গত সপ্তাহে রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর থেকে এখনও ইউক্রেইনের ৬০ লাখ পরিবার বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে বলে দেশটির প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন। শুক্রবার নিজের রাত্রিকালীন ভিডিও বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, গতকাল সন্ধ্যা থেকে কিয়েভসহ অধিকাংশ অঞ্চলেই বিদ্যুৎ নেই। তবে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা পরিবারের সংখ্যা বুধবার থেকে অর্ধেক কমে গেছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু শীত জেঁকে বসার এ সময়টিতে লাখ লাখ পরিবার বিদ্যুৎ, পানি ও উত্তাপ ছাড়া দিন কাটাচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার হামলায় রাজধানী কিযেভ ও এর আশপাশের অঞ্চলগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিয়েভের বহু বাসিন্দা ’২০ থেকে ৩০ ঘণ্টা ধরে’ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে। হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অন্য এলাকাগুলো হচ্ছে দক্ষিণের ওদেসা, পশ্চিমের লভিভ এবং মধ্যাঞ্চলের ভিনিৎসিয়া ও নিপ্রোপেত্রোভস্ক।
সবাইকে অল্প পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ করে এমন যন্ত্রপাতি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে জেলেনস্কি বলেন, বিদ্যুৎ চলে না যাওয়ার অর্থ এই নয় যে সমস্যা শেষ হয়ে গেছে। আপনার বাসায় বিদ্যুৎ থাকার অর্থ এই নয় যে আপনি একসঙ্গে বেশ কয়েকটি শক্তিশালী বৈদ্যুতিক যন্ত্র ছেড়ে রাখবেন, অনুগ্রহ করে তা করবেন না। এই শীতটা আমাদের কষ্ট করতে হবে। এই শীতের কথা আমাদের সবার মনে থাকবে।
ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী দেনিশ সুমাইহাইল বলেছেন, হামলা সত্ত্বেও দেশের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর মধ্যে সংযোগ পুনর্স্থাপন করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, উত্তাপ সরবরাহ কেন্দ্র, হাসপাতাল ও জরুরি সেবা বিভাগ উল্লেখযোগ্য। কিন্তু ইউক্রেনের প্রত্যেকটি অঞ্চলে সাধারণ মানুষের নিয়মিত লোডশেডিংয়ের মুখোমুখি হওয়া অব্যাহত আছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রা ও তুষারপাতের মধ্যে ইউক্রেনের অবকাঠমোতে রাশিয়ার হামলা দেশটিতে একটি স্বাস্থ্য সংকটের কারণ হতে পারে বলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। হাইপোথার্মিয়ায় দেশজুড়ে বহু মানুষ মারা যেতে পারে, এমন উদ্বেগ বিরাজ করছে। ইউক্রেন ও এর পশ্চিমা মিত্ররা বারবার বলে আসছে, গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অবকাঠামোগুলোকে লক্ষ্যস্থল করে রাশিয়া যুদ্ধাপরাধ করছে, আর অভিযোগ মস্কো অস্বীকার করেছে।
শুক্রবার খেরসন অঞ্চলের গভর্নর বলেছেন, রাশিয়ার ধারাবাহিক গোলাবর্ষণের কারণে এলাকার হাসপাতালগুলো থেকে রোগীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। খেরসন নগর কাউন্সিলের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহে নগরীর পূর্বাংশে ১৫ জন বাসিন্দা নিহত হয়েছে। সমপ্রতি রুশ বাহিনী নগরীটি ছেড়ে যাওয়ার পর ইউক্রেইনীয় বাহিনী এর নিয়ন্ত্রণ নেয়।