তিন মাস পর অন্তর্ধানের রহস্য উন্মোচন

দশ ঘণ্টার অভিযানে উদ্ধার দুই তরুণী

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:২২ পূর্বাহ্ণ

প্রেমিকের টানে ঘর ছাড়ল তরুণী, সাথে বান্ধবী। পরিবার ভেবেছিল অপহরণকারীর পাল্লায় পড়েছে। পুলিশের ধারণা মানবপাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছে তারা। অবশেষে দশ ঘণ্টার টানা অভিযানে উদ্ধার হলো দুই তরুণী। বের হলো তাদের অন্তর্ধান রহস্য।
নগরীর চকবাজার থানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ তরুণীদের নাম জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে দুই বান্ধবীই পোশাক শ্রমিক বলে জানিয়েছে।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস জাহান বলেন, তদন্তের শুরুতেই আমাদের মনে পাচারের সন্দেহ জাগে। কারণ বিষয়গুলো হরহামেশাই হচ্ছে। আমরা ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে বুঝতে পারি তারা একইদিন একইসঙ্গে নিখোঁজ হয়েছে। এতে অনুমান করি যে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব আছে। পরে এক আত্মীয়ের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম ধরে ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে তাদের উদ্ধার করার পর জানতে পারি প্রেমের সম্পর্কের টানে ঘর ছেড়েছে একজন। প্রেমিকের সাথে তার বিয়েও হয়েছে। অন্যজন বান্ধবীকে সহায়তা করেছে। গত রোববার তাদের চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে বিচারক প্রেমিকাকে স্বামীর কাছে এবং বান্ধবীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
চকবাজার ধনিয়ারপুল ডিসি রোডের বাসা থেকে পোশাক শ্রমিক এক তরুণী কাজের উদ্দেশ্যে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। একই দিন প্রায় একই সময়ে আরও এক পোশাক শ্রমিক তরুণী একই কাজ করে। উভয়ের পরিবার খোঁজাখুজি করে তাদের না পেয়ে চকবাজার থানার দ্বারস্থ হয়। ১৭ জুন ও ১৯ জুন পৃথক দুটি জিডি করে দুই পরিবার। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দিপান পাল তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে অভিযানে নেমে দেখেন দুজন একই সাথে বের হয়েছে এবং দুজনই বান্ধবী। তাদের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা। হঠাৎ দুজনেরই মোবাইল ফোন বন্ধ করে দিলে বিপাকে পড়েন তিনি। প্রায় দুই মাস বন্ধ ছিল মোবাইল ফোন দু’টি। মানব পাচার চক্রের হাতে পড়লো কিনা তা ভেবে আরও তৎপর হয়ে উঠেন। এরই মধ্যে হঠাৎ একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার খালাতো বোনের সাথে যোগাযোগ করেন। ক্লু পেয়ে যান তদন্ত কর্মকর্তা। লোকেশন ট্র্যাক করে দেখেন জায়গাটি ময়মনসিংহের ভালুকায়। গত ১০ সেপ্টেম্বর ১০ ঘণ্টার যাত্রা শেষে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই বান্ধবীকে পাওয়া যায়। পুরিশ জানতে পারে একজন বিয়ে করেছে, আর অন্য বান্ধবী তাতে সহায়তা করেছে। স্বামী সুনামগঞ্জে চাকরি করে। পুলিশের সাথে তারা কিছুতেই আসবে না। পুলিশ স্বামীর সাথে যোগাযোগ করে। স্বামীর কথায় তারা চট্টগ্রাম আসতে রাজি হয়। পরদিন স্বামীও আসেন চকবাজার থানায়। বলেন তাদের দুজনের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কের কথা। জুলাই মাসে তারা বিয়ে করেন। অবশেষে পুলিশ প্রেমিকাকে আদালতের মাধ্যমে স্বামীর কাছে এবং তার বান্ধবীকে পরিবারের কাছে তুলে দেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ ২৪ হাজার ৮৯০ টাকা
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের কেবল দুই কেন্দ্রেই ফাইজারের টিকা