৃতি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ব্যবহার হচ্ছে ‘ঈদ-উল-আযহা’ যার আরবী প্রতিশব্দ ‘কুরবান’। মূলত: আরবী শব্দ ‘কুরবাতুন’ বা ‘কুরবান’ থেকে কুরবানী শব্দের উৎপত্তি। এই কুরবানীর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে ত্যাগ। পবিত্র ইসলামের চতুর্থ রোকন পবিত্র হজ্ব পালনের অংশ হিসেবে জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখে পশু উৎসর্গের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ পরম ত্যাগের আদর্শ স্থাপন এবং মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভে নিজের মনের সকল আকুতি নিবেদন করেন। উক্ত কারণেই প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কুরবানীর ঈদ পালন করেছেন এবং সামর্থ্যবান কুরবান বর্জনকারীদের সম্পর্কে সতর্কবার্তা নির্দেশিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানী করে না সে যেন আমাদের ঈদগাঁহে না আসে’। কুরবানীর স্বীকৃতি প্রদান করে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কুরবানীর এক বিশেষ রীতি পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছি, যেন তারা ওসব পশুর উপর আল্লাহর নাম নিতে পারে যে সব আল্লাহ তাদেরকে দান করেছেন‘। (সূরা আল হজ্জ-৩৪)
রাসূল (সা:) আরও বলেছেন, ‘কুরবানীর দিনে আল্লাহর নিকট রক্ত প্রবাহিত (কুরবানী করা) অপেক্ষা প্রিয়তর কোন কাজ নেই। অবশ্যই কিয়ামতের দিন (কুরবানীদাতার পাল্লায়) কুরবানীর পশু তার শিং, পশম ও তার ক্ষুরসহ হাজির হবে। কুরবানীর রক্ত মাটিতে পতিত হওয়ার পূর্বেই আল্লাহর দরবারে পৌঁছে যায়। তাই তোমরা প্রফুল্ল মনে কুরবানী করো’ (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ)। নির্দিষ্ট বয়সী গরু, মহিষ, উট, ভেড়া, ছাগল ও দুম্বা ছাড়া অন্য কোন পশু দিয়ে কুরবানী ইসলামে অনুমোদন নেই। দৈহিক ত্রুটিযুক্ত পশু যেমন-কানা, খোড়া, কানকাটা, লেজ কাটা, শিং ভাঙ্গা ও পাগল পশু দ্বারা কুরবানী করা নিষিদ্ধ। (শামী, ৫ম খন্ড) মহানবী (সাঃ) প্রিয় কন্যাকে কুরবানী সম্পর্কে বলেছেন, ‘হে ফাতিমা! আপন কুরবানীর নিকট যাও। কুরবানীর প্রথম রক্ত বিন্দুতে তোমার সমস্ত গুনাহ মাফ হবে এবং জন্তুটি কিয়ামতের দিন সমুদয় রক্ত, মাংস ও শিং নিয়ে উপস্থিত হবে এবং তোমার আমলের পাল্লা ৭০ গুণ ভারী হবে।’ (ইসবাহানি)
কুরবানীর মাংসসহ ভোজনযোগ্য গবাদিপশুর হালাল সকল কিছুর তিনভাগের একভাগ নিজের জন্য, একভাগ আত্নীয়স্বজনদের জন্য, এবং আরেকভাগ দরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরণ করার কঠোর বিধান রয়েছে। ঈদ-উল আযহা বা মহান আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির জন্য পশু জবেহ্‌ করে সবাইকে নিয়ে আনন্দ সহকারে ভোজন-বিতরণ উৎসব অত্যন্ত উপভোগ্য। মুসলমানদেরকে কুরবানীর মাংস খাওয়া এবং অন্যকে দেওয়ার জন্য মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে আদেশ দিয়ে বলেন, ‘অত:পর তোমরা তা থেকে আহার কর এবং দু:স্থ-অভাবগ্রস্থকে আহার করাও’ (আল কুরআন-২২:২৮)। নবীজী (সাঃ)ও কুরবানির মাংস খেতে উৎসাহ দিতেন। হযরত আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘কিছু খাও, কিছু সঞ্চয় কর এবং কিছু গরীবদের মাঝে বন্টন করে দাও’ (নাসাঈ)। কুরবানীর সারবত্তা হচ্ছে; অর্থ বিত্তের বিনিময়ে নিছক পশু জবেহ নয়, অন্তরের প্রগাঢ় অন্ধকার ও হিংস্র পশুত্বের নির্মূল করা না গেলে উপযাচিত এসব কর্ম কখনোই মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থিত হবে না – নি:সন্দেহে তা বলা যায়।
