একটা সময় ছিলো যখন একটা নির্দিষ্ট ফোন নাম্বার সবসময়ই কল লিস্টের প্রথমেই থাকতো। নাম্বারটা খুঁজতে কন্টাক্ট লিস্টে বা ফোনবুকে যাওয়ার প্রয়োজন ছিলো না। সেই একই নাম্বার একটা সময় চলে যায় গতকালে। তারপর চলে যায় আরো পেছনের তারিখে। এভাবে একটা সময় আর ডায়াল, রিসিভ বা মিস কল লিস্টেও নাম্বারটা থাকে না। নাম্বারটা কন্টাক্ট বা ফোন বুকে ঘুমিয়ে থাকে। হঠাৎ হঠাৎ নাম্বারটাতে কল দিতে ইচ্ছে করে। খুঁজে বের করে কল দিবো–কি দিবো না, এই নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্বে কিছুক্ষণ সময় পার করি ‘না থাক’ –এটা বলে আর কল দেওয়া হয় না। তারপর একটা সময় আসে যখন হঠাৎ আর কল দিত ইচ্ছা হলেও ভয়ে ইচ্ছা করে না। স্মৃতিতে ধুলো জমে, ঝাপসা হয়ে যায় সব অতীত। তারও অনেক পরে একটা সময় আসে যখন দেখা যায় সেই নাম্বারটা খুঁজেই পাওয়া যায় না, যে নাম্বারটা এত ভালো করে মুখস্থ ছিলো, সেই নাম্বারটার শেষের বা মাঝের এক–দুইটাসংখ্যা মনেই পড়ছে না! কোন এক সন্ধ্যায় হঠাৎ মন খারাপ হয়ে যায়, হয়তোবা সেদিন একটু একটু বৃষ্টি পড়ে, একঘেয়েমি ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি বুকের মধ্যে হঠাৎ মোচড় দিয়ে ওঠে, একটা হাহাকার জেগে ওঠে।
নাম্বারটা যে মানুষটার, তার ছবি মনে ভেসে ওঠে। আচ্ছা, মানুষটা এখন কোথায় আছে, কেমন আছে? হাত বাড়লেই যাকে ছোঁয়া যেত, চোখ মেললেই যাকে দেখা যেত, সে এখন যোজন যোজন দূরে। জীবনের ঘাত—প্রতিঘাতে বাস্তবতাকে আমরা অস্বীকার করতে পারি না। তবুও শতঅধিকারের অভিমান বুকে চেপে আমরা বেঁচে থাকি। এভাবেই একদিন সব লেনদেন শেষ করে হারিয়ে যাই বিষণ্ন মেঘমালার ভীড়ে…ভালো থাকুক হারিয়ে যাওয়া প্রিয় মানুষটা।