বাণিজ্যিক রাজধানী বা প্রকৃতির রাজকন্যা এভাবেই নানা নামে অভিহিত করা হয় আমাদের প্রাণের শহর চাটগাঁ বা চট্টগ্রামকে। বাংলাদেশের অর্থনীতি বলতে প্রথমেই যে নামটি মুখে আসে সেটি চট্টগ্রাম। এত রূপ মাধুর্য নিয়েও কেবল অবহেলা, অব্যবস্থাপনায় হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যের চট্টগ্রাম শহর। যে শহরে আঁধার ভেঙে আলোর মুখ দেখে কোটি জনতা সেই শহর আজ ভালো নেই। সেই শহর আজ আলো দেখাতে ভীষণ রকম স্বার্থপর হয়ে উঠেছে। হবেই না বা কেন যে শহরকে সুন্দর–পরিপাটি করার দায়িত্ব নিয়েছে তারা নিজেরাই যখন একে অপরের প্রতিপক্ষ স্বাভাবিকভাবে রূপের শহর আলো দেখাতে সক্ষম হবে না।বলছি মন্ত্রণালয়, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা। যে শহরকে আধুনিক ও বাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়ে তুলতে প্রায় হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার সেখানে এত সীমাহীন দুর্ভোগ মেনে নেওয়াটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। একের পর এক প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো, প্রকল্পের খরচ বৃদ্ধি করাসহ নানা ধরনের ফাঁক ফোকর খুঁজে বেড়ান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। আজ বিশ্বে বাংলাদেশ যখন রোলমডেল সেখানে এই দুর্দশার কথা সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে সেই রোলমডেল তকমাটাও হারিয়ে ফেলার সংশয় জেগেছে। আমরা যখন এদেশকে সিঙ্গাপুর কিংবা ইউরোপের কোন রাজ্যের সাথে চট্টগ্রামকে তুলনা করতে যায় সেক্ষেত্রে কোন অংশে কম নয় আমাদের প্রিয় শহর৷ কিন্তু সকলের সমন্বয়হীনতা যেন গ্রাস করেছে এই শহরকে। যে শহরকে বার আউলিয়ার পূণ্যভূমি বলা হয়। অতি সম্প্রতি রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিতে এক অচল অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার পর একে অপরের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছেন এর দাঁয়ভার। এত ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়ে গেল এই তিন সংস্থার উর্ধ্বতন কাউকে সহমর্মিতার জন্যও মাঠে দেখা যায় নি। এই অবস্থা চলতে থাকলে চট্টগ্রামের ঐতিহ্য আমাদের জন্য অভিশাপ রূপে দেখা দিবে। তাই আসুন সময় থাকতেই সকলে মিলে সকলের সমন্বয়ে সুন্দর, বসবাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করি আমাদের চট্টগ্রামকে। সকলের প্রচেষ্টায় আমরা উচ্চ স্বরে বলতে পারবো ‘চট্টগ্রাম দেখবে সারাবিশ্ব’।