‘ধর্ম’ শব্দটি ‘ধৃ’ ধাতু থেকে নেয়া হলেও এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে ধারণ করা। নিজের ও অপরের জীবন সমৃদ্ধিতে নিবেদিত সকল কর্মেরই যোগফল হচ্ছে ধর্ম। আধুনিক দার্শনিকদের মতে ধর্মের সংজ্ঞা অনেকটা জটিল ও ব্যাখ্যা সম্বলিত। ‘হযরত নূহের প্লাবনের পর কা’বা শরীফ পুন:প্রতিষ্ঠার দিন হযরত ইব্রাহীম (আঃ) হযরত মুহাম্মদ (স:) এর জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। এসময়েই তিনি আল্লাহ নিকট সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ এবং দুইপুত্রসহ (ইসমাইল ও ইসহাক) উভয়কেই ‘মুসলিম’ (আত্মনিবেদিত) বলে ঘোষণা করেছিলেন। এই ঘোষণা বাণী থেকেই ইব্রাহীমের বংশধরগণ মুসলিম বা মুসলমান হিসেবে পরিচিত হন’ (বাঙালির ধর্মচিন্তা : ২০১৪)। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) মহান আল্লাহর কাছে সর্বোচ্চ আত্মসমর্পণকারীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং তাঁর পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষেই নিজের সর্বোত্তম প্রিয় সন্তান হযরত ইসমাইল (আঃ) এর জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত হয়েছিলেন। সেই থেকে মানুষের জীবনের পরিবর্তে পশুর প্রাণ নিবেদনের মাধ্যমেই পবিত্র কোরবানির প্রচলন শুরু হয়।
ইসলামের মূল রোকন রোজার পরেই হজ্বের অবস্থান। এই জিলহজ্ব মাসেই নির্দ্দিষ্ট দিন সমূহে পবিত্র কা’বা শরীফ ও তার নিকটবর্তী আরাফাত-মিনা-মুজদালিপাসহ কয়েকটি পবিত্রতম স্থানে মহান আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় রসুল (সঃ) এর নির্দেশ মোতাবেক অবস্থান ও কার্যাদি নিবিড় একাত্মতার সাথে এবং কায়মনোবাক্যে সকল পাপ মুক্তির প্রার্থনা জানিয়ে হজ্বব্রত পালন করেন। সুস্থ ও ভ্রমণে সক্ষম ব্যক্তি সম্পূর্ণ বৈধ বা হালাল উপার্জনে প্রয়োজনীয় খরচ বহন করার ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের হজ্বব্রত পালন করা ইসলাম ধর্মে ফরজ বা বাধ্যতামূলক কর্তব্য হিসেবে নির্ধারিত। বৈধ ও অবৈধ উপার্জনের যথার্থ বিভাজন নির্ণয় ব্যতিরেকে অনৈতিক ও ইসলামে অনুমোদনহীন পন্থায় অর্জিত অর্থে প্রকৃতপক্ষে কোন ব্যয় এবং কার্যক্রম কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। প্রিয় নবী রসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, ‘অতিশীঘ্রই একটি সময় এরকম আসছে, যখন মানুষ এর কোনও পরোয়া করবে না যে, সম্পদ বৈধ কিংবা অবৈধ।’ [বুখারী : ২০৫৯, আবু হুরাইরা (রা:)] অতএব এই সম্পর্কে যথার্থ সজাগ থাকা এবং সে অনুযায়ী জীবন-যাপন প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অপরিহার্য।
আশঙ্খিত করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের এই দু:সময়ে ঈদ-উল-আযহা উদযাপনে সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় রীতি-নীতির প্রতিপালন, নগর-গ্রাম স্থানান্তর- জনাসমাগম- লোক দেখানো মাংস বিতরণে যাতে সংক্রমণ বিস্তার ও প্রাণনিধনের পরিসংখ্যান উর্ধ্বমুখী করে বাংলাদেশকে পর্যুদস্ত না করার লক্ষ্যে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকার কর্তৃক নির্দেশিত স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিভিন্ন বিধিনিষেধ উপেক্ষিত হওয়া কোনভাবেই সমীচীন হবে না। অন্যথায় ভয়াবহ অনিবার্য পরিণতি সংক্রমণ বিস্তার ও প্রাণহানীর চৌহদ্দী নিয়ন্ত্রণবিহীন হয়ে পুনরায় পুরো জাতিরাষ্ট্রে দরিদ্রতা-কর্মহীনতা-ক্ষুধার অভিশপ্ত দৃশ্যপট তৈরি করবে। কবি সুকান্ত যেমন লিখেছেন, ‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’ উচ্চারণে জাতিকে নির্মম কাতরতায় যন্ত্রণামুক্ত করার উদ্দেশ্যে সর্বাত্মক আগাম প্রস্তুতি অত্যন্ত জরুরী। পবিত্র ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী সকল ধার্মিক নাগরিক মহান স্রষ্টার নির্দেশিত বিধানসমূহ সামর্থ্য অনুযায়ী অনুসরণ করতে অবশ্যই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে সঙ্কটকালীন সময়ে পবিত্র ধর্মের আনুষাঙ্গিক কার্যকলাপ-জীবনধারা পরিবর্তনেরও বিশেষ দিক নির্দেশনা রয়েছে। উল্লেখ্য বিষয়সমূহ যথার্থ আমলে নিয়ে করোনা প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন এবং একই সাথে আনন্দঘন ঈদ উদযাপন সুন্দর-স্বাভাবিক-সাবলীল ধারায় প্রতিপালিত হোক – এই প্রত্যাশায় দেশবাসীসহ বিশ্বের সকল নাগরিকদের ঈদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি।
লেখক: শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপবিত্র ঈদুল আযহার তাৎপর্য
পরবর্তী নিবন্ধবাম-কংগ্রেস রাজনীতি নিয়ে সিনেমা জুটি বাঁধছেন পরমব্রত-স্বস্তিকা