তৃতীয় দিনে আইরিশদের দাপট বাংলাদেশের কেবলই হতাশা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ৭ এপ্রিল, ২০২৩ at ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ

আগের দিন ২৭ রানে হারিয়ে ফেলেছিল ৪ উইকেট। ইনিংস পরাজয় এড়াতে তখনো দরকার ছিল ১২৮ রানের। বাংলাদেশ হয়তো তখন স্বপ্ন দেখছিল তৃতীয় দিনের শুরুতেই আইরিশদের অল আউট করে ইনিংস ব্যবধানে জেতার। কিন্তু ক্রিকেটের মতো গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলায় যে সব সময় সবকিছু নিজেদের মত হয়না সেটা প্রমাণিত হলো আরো একবার। দিনের প্রথম সেশনে আরো একটি উইকেট হারিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশের সম্ভাবনা তখন আরো উজ্জ্বল দেখছিল সবাই। ঠিক তখনই ক্রিকেট তার আসল চরিত্র দেখাতে শুরু করে।

 

তবে এখানে ক্রিকেট কিংবা তার চরিত্রকে দোষ দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। বলতে হবে আইরিশ ক্রিকেটারদের দাপট এবং দক্ষতা পুরো দিন কেবলই হতাশা উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ দলকে। বাংলাদেশের নির্বিষ ও প্রাণহীন বোলিং আর আয়ারল্যান্ডের বীরোচিত প্রতিরোধ মিলিয়ে ক্রিকেটের বাস্তব রূপটা দেখল

বাংলাদেশ। স্কিল, টেম্পারমেন্ট আর নিবেদনের দারুণ প্রদর্শনীতে অসাধারণভাবে ঘুরে দাঁড়াল আয়ারল্যান্ড। ম্যাচ শুধু চতুর্থ দিনে টেনে নেওয়াই শুধু নয়, তাদের জয়ও এখন অসম্ভব নয় মানছেন ক্রিকেট বোদ্ধারা। মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে আইরিশরা এগিয়ে ১৩১ রানে। উইকেট আছে ২টি। গতকাল

সারাদিনের দুর্দান্ত লড়াইয়ে আইরিশরা উইকেট হারিয়েছে মাত্র ৪টি। দিনশেষে তাদের রান ৮ উইকেটে ২৮৬। আইরিশ প্রতিরোধের মূল নায়ক লর্কান টাকার। অভিষেকে স্মরণীয় সেঞ্চুরিতে রেকর্ড বইয়ে নাম লেখান ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। টেস্টে আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিয়ান তিনি। দুটি সেঞ্চুরিই অভিষেকে।

আগেরটি ছিল দেশের অভিষেক টেস্টে ডাবলিনে কেভিন ও’ব্রায়েনের। বিদেশের মাঠে অভিষেকে প্রথম সেঞ্চুরি এলো তাই টাকারের ব্যাট থেকেই। আগের দিন শেষ বিকেলে প্রতিরোধ গড়া টেক্টর ও পিটার মুর নতুন দিনের সকালেও উইকেট আঁকড়ে রাখেন দাঁতে দাঁত কামড়ে। স্পিনে হতাশ অধিনায়ক সাকিব বল তুলে দেন পেসার শরিফুল ইসলামের হাতে। তার দ্বিতীয় ওভারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন পিটার মুর ৭৮ বলে ১৬ রান করে।

এরপর টেক্টরের সঙ্গে লরকান টাকার মিলে এগিয়ে নেন আয়ারল্যান্ডকে। ওই সেশনে আর উইকেট হারায়নি তারা। দ্বিতীয় সেশনে নিজের হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন টেক্টর ১৪৫ বলে। প্রথম আইরিশ ব্যাটসম্যান হিসেবে এক টেস্টে জোড়া ফিফটি করলেন তিনি। তবে এরপর বেশিক্ষণ আর এগুতে পারেনি ট্যাক্টর।

তাইজুলের বলে সুইপ করতে গিয়ে ফিরেন ১৫৯ বলে ৫৬ রান করে। এবার টাকারের সঙ্গে প্রতিরোধ গড়েন ম্যাকব্রাইন। দ্বিতীয় সেশনে আইরিশরা তোলে ১০৬ রান। নতুন বল নিয়েও সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। তাইজুলের বলে বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরি পূরণ করেন লরকান টাকার ১৪৯ বলে। ১৪টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ

খেলে তার আগের সর্বোচ্চ ছিল ৮০। ফিফটি ছিল ২টি। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে টাকারকে ফিরিয়েই এই জুটি ভাঙতে পারে বাংলাদেশ। ইবাদত হোসেনের বলে ফিরে আসার আগে টাকার করেন ১৬২ বলে ১০৮ রান। ৭ম উইকেটে জুটিতে আসে ১১১ রান। টেস্টে আয়ারল্যান্ডের যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি। ৩ রানের জন্য

তারা ছুঁতে পারেননি ৭ম উইকেটেই কেভিন ওব্রায়েন ও স্টুয়ার্ট থমসন জুটির রেকর্ড। এরপর মার্ক অ্যাডায়ারকে নিয়েও ৩১ রানের কার্যকর জুটি গড়েন ম্যাকব্রাইন। অ্যাডায়ারকে ১৩ রানে ফেরান তাইজুল। তবে এ দিন আর আইরিশদের অলআউট করতে পারেনি বাংলাদেশ। গ্রাহাম হিউমকে নিয়ে দিন শেষ

করেন ম্যাকব্রাইন। দিন শেষে তিনি অপরাজিত ১৪৪ বলে ৭১ রান করে। এখন ১৩১ রানে এগিয়ে আইরিশরা। আজ আরো দুইটি উইকেট হারিয়ে কত যোগ করে সেটাই দেখার বিষয়। তাইজুল আগের দিনের ২ উইকেটের সাথে গতকাল নিয়েছেন আরো দুই উইকেট।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরানা প্লাজার সোহেল রানার জামিন
পরবর্তী নিবন্ধএত উন্নয়ন, অথচ আগুন নেভানোর সরঞ্জাম নেই : ফখরুল