তোহা আর স্কুলে যাবে না

ফটিকছড়িতে জিপ চাপায় মৃত্যু পৃথক দুর্ঘটনায় অজ্ঞাত নারী নিহত

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৪ নভেম্বর, ২০২৩ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

প্রতিদিন সকাল হলেই তোড়জোড় শুরু হতো তোহার স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে। গতকালও সহপাঠীদের সাথে স্কুলে যাওয়ার জন্য বের হয়েছিল সে। কিন্তু বিদ্যালয় পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ তার হয়নি। তার আগেই বেপরোয়া গতির একটি জিপ গাড়ি চাপা দেয় তাইরিন তাবাসসুম তোহাকে ()। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় ফটিকছড়ির নাজিরহাট পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের টেকের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তোহার আরও দুই সহপাঠী আহত হয়েছে। নিহত তোহা ওই এলাকার হাফেজ জাহেদুল ইসলামের কন্যা। সে সুয়াবিল ইসলামিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল। গতকাল বিকাল ৪টায় জানাজা শেষে তোহাকে দাফন করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তোহা এবং তার আরো ২ সহপাঠী প্রতিদিনের মত গতকাল সকালে স্কুলে যাচ্ছিল। তারা টেকের দোকানের সামনে গেলে বেপরোয়া গতির একটি জিপ চাপা দেয় শিশু তোহাকে, গাড়ির ধাক্কা অপর দুই শিশুর গায়েও। এ সময় তাদের উদ্ধার করে নাজিরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তোহাকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন এবং একজন শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিলেও অন্যজনকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

এ ব্যাপারে নিহতের এক আত্মীয় মোহাম্মদ আবু জানান, জাহেদুল ইসলামের এক মেয়ে ও এক ছেলে আছে। বড় ছেলেটি প্রতিবন্ধী। ছোট থেকে মাবাবা আর স্বজনদের আদরের ছিল তোহা। তিনি বলেন, মেয়েটি স্কুলে আসার সময় বেপরোয়া জিপ গাড়ি রাস্তায় স্পিড ব্রেকার থাকার পরেও মেয়ের শরীরের উপর চালিয়ে দেয়। গাড়িটি ড্রাইভার না চালিয়ে হেলপারকে দিয়ে চালাচ্ছিল। এদের বিরুদ্ধে আগেও অনেকে অভিযোগ করা হয়েছে। গাড়িটা স্থানীয়রা আটক করেছে। আমরা এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তি চাই।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের জন্য পরিপাটি হয়ে ঘর থেকে বের হওয়া তোহার রক্তমাখা জুতা পড়ে ছিল সড়কে। পাশেই ছিল তার মাথার রঙিন ক্লিপ ও ব্যান্ড।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরেফিন আজিম বলেন, ৩ জন শিক্ষার্থীকে আহত অবস্থায় মেডিকেলে আনা হলে একজন মারা যায়। অন্য ২ জনের মধ্যে একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং বাকি একজনকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

এ ব্যাপারে ভূজপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কামরুজ্জামান বলেন, চাঁদের গাড়িটি (জিপ) আমাদের হেফাজতে আছে। লাশ ময়নাতদন্ত না করা মর্মে পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে গতকালের এ ঘটনার ৫ ঘণ্টার ব্যবধানে অপর এক দুর্ঘটনায় অজ্ঞাত এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের লাশ নাজিরহাটস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে রাখা হয়েছে। চট্টগ্রামখাগড়াছড়ি মহাসড়কের বারৈয়ারহাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপাশে গাড়ি ছিল। সবজির একটি গাড়ি ওই মহিলাকে দেখে অনেকবার হর্ন বাজায়। পরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই মহিলাকে চাপা দিলে গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে নিয়ে আসা হয়। পরে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই মহিলাকে মৃত ঘোষণা করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআল কায়েদা স্টাইলে হামলার ঘোষণা দিচ্ছে বিএনপি : তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধকাল থেকে আবার বিএনপির ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