সাবেক সংসদ সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও ছাত্রলীগের প্রাক্তন সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি… রাজেউন)। গতকাল বুধবার ভোর ৪টা ৩৭ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। নূরে আলম সিদ্দিকীর ইন্তেকালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। একই সাথে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। এছাড়াও শোক প্রকাশ করেছেন – আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্য ও সমপ্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য মজহারুল হক শাহ চৌধুরী প্রমুখ।
ঝিনাইদহে বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরে আলম সিদ্দিকীর প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল বুধবার বেলা ১২ টায় হেলিকপ্টার যোগে তাঁর মরদেহ ঝিনাইদহে আনা হয়। রাখা হয় সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। তাকে শেষবার একনজর দেখার জন্য রাজনৈতিক কর্মী, সহকর্মী, সহপাঠিসহ নানা শ্রেণী–পেশার মানুষ সেখানে ভিড় করেন। বাদ যোহর প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে আবারো হেলিকপ্টারযোগে তার মরদেহ ঢাকায় আনা হয়।
উল্লেখ্য, নূরে আলম সিদ্দিকীর জন্ম ১৯৪০ সালের ২৬ মে ঝিনাইদহে। সত্তরের দশকের তুখোড় ছাত্রনেতা নূরে আলম সিদ্দিকী ১৯৭০–১৯৭২ মেয়াদে ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে ছিল তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। মুক্তিযুদ্ধের চার খলিফার একজন হিসেবে তাকে উল্লেখ করা হয়। মুজিব বাহিনীর অন্যতম কর্ণধার ছিলেন তিনি। নূরে আলম সিদ্দিকী ছয় দফা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তিনি ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন যশোর–২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের সপ্তম ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঝিনাইদহ–২ আসন থেকে অংশ নিয়েছিলেন নূরে আলম সিদ্দিকী।