স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে দুই মাসের কর্মসূচি নিয়েছে নগর বিএনপি। কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি ওয়ার্ডে করোনাভাইরাস সুরক্ষা সামগ্রী ও ওষুধ বিতরণ করবেন দলটির মেয়রপ্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। এসময় ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে মতবিনিময় সভা করা হবে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি সমর্থিত স্থানীয় কাউন্সিলর প্রার্থী ও নগর কমিটির নেতৃবৃন্দ। এর মধ্য দিয়ে তৃণমূলে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে চায় দলটি।
বিএনপি নেতৃবৃন্দ জানান, আগামী ৪ অক্টোবর ১৬ নং চকবাজার ওয়ার্ডে একটি কমিউনিটি সেন্টারে প্রথম সভার আয়োজন করা হবে। এরপর ৫ নভেম্বর পর্যন্ত একটানা পৃথক ২৯টি ওয়ার্ডে সভা ও সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। অক্টোবর মাসে কর্মসূচি চলাকালে বাকি ওয়ার্ডগুলোর তারিখ ও স্থান চূড়ান্ত করা হবে।
বিএনপি নেতারা জানান, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে গত ৭ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ ও দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছিল নগর বিএনপি। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল ৪৩ সাংগঠনিক ওয়ার্ডে মতবিনিময় সভা করার। এরপ্রেক্ষিতে গত ২০ সেপ্টেম্বর ইপিজেডে একটি সভার তারিখও চূড়ান্ত করা হয়। কিন্তু অনুমতি না নেয়ায় সিএমপি ওই সভা করতে দেয়নি বলে দাবি করেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। এদিকে সম্ভাব্য তিন মাসের কর্মসূচি পালনের বিষয়ে সিএমপি থেকে অনুমতি নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে গত ২৮ সেপ্টেম্বর মেয়র প্রার্থী ও নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন সিএমপির বিশেষ শাখায় একটি আবেদনও করেন। সেখানে বলা হয়, ‘করোনাকাল শুরু হওয়ার পর প্রতিটি ওয়ার্ডে মাস্ক, ওষুধ ও ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছিলাম। আগামী অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে দুর্যোগকালীন সময়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মাস্ক ও ওষুধ বিতরণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। ১ অক্টোবর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাস্ক ও ওষুধ বিতরণের অনুমতি চাওয়া হয় আবেদনপত্রে।’
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিএনপি নেতা জানান, মূলত স্থগিত থাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলে দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করাই কর্মসূচির উদ্দেশ্য। এছাড়া দল সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের সাথে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের দূরত্ব ঘুচানোও সভা আয়োজনের মূল লক্ষ্য বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা আগেও সুরক্ষা সামগ্রী, ওষুধ ও ত্রাণ বিতরণ করেছিলাম। আবারো বিতরণের কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। সাথে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করবো। এক্ষেত্রে অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের নিয়ম ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কর্মসূচি পালন করবো। এ বিষয়ে সিএমপি থেকে অনুমতিও নিয়েছি।
কর্মসূচির পেছনে নির্বাচনের প্রস্ততিও রয়েছে কী না জানতে চাইলে ডা. শাহাদাত বলেন, সেটা তো আছেই। কারণ নির্বাচন দিবে না সেটা তো বলা হয় নি, বরং যে কোন মুহূর্তে নির্বাচন হতে পারে। এটা সত্য নির্বাচন না হওয়ায় তৃণমূলে স্থবিরতা এসেছে। দলীয় কর্মীরা যেন স্থবির না হন সেজন্য তাদের সঙ্গে মতািবনিময় করবো। হঠাৎ করে নির্র্র্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে কর্মীদের নির্বাচনমুখী করা কঠিন। তাই এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি বলেন, এর আগে ইপিজেডে সভা করতে চাইলে অনুমতি না নেয়ায় করতে দেয়নি। অথচ আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে অনুমতি নিতে হচ্ছে না। আবার আমাদের প্রতিদিন মামলায় হাজিরাও দিতে হচ্ছে।
সম্ভাব্য কর্মসূচি :
কর্মসূচির তালিকা সূত্রে জানা গেছে, ৩ অক্টোবর চকবাজার, ৪ অক্টোবর দক্ষিণ বাকলিয়া, ৫ অক্টোবর দেওয়ানবাজার, ৬ অক্টোবর জামালখান, ৭ অক্টোবর এনায়েত বাজার, ৮ অক্টোবর উত্তর পাঠানটুলী, ৯ অক্টোবর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর, ১১ অক্টোবর ফিরিঙ্গিবাজার, ১২ অক্টোবর দক্ষিণ হালিশহর, ১৩ অক্টোবর উত্তর পতেঙ্গা, ১৪ অক্টোবর দক্ষিণ পতেঙ্গা, ১৫ অক্টোবর দক্ষিণ পাহাড়তলী, ১৭ অক্টোবর জালালাবাদ, ১৮ অক্টোবর চান্দগাঁও, ১৯ অক্টোবর মোহরা, ২০ অক্টোবর পূর্ব ষোলশহর, ২১ অক্টোবর উত্তর পাহাড়তলী, ২২ অক্টোবর উত্তর কাট্টলী, ২৪ অক্টোবর দক্ষিণ কাট্টলী, ২৫ অক্টোবর সরাইপাড়া, ২৬ অক্টোবর পাহাড়তলী, ২৭ অক্টোবর লালখান বাজার, ২৮ অক্টোবর পূর্ব বাকলিয়া, ২৯ অক্টোবর উত্তর আগ্রাবাদ, ৩১ অক্টোবর রামপুর, ১ নভেম্বর উত্তর হালিশহর, ২ নভেম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদ, ৩ নভেম্বর পাঠানটুলী, ৪ নভেম্বর পশ্চিম মাদারবাড়ী ও ৫ নভেম্বরপূর্ব মাদারবাড়ী ওয়ার্ডে কর্মসূচি পালিত হবে।