তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর জন্য মাসিক ভাতা, পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে সরকারকে আইনি নোটিস দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার সমাজকল্যাণ, অর্থ, শিক্ষা ও আইন সচিবের কাছে পাঠানো নোটিসে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় এই জনগোষ্ঠীর পক্ষে হাই কোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলে জানানো হয়েছে নোটিসে। খবর বিডিনিউজের।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসানের পাঠানো নোটিসে বলা হয়েছে, হিজড়ারা (তৃতীয় লিঙ্গ) বাংলাদেশের সবচেয়ে অবহেলিত জনগোষ্ঠী। তারা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন, সমাজ থেকে অবহেলিত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুযোগ–সুবিধা থেকে বঞ্চিত এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্যের শিকার। সংবিধানের ২৮ (৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রের যেকোনো অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য সরকার বিশেষ বিধান প্রণয়ন করতে পারবে।
এতে বলা হয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ২০১৩ সালে হিজড়াদের উন্নয়নে নীতিমালা করেছে। কিন্তু সেটা কাগজে–কলমে সীমাবদ্ধ এবং হিজড়াদের কল্যাণে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে হিজড়া জনগোষ্ঠী মানবেতর জীবনযাপন করছে। বেঁচে থাকার জন্য তারা মানুষের কাছে হাত পাততে বাধ্য হচ্ছে।
নোটিসে বলা আরও বলা হয়েছে, জন্মের পর হিজড়া হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর থেকে তারা পরিবার থেকেই বঞ্চনার শিকার হন। পরিবার থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। এছাড়া শারীরিক পার্থক্যের কারণে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিকভাবে পড়াশোনা করতে পারেন না। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় বঞ্চনার কারণে তারা স্বাভাবিক কর্মজীবনে প্রবেশ করতে পারেন না। বৈষম্যের শিকার হয়ে হিজড়া জনগোষ্ঠী অত্যন্ত মানবেতর জীবন–যাপন করছে। তাই হিজড়া জনগোষ্ঠীর কল্যাণে দেশের প্রতিটি হিজড়াকে মাসিক ভাতা দিতে হবে। হিজড়াদের জন্য পৃথক স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। এছাড়া তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী হিজড়াদের জন্য সব ধরনের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
নোটিস পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হিজড়া জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত এবং কল্যাণে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।