তৃতীয় দিনে লিডের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদন | শনিবার , ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৭:৫৯ পূর্বাহ্ণ

মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই শুরু হয়ে যায় বাংলাদেশ-ভারতের তৃতীয় ইনিংসের খেলা। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ কোনো উইকেট না হারিয়ে ৭ রান। দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের স্বস্তির জায়গা ছিল ভারতকে অলআউট করে দেয়া। দিনের শেষ সময়টুকু নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন দুই ওপেনার জাকির হাসান ও নাজমুল হাসান শান্ত। আর দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে তাইজুল ইসলাম বললেন, লড়াই জমাতে অন্তত ২৫০ রানের মতো লিড পাওয়ার লক্ষ্য তাদের।

মিরপুর টেস্টে প্রথম ইনিংসেই ৮৭ রানে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে দেখেশুনে খেলে ৬ ওভার কাটিয়ে দেন দুই ওপেনার। শান্ত ৫ আর জাকির ২ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন। এর আগে ভারতকে প্রথম ইনিংসে ৩১৪ রানে থামানোয় বড় ভূমিকা রাখেন তাইজুল। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসের মতো মিরপুরেও প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেন বাঁহাতি এই স্পিনার। আগের দিন শেষ বিকেলে বেশ কয়েকবার ভাগ্যগুণে বেঁচে যায় ভারত। বিনা উইকেটে তুলেছিল ১৯ রান। তবে ধীরগতিতে এগিয়ে চলা ভারতের ওপেনিং জুটিটা খুব বড় হয়নি। সকাল সকালই আঘাত হানেন তাইজুল ইসলাম। তাইজুলের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন ভারতীয় অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। আম্পায়ার অবশ্য আউটটি দিতে চাননি। রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। রিপ্লেতে দেখা যায়, বল রাহুলের (১০) মিডল অ্যান্ড লেগ স্টাম্পে আঘাত করতো। নিজের পরের ওভারে আরেকটি এলবিডব্লিউ তাইজুলের। এবার সুইপ করতে গিয়ে বল মিস করেন শুভমান গিল (২০)। আবেদনে আঙুল তুলে দিতে দেরি করেননি আম্পায়ার। তৃতীয় উইকেটে একটি জুটি গড়ে ফেলেছিলেন চেতেশ্বর পূজারা আর বিরাট কোহলি। ৯৪ বল কাটিয়ে গড়া তাদের ৩৪ রানের জুটিটিও ভাঙেন তাইজুল, ইনিংসের ৩১তম ওভারে। তাইজুলের ডেলিভারিটি পূজারা ডিফেন্ড করতে চাইলে ব্যাট-প্যাড হয়ে সেটি চলে যায় শর্ট লেগে
মোমিনুল হকের হাতে। ২৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন পূজারা। ৭২ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত। ৩৬ ওভারে ৩ উইকেটে ৮৬ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে গিয়েছিল দলটি। বিরাট কোহলি ১৮ আর রিশাভ পান্ত ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন। লাঞ্চের পর অবশ্য কোহলি বেশিদূর এগোতে পারেননি। ব্যক্তিগত ২৪ রানে তিনি হন তাসকিন আহমেদের শিকার। টাইগার পেসারের দুর্দান্ত এক ডেলিভারি বুঝতে না পেরে খোঁচা মেরে বসেন কোহলি। উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান নেন সহজ ক্যাচ।
৯৪ রানেই ভারতের ৪ উইকেট তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। সম্ভাবনা ছিল অল্পতেই গুটিয়ে দিয়ে প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকার। কিন্তু বিপদ কাটিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় লোকেশ রাহুলের দল। রিশাভ পান্ত আর শ্রেয়াস আইয়ার পঞ্চম উইকেটে গড়েন ১৫৯ রানের বড় জুটি। এরাই ভুগিয়েছে টাইগারদের। শেষ পর্যন্ত এই জুটিটি ভেঙেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ, পন্ত্তকে বোকা বানিয়ে। এর আগেও বহুবার নার্ভাস নাইন্টিজে কাটা পড়েছেন রিশাভ পান্ত। মিরপুর টেস্টে আরও একবার দেখা গেলো তেমনটা। সেঞ্চুরির দোড়গোড়ায় এসে ফিরেন ভারতীয় এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ১০৪ বলে ৭ চার আর ৫ ছক্কায় মারকুটে ইনিংস খেলা পান্তকে ৯৩ রানে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের ক্যাচ বানান মিরাজ। ৩৩ টেস্টের ক্যারিয়ারে ষষ্ঠবারের মতো নার্ভাস নাইন্টিজে ফিরতে হলো তাকে। পান্ত আউট হওয়ার পর দ্রুতই আরও দুটি উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানকে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত এক ক্যাচ হন অক্ষর প্যাটেল (৪)। বাউন্ডারির কাছে শান্ত ক্যাচটি নিয়ে দারুণভাবে ভারসাম্য সামলে নেন। এরপর সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগানো শ্রেয়াস আইয়ারও ফেরেন ৮৭ করে। সাকিবের ঘূর্ণি সুইপ করতে গিয়ে মিস করেন ডানহাতি এই ব্যাটার, বল লেগে যায় প্যাডে। আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও কাজ হয়নি ভারতের। অশ্বিনকে ১২ রানে এলবিডব্লিউ করেন সাকিব। ১৪ করে উমেশ যাদব হন তাইজুলের শিকার। সিরাজ ফেরেন ৭ করে। সাকিব আল হাসান আর তাইজুল ইসলাম নেন ৪টি করে উইকেট।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকলকাতা নাইট রাইডার্সে লিটন-সাকিব
পরবর্তী নিবন্ধশতাধিক চরে মৃতপ্রায় মাতামুহুরী