সিটিজেন ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান তৌফিকা করিমের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ– সিআইডি। গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই অনুসন্ধান শুরুর কথা জানিয়ে সিআইডি বলছে, বিভিন্ন উৎস হতে প্রাপ্ত তথ্য ও অভিযোগের ভিত্তিতে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বান্ধবী ও ব্যক্তিগত ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত তৌফিকা করিম এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি। তৌফিকা করিম আইনপেশার সূত্রে সাবেক আইন মন্ত্রী আনিসুল হকের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন বলে সিআইডির ভাষ্য। খবর বিডিনিউজের।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাবেক এই মন্ত্রীর প্রত্যক্ষ মদদ ও প্রশ্রয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সিন্ডিকেট ও লুটপাটের সাম্রাজ্য গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে তৌফিকা করিমের বিরুদ্ধে।
সিআইডি বলছে, ২০১৪ সাল থেকে বিভিন্ন জেলা ও মহানগরীর অধস্তন আদালতে খাতা পরিবর্তন, জালিয়াতি, পরীক্ষা না দিয়েও চাকরি প্রদান, বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার আসামিদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা গ্রহণ করে তাদের জামিনসহ মামলার রায় পরিবর্তন করে দিতেন তৌফিকা করিম। তার বিরুদ্ধে ২০২০ সালে ঢাকার দায়রা জজ আদালত ও মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অনিয়মের মাধ্যমে সাবেক মন্ত্রীর এলাকা আখাউড়া–কসবার ১৮ জন গাড়িচালক নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
তৌফিকা করিম আনিসুল হকের মালিকানাধীন সিটিজেন চার্টার ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। আনিসুল হকের মা জাহানার হক মারা যাওয়ার পর তৌফিকা করিম চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। সিআইডি বলছে, সাবেক আইন মন্ত্রী আনিসুল হকের অবৈধ সম্পদ দিয়ে তৌফিকা করিম কানাডা, দুবাই এবং মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম হিসেবে কয়েকটি বাড়ি করেছেন বলে তথ্য পেয়েছে তারা।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে ২৬ জুলাই তৌফিকা দেশ ছেড়ে কানাডা চলে যান বলেও গুঞ্জন রয়েছে। তৌফিকা করিম এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট অনুসন্ধান শুরু করেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সরকার পতনের পর গত ১৪ আগস্ট বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) আনিসুল হকের সঙ্গে তৌফিকা করিমের ব্যাংক হিসাবও জব্দ করে।