তিন রাবার ড্যামে বদলে গেল হাজারো কৃষকের ভাগ্য

সৌন্দর্য্যের পাশাপাশি মাছ চাষেরও অপার সম্ভাবনা

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২২ এপ্রিল, ২০২১ at ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া, শিলক ও পদুয়া ইউনিয়নে স্থাপিত তিনটি রাবার ড্যাম বদলে দিয়েছে এলাকার কৃষকের ভাগ্য। হাজার হাজার একর অনাবাদী জমি বছরের ১২ মাস এখন চাষাবাদ হচ্ছে। এ ছাড়াও রাবার ড্যামের সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হচ্ছেন মানুষ। এতে মৎস্য চাষের অপার সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়েছে। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের বিশেষ উদ্যোগে উক্ত ড্যাম স্থাপিত হয়ছে বলে জানা যায়।
পারুয়া রাবার ড্যাম : ২০১৫ সালে পারুয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সৈয়দনগর এলাকায় প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে রাবার ড্যাম প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়। রাবার ড্যাম নির্মিত হওয়ার পূর্বে উত্তর রাঙ্গুনিয়ার ৫টি ইউনিয়নের দুই হাজার একর জমি অনাবাদি থাকত। এতে চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত ছিল ৫ হাজারেরও বেশি কৃষক। এখন এসব জমিতে কৃষিকাজ ও সবজি চাষাবাদ এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। এছাড়া রাবার ড্যামের ব্রিজের কারণে পারুয়া ইউনিয়নের সাথে স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া, হোছনাবাদ, লালানগর, ইসলামপুর ও রাজানগর ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে। এর সৌন্দর্য্য উপভোগ করার জন্য দুর দুরান্ত থেকে শত শত নারী পুরুষ ছুটে যাচ্ছে।
পদুয়া নাপিত পুকুরিয়া রাবার ড্যাম : পদুয়া ইউনিয়নের বান্দরবান সড়ক ঘেঁষে নাপিত পুকুরিয়া এলাকায় স্থাপিত রাবার ড্যামের সুফল পাচ্ছেন সাধারণ কৃষক। ২০১৩ সালে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে শিলক খালের পদুয়া ব্রিজঘাটা এলাকায় এ রাবার ড্যাম প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। ফলে নাপিত পুকুরিয়া বিল, কইয়াতলা বিল ও দুধপুকুরিয়া বিলের অনাবাদি জমি চাষাবাদ হচ্ছে। ড্যামের আওতায় তিন-চার শ’ একর জমিতে প্রায় এক হাজার কৃষক চাষাবাদ করছেন। পানি সঙ্কট না থাকায় বছরের দুই মৌসুমে ধান উৎপাদন করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। বান্দরবানগামী পর্যটকরা যাত্রাপথে এ রাবার ড্যামের সৌন্দর্য্য উপভোগে নেমে পড়েন নাপিত পুকুরিয়া রাবার ড্যামে।
শিলক রাবার ড্যাম : শিলক ইউনিয়নের শিলক খালের মরমের মুখ এলাকায় ২০০৭ সালে রাবার ড্যাম প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। পানির অভাবে শিলক ও পদুয়া ইউনিয়নে তৈলাভাঙা বিল, নারিশ্চা বিলসহ শত শত হেক্টর জমি শুষ্ক মৌসুমে অনাবাদি পড়ে থাকত। রাবার ড্যামের কারণে এসব অনাবাদী বিলগুলো এখন আবাদের আওতায় এসেছে। বছরের দুই মৌসুমে কৃষকরা রাবার ড্যামের পানিতে চাষবাদ করছে। সঠিক সময়ে পানি সরবরাহ করায় কৃষি উৎপাদন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে দূর দূরান্তের মানুষ ছুটে আসেন এ রাবার ড্যামে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কারিমা আক্তার বলেন, পারুয়া রাবার ড্যামের কারণে প্রায় দুই হাজার হেক্টর, শিলক রাবার ড্যামের আওতায় প্রায় এক হাজার হেক্টর ও পদুয়া ব্রিজঘাটা রাবার ড্যামের পানিতে ৫০০ হেক্টর জমি শুষ্ক মৌসুমেও আবাদের আওতায় এসেছে। এতে কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশে পুরুষের চেয়ে নারীর গড় আয়ু বেশি
পরবর্তী নিবন্ধ১০ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার