তৈরি পোশাকে পূর্ণ হয়ে ইতালির উদ্দেশ্য নোঙর তুললো ‘এমভি সোঙ্গা চিতা’ নামের কন্টেনার ভ্যাসেল। চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালের চার নম্বর বার্থ থেকে ইতালির সমুদ্রবন্দর সিভিটাভিসিয়ার পথে গতকাল যাত্রা শুরু করেছে জাহাজটি। ১৫দিনে জাহাজটি ইতালি পৌঁছবে। নতুন এই রুট বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন ধারা সৃষ্টি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গতকাল সোমবার বিকেল পৌনে ৩টা নাগাদ ৯৮৩ টিইইউএস কন্টেনার নিয়ে জাহাজটি বন্দর ত্যাগ করে। জাহাজটিকে বিদায় জানানোর মাধ্যমে নতুন এই রুটে পণ্য পরিবহন উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম, শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ, বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক, জাহাজটির স্থানীয় এজেন্ট রিলায়েন্স শিপিংয়ের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাশেদ প্রমুখ। নতুন রুটের উদ্বোধন করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ-ইতালি সরাসরি জাহাজ চলাচল আমাদের অর্থনীতিতে একটি যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা। পোশাক রপ্তানির গুরুত্ব বিবেচনায় বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতালি-চট্টগ্রাম রুটের জাহাজকে বার্থিং, কি গ্যান্ট্রি ক্রেন বরাদ্দসহ সব সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইতালি থেকে আসার পথে জাহাজটি বিভিন্ন বন্দরের কন্টেনার আনতে পারবে। অন্যান্য শিপিং লাইনও এ ধরনের সরাসরি জাহাজ চালু করতে চাইলে বন্দর কর্তৃপক্ষ সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবে।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রাম থেকে সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা বা মালয়েশিয়ার বন্দরে প্রথমে পোশাক রফতানির কন্টেনার পাঠানো হতো। সেখান থেকে বড় জাহাজে সেই কন্টেনারগুলো ইউরোপ আমেরিকার বায়ারদের কাছে যেত। চট্টগ্রাম থেকে ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্টে পাঠানো এবং সেখান
থেকে পুনরায় বায়ারের কাছে পণ্য পৌঁছাতে সময়ক্ষেপণ ও ব্যয় বেশি হতো। এ পদ্ধতিতে ইতালিতে পণ্য যেতে স্বাভাবিকভাবে সময় লাগে ২৪- ২৮ দিন। সিঙ্গাপুর বা শ্রীলঙ্কায় বড় জাহাজে বুকিং পেতে দেরি হলে সময় লাগে ৩০-৩৫ দিনের বেশি। ইতালি-চট্টগ্রাম রুটে সরাসরি কন্টেনার জাহাজ চলাচল নিরবচ্ছিন্ন রাখা গেলে পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশ ভিয়েতনামের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকবে। কারণ এতে লিড টাইম ও ভাড়া সাশ্রয় হবে। সরাসরি পণ্য পরিবহন করা গেলে ১৫দিনে পণ্য চালান গন্তব্যে পৌঁছানোর পাশাপাশি পরিবহন ব্যয় গড়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমে যাবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, জাহাজটি গত শনিবার বেলা পৌনে ১টায় ইতালি থেকে এসে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি-৪ জেটিতে বার্থিং নিয়েছিল। আগামী ১৫ মার্চ এই রুটের অপর জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
