তিন মাস হাঁকডাক করে ফ্লপ সমাবেশ করেছে বিএনপি

চট্টগ্রামে মতবিনিময় সভায় তথ্যমন্ত্রী ।।জব্বারের বলি খেলায় এর চেয়েও বেশি লোক হয় তারা আন্দোলন করুক, আমাদের ভোট আরও বাড়বে

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৬ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি তিনমাস হাঁকডাক করে মহাসমাবেশ নাম দিয়ে একটি ফ্লপ সমাবেশ করেছে। সারাদেশ থেকে সন্ত্রাসীদের চট্টগ্রামে এনে হোটেল ভাড়া করে রেখেছে। পরদিন তাদের নিয়ে সমাবেশ করেছে। চট্টগ্রামে জব্বারের বলি খেলায় এর চেয়ে অনেক বেশি মানুষ হয়। সাধারণ মানুষের কোনো সম্পৃক্ততা এই সমাবেশে ছিল না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে নিয়ে রাজনীতি করে। আমরা জনগণকে নিয়েই আগামী মাসে গণসমাবেশ ও মিছিল করব চট্টগ্রামের প্রত্যেকটি উপজেলা ও থানায়। তার পরবর্তীতে চট্টগ্রাম শহরে জেলা সমাবেশ করব। তখন আপনারা দেখবেন আমাদের জেলা সমাবেশ কেমন হয়।
গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ এবং বিভিন্ন আসনের সংসদ সদস্যদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী। তিনি বলেন, বিএনপি চট্টগ্রামে একটি সমাবেশ করেছে যেখানে তারা নানা ধরনের আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছে। সমাবেশে চট্টগ্রামসহ সমগ্র দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির একটি ছক এঁকেছে। সেই প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আমাদের করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য আজকে বসেছি।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন চট্টগ্রামে সমাবেশের জন্য বিএনপি দীর্ঘ তিনমাস ধরে প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রস্তুতি নিয়ে তারা বলেছিল, পনের লাখ মানুষের সমাগম হবে। এখান থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ১৮০ কিলোমিটার, টেকনাফের দূরত্ব ২৫০ কিলোমিটার, সেখান থেকেও মানুষ এনেছে। তারা পলোগ্রাউন্ড মাঠের চল্লিশ শতাংশ পেছনে রেখে মঞ্চ করেছে। আর সামনের যেই অংশ তার অর্ধেকও পূর্ণ হয়নি। অর্থাৎ পলোগ্রাউন্ড মাঠের এক তৃতীয়াংশও ঠিকমত পূর্ণ হয়নি। চট্টগ্রামে জব্বারের বলি খেলায় যত মানুষ হয়, তার চেয়েও অনেক কম মানুষ হয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে, জব্বারের বলি খেলায় অনেক বেশি মানুষ হয়। বিএনপি হাঁকডাক করেও মহাসমাবেশের নাম দিয়ে একটি ফ্লপ সমাবেশ করেছে।
বিএনপি যে প্লাটফর্মে সমাবেশ করেছে সেখানে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর প্রতিবাদ হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর কথা বলার কারণে জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম ষড়যন্ত্র মামলা নামে তিনটি মামলা দিয়েছিল, মৌলভী সৈয়দকে নির্যাতন করে মেরেছে, সেই বিষয়ে আপনাদের অবস্থান কী সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান আসলে ইতিহাসের পাতায় একজন খুনি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। তিনি নাস্তা করতে করতে ফাঁসির আদেশে সই করতো। এমন ঘটনাও ঘটেছে, ফাঁসি কার্যকর হয়ে গেছে, রায় হয়েছে ফাঁসি কার্যকর হবার পর। এই যে চরম মানবাধিকার লক্সঘন সেগুলো নিয়ে ইতিমধ্যে নির্যাতিত ও ভুক্তভোগীর স্বজনরা সরব হয়েছে। আমরা সেগুলোকে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যাব।
বিএনপির এক দফা দাবি- সরকার পতন; এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি গত ১৪ বছর ধরেই এই আন্দোলনের মধ্যে আছে। আমরা সরকার গঠনের দুয়েকমাস পর থেকেই তারা সরকারকে বিদায় দেয়ার আন্দোলনের মধ্যে আছে। আন্দোলন করতে করতে দেখা গেল তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাদের আন্দোলনের মধ্যেই জনগণ পরপর তিনবার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব আমাদেরকে দিয়েছে। তারা এই আন্দোলন করার প্রেক্ষিতে আমরা মনে করি আগামী নির্বাচনে ভোট আমাদের আরো বাড়বে ইনশাল্লাহ। তিনি বলেন, বিএনপি সন্ত্রাস নৈরাজ্যের পথেই হাঁটছে। তারা যাতে কোনো সংঘাত সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য আমাদের নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানিয়েছি।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি, মোস্তাফিজুর রহমান এমপি, মাহফুজুর রহমান মিতা এমপি, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি, দিদারুল আলম এমপি, খাদিজাতুল আনোয়ার সনি এমপি, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান ও দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআপিলে পৌরকর কমিয়ে দেয়ার নামে ‘২০০ কোটি টাকা দুর্নীতির’ অভিযোগ
পরবর্তী নিবন্ধইস্টার্ন রিফাইনারিতে অগ্নিকাণ্ড